৭ উইকেটের জয়ে হোয়াইটওয়াশ এড়াল বাংলাদেশ

ছবি: ক্রিকফ্রেঞ্জি

|| ডেস্ক রিপোর্ট ||
বাংলাদেশ ছাড়ার আগে ‘প্রাণ হারানো’র ভয়ে ছিলেন হাথুরুসিংহে
৫৫ মিনিট আগে
সিরিজ হাতছাড়া হয়ে গেছে আগেই। হোয়াইটওয়াশ এড়াতে শেষ ওয়ানডে জয়ের বিকল্প ছিল না বাংলাদেশের সামনে। এদিন টসে হেরে বল হাতে নেমে বাংলাদেশের বোলাররা জ্বলে উঠেছিলেন। টাইগার বোলারদের তোপে আফগানিস্তান অল আউট হয় মাত্র ১২৬ রানে। জবাবে খেলতে নেমে লিটন দাস ও সাকিব আল হাসানের দৃঢ়টায় ৭ উইকেটের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে বাংলাদেশ।
মামুলি লক্ষ্যে খেলতে নেমে ভালো শুরু পায়নি বাংলাদেশ। দলীয় ২ রানেই বাংলাদেশ হারিয়েছে ওপেনার নাইম শেখের উইকেট। এই ওপেনার ফজলহক ফারুকির আউট সাইড অফের বলে ড্রাইভ করতে গিয়ে ইনসাইড এজ হয়ে বোল্ড হয়েছেন। বাংলাদেশের এই ব্যাটার রানের খাই খুলতে পারেননি।
এরপর নাজমুল হোসেন শান্ত ব্যাটিংয়ে নেমে ফারুকিকে মিড উইকেট দিয়ে চার মেরে ভালো করার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। কিন্তু পরের বলেই আফগানিস্তানের এই পেসারের উইকার ডেলিভারিতে বোল্ড হয়ে নিজের উইকেট হারান শান্ত। তার ব্যাট থেকে আসে ১৫ বলে ১১ রান।
এরপর বাংলাদেশের ইনিংস টেনেছেন লিটন দাস ও সাকিব আল হাসান। এই দুজনে তৃতীয় উইকেটে যোগ করেন ৬১ রান। সাকিব মোহাম্মদ নবির করা অফ স্টাম্পের বাইরের শর্ট বলে পুল করতে গিয়ে টপ এজ হয়ে মিড উইকেটে হাসমতউল্লাহ শহীদির হাতে ক্যাচ দিয়েছেন। সাকিব ফিরলেও তাওহীদ হৃদয়কে নিয়ে ৫৭ বলে হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন। এই দুজনই বাংলাদেশকে জিতিয়ে মাঠ ছেড়েছেন। লিটন ৫৩ ও হৃদয় ২২ রানে শেষ পর্যন্ত অপরাজিত ছিলেন।
এর আগে টস জিতে আগে ব্যাটিং করতে নেমে সাবধানী শুরু করার চেষ্টা করেন দুই ওপেনার রহমানউল্লাহ গুরবাজ এবং ইব্রাহিম জাদরান। তবে তাদের জুটি আগের ম্যাচের মতো বড় হতে দেননি শরিফুল ইসলাম। বাঁহাতি এই পেসারের লেংথে পড়া ডেলিভারি বেরিয়ে যাওয়ার সময় ইব্রাহিমের ব্যাটে এজ হয়। মুশফিকুর রহিম সহজে ক্যাচ নিলে মাত্র ১ রানে ফিরে যেতে হয় আগের ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ানকে।
তিনে নেমে নিজের তৃতীয় বলেই আউট হতে পারতেন রহমত শাহ। লিডিং এজ হয়ে গালিতে ক্যাচ উঠলেও ডাইভ দিয়ে সেটা ধরতে পারেননি মেহেদি হাসান মিরাজ। তবে পরের বলেই রহমতকে সাজঘরে ফেরান শরিফুল। বাঁহাতি এই পেসারের বাউন্সারে এজ হয়ে মুশফিকের গ্লাভসবন্দি হয়েছেন ডানহাতি এই ব্যাটার।

