সাত বছর পর ‘চ্যাম্পিয়ন’ লেখা ব্যানারের পেছনে ছবি তোলা হবে না বাংলাদেশের

ছবি: সংগৃহীত

|| ডেস্ক রিপোর্ট ||
টপ এন্ড টি–টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের ম্যাচের সূচি প্রকাশ
৫ ঘন্টা আগে
সবশেষ এশিয়া কাপে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে জয়ের খুব কাছে ছিল বাংলাদেশ। তবে ওয়াইড আর নো বলে সেদিন খেসারত দিতে হয়েছিল সাকিব আল হাসানের দলকে। ১৮০ পেরোনো রান করার পরও সেদিন জিততে না পারায় সাকিব দায় দিয়েছিলেন, ক্রিকেটারদের চাপের মুখে ভেঙে পড়াকে। সেদিন মতো মিরপুরে শুক্রবার অবশ্য এমন টানটান উত্তেজনার ম্যাচ ছিল না। তবে লম্বা সময় ধরে ঘরের মাঠে জিততে থাকা বাংলাদেশ প্রথম ম্যাচ হারায় খানিকটা চাপে তো বোধহয় ছিলই।
জেসন রয়-জস বাটলারের পর শেষ দিকে মঈন আলী কিংবা স্যাম কারানের বিপক্ষে খানিকটা এলোমেলো ছিল বাংলাদেশের বোলাররা। শেষ ওভারে তাসকিন আহমেদের ওমন ফুলটস বল করাটা হয়তো তারই প্রমাণ। আগের ম্যাচে ২১০ রান তুলতে হাঁপিয়ে উঠা ইংল্যান্ড এদিন থেমেছে ৩২৬ রানে। ২০১৮ সালের পর মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে তিনশ পেরোনো পুঁজির দেখা মিলেছে। সেবারই সবশেষ বাংলাদেশ তিনশ পেরোনো রান করেছিল।
সিরিজে টিকে থাকতে রেকর্ড রান তাড়া করার বিকল্প ছিল না তামিম ইকবালের দলের সামনে। মিরপুর স্লো আর টার্নিং উইকেটে এত রান করা কতটা কঠিন সেটা নিশ্চয় বাংলাদেশের ব্যাটারদের চেয়ে কেউ ভালো জানে না। সেই চাপটাই হয়ত নিয়ে ফেলেছিলেন ব্যাটাররা। উইকেটে আসা ব্যাটারদের ইনটেনশন দেখে বোঝার উপায় ছিল না এই ম্যাচে জিততে চায় বাংলাদেশ। স্যাম কারানের সামনে যেন অসহায় টপ লিটন দাস-নাজমুল হোসেন শান্তরা।

বাঁহাতি এই পেসারের অফ স্টাম্পের বাইরে বলে আলতো করে খেলতে চেয়েছিলেন লিটন। তবে ঠিকঠাক গ্যাপটা বের করতে পারেননি। ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে দাঁড়িয়ে সহজ ক্যাচ নিতে ভুল করেননি রয়। পরের বলে শান্তও ফিরলেন গোল্ডেন ডাক মেরে। কারানেরে অফ স্টাম্পের বাইরে পড়ে বেরিয়ে যাওয়া ডেলিভারিতে বাটলারের সহজ ক্যাচ দেন তিনি। মুশফিকুর রহিম আউট হয়েছেন ইনসাইড এজ হয়ে। ৯ রানে ৩ উইকেট হারানোর পর জয় থেকে অনেকটা দূরে সরে যায় বাংলাদেশ।
‘গিলকে থামাতে ইংল্যান্ডের সবচেয়ে বড় অস্ত্র হতে পারেন আর্চার’
১ ঘন্টা আগে
এরপর সাকিব আল হাসান আর তামিমের চেষ্টা কেবলই ব্যবধান কমানোর। চাপের মুখে সাকিব খানিকটা রান চাকা সচল রাখার চেষ্টা করলেও তামিম ছিলেন পুরোপুরি ব্যর্থ। বেশি চাপ নিয়ে ফেলায় ডাউন দ্য উইকেটে এসে উড়িয়ে মারতে গিয়ে অনিয়ন্ত্রিথত শটে লং অফে জেমস ভিন্সকে ক্যাচ দেন বাংলাদেশের অধিনায়ক। নিজের চারশতম আন্তর্জাতিক ম্যাচে সাকিব আউট হয়েছেন ৫১তম ওয়ানডে হাফ সেঞ্চুরি করে।
শেষ দিকে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ-আফিফ হোসেনদের ব্যাটে ছিল না জয়ের আভাস। তাদের ছোট ছোট জুটিতে কেবল ব্যবধানই কমেছে। তিনশ পেরোনো রান তাড়ার অভ্যস্ততা না থাকায় বাংলাদেশ থেমেছে দুইশর আগেই। ১৩২ রানের হারে প্রায় সাত বছর পর ঘরের মাঠে ওয়ানডে সিরিজ হেরেছে বাংলাদেশ। আরও একেবার ইংলিশ পরীক্ষায় ফেল করে টানা সিরিজ জয়ের রেকর্ডে ছেদ পড়ল সাকিবদের।
England breaks Tigers' supremacy in Mirpur#BANvENG pic.twitter.com/bWe8JnlyrG
২০১৬ সালের পর থেকে ঘরের মাঠে যেন অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠেছিল বাংলাদেশ। এই সময়ে শুধু জিম্বাবুয়ে কিংবা আফগানিস্তান নয়, তামিমদের জয়ের কীর্তি রয়েছে শ্রীলঙ্কা, ওয়েস্ট ইন্ডিজ আর ভারতের মতো দলের বিপক্ষে। ঘরের মাঠে টানা সিরিজ জয়ে নিউজিল্যান্ডের রেকর্ডে ভাগ বসানো হলো না বাংলাদেশ। ২০১৩-১৭ সালে টানা ৮টি সিরিজ জেতেছিল কিউইরা। যদিও সবচেয়ে বেশি জয়ের রেকর্ডটা ইংল্যান্ডের। ২০১৬-২০ পর্যন্ত তারা জয় পেয়েছিল ৯টি সিরিজে।
ইংলিশদের বিপক্ষে সিরিজ হারে ভারতকে সঙ্গে নিয়ে টানা সাত ওয়ানডে সিরিজ জয়ের রেকর্ড নিয়ে থাকতে হলো বাংলাদেশকে। দ্বিতীয়বারের মতো এদিন বাংলাদেশের জয়রথ থামিয়েছে ইংল্যান্ড। ২০১৪ সালের নভেম্বর থেকে পাকিস্তান, ভারত আর সাউথ আফ্রিকার মতো দলকে হারিয়েছিল বাংলাদেশ। টানা ছয় সিরিজ জেতার পর সেবার থ্রি লায়ন্সে আটকে গিয়েছিল তৎকালীন অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজার দল।
সেই থেকে কেটে গেছে প্রায় সাত বছর। বাংলাদেশ আবারও সেই ইংল্যান্ড। সবার মুখে যখন এবার ইংলিশদের ‘ধরে দিবানি’ তখন উলটো সিরিজ খুইয়ে জয়রথে ছেদ ফেলল বাংলাদেশ। বছর সাতেক পর ঘরের মাঠে কোনো ওয়ানডে সিরিজে ‘চ্যাম্পিয়ন’ লেখা ব্যানারের পেছনে দাঁড়িয়ে ছবি তোলা হবে না সাকিব-তামিমদের।