আগের ম্যাচে ১৪৫ রান করে বাংলাদেশকে দারুণভাবে ভুগিয়েছিলেন রহমানুল্লাহ গুরবাজ। তবে এদিন আর ডানহাতি এই উইকেটরক্ষক ব্যাটারকে বড় ইনিংস খেলতে দিলেন না তাসকিন আহমেদ। ডানহাতি এই পেসারের শর্ট লেংথ ডেলিভারিতে পুল করতে চেয়েছিলেন গুরবাজ। কিন্তু ব্যাটে-বলে ঠিকঠাক করতে না পারায় ক্যাচ চলে যায় মুশফিকের কাছে। খানিকটা লাফিয়ে উঠে ক্যাচ লুফে নিলে গুরবাজ ফেরেন ৬ রান করে।
আফগানিস্তানকে নিয়ে টি-টোয়েন্টি সিরিজের পরিকল্পনা বিসিবির
১৪ মার্চ ২৫
প্রথম দুই ম্যাচে একাদশে সুযোগ পাননি শরিফুল ইসলাম। মুস্তাফিজুর রহমানকে বিশ্রাম দেয়ায় সিরিজের তৃতীয় ওয়ানডেতে জায়গা মিলেছে তার। সুযোগ পেয়েই বাজিমাত করছেন বাঁহাতি এই পেসার। শরিফুলের আগুনে বোলিংয়ে রীতিমতো পুড়ছে আফগানিস্তান। ইব্রাহিম জাদরান এবং রহমত শাহর পর মোহাম্মদ নবিকেও ফেরালেন তিনি।
বাঁহাতি এই পেসারের অফ স্টাম্পের বাইরে পড়ে বল ভেতরে ঢুকছিল, ক্রস ব্যাটে পুশ করতে গিয়ে বলের লাইন মিস করেন। বল তাতে আঘাত হানে নবির প্যাডে। জোরালো আবেদন করতেই আউট দেন অনফিল্ড আম্পায়ার। রিভিউ নিলেও শেষরক্ষা হয়নি ৯ বলে ১ রান করা নবির।
মাত্র ১৫ রানে ৪ উইকেট হারানোর পর খানিকটা দেখেশুনেই খেলার চেষ্টা করছিলেন নাজিবুল্লাহ জাদরান ও হাশমতউল্লাহ শাহিদী। তবে সাকিব আল হাসানের বলে সুইপ করতে গিয়ে যেন বিপদ ডেকে আনলেন নাজিবুল্লাহ। বলের লাইন মিস করলে বল আঘাত হানে প্যাডে। অনফিল্ড আম্পায়ার আউট দিলেও রিভিউ নেন তিনি। তবে শেষরক্ষা হয়নি ১০ রান করা বাঁহাতি এই ব্যাটারের।
দ্রুত উইকেট হারানোর পরও বাংলাদেশের বোলারদের আক্রমণ করার চেষ্টা করছিলেন হাশমতউল্লাহ। তবে তাকে বিধ্বংসী হতে দেননি তাইজুল ইসলাম। বাঁহাতি এই স্পিনারকে রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে বোল্ড হয়েছেন আফগান অধিনায়ক। হাশমতউল্লাহ আউট হয়েছেন ২২ রান করে।
নিজের প্রথম স্পেলে আফগানিস্তানের টপ অর্ডারে ধস নামিয়েছিলেন শরিফুল ইসলাম। দ্বিতীয় স্পেলে ফিরে আবারও উইকেটের দেখা পেলেন তিনি। বাঁহাতি এই পেসারের শর্ট লেংথ ডেলিভারিতে পুল করেছিলেন আব্দুল রহমান। ডিপ ফাইন লেগে দাঁড়িয়ে তাইজুল ক্যাচ লুফে নিলে সাজঘরে ফিরতে হয় ৪ রান করা আব্দুলকে।
মূলত ওমরজাইয়ের ইনিংসেই একশ পেরিয়ে যায় বাংলাদেশ। ৭১ বলে ৫৬ রানে শেষ উইকেট হিসেবে বিদায় নেন তিনি। শেষদিকে আব্দুল রহমান ২০ বলে ৪, জিয়াউর রহমান ৩০ বলে পাঁচ এবং মুজিব উর রহমান ৩৪ বলে ১১ রান করেন।
লোয়ার অর্ডারের এই দাপটই আফগানদের ৪৫.২ ওভার পর্যন্ত মাঠে রাখে। বাংলাদেশের হয়ে ২১ রান খরচায় চার উইকেট নেন শরিফুল, দুটি করে উইকেট নেন তাসকিন এবং তাইজুল। একটি করে উইকেট নেন সাকিব ও মিরাজ।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
আফগানিস্তান- ১২৬/১০ (৪৫.২ ওভার) (ওমরজাই ৫৬, শহীদি ২২; শরিফুল ৪/২১)
বাংলাদেশ- ১২৯/৩ (২০.২ ওভার) (লিটন ৫৩*, সাকিব ৩৯, হৃদয় ২২*; ফারুকি ২/২৬)