এ যেন তাসের ঘর

ছবি: সংগৃহীত

|| ডেস্ক রিপোর্ট ||
ভারতকে হারানোর সামর্থ্য আছে বাংলাদেশের: সিমন্স
২৭ মিনিট আগে
দক্ষিণ আফ্রিকাকে ৪৫৩ রানে থামিয়ে দিনের শেষ সেশনে ব্যাটিংয়ের সুযোগ পেয়েছিল বাংলাদেশ। শুরুতে মাহমুদুল হাসান জয়কে হারালেও সেটা সামলে নেন তামিম ইকবাল এবং নাজমুল হোসেন শান্ত। তাদের দুজনের আক্রমণাত্বক ব্যাটিংয়ে যখন প্রোটিয়ারা চাপে পড়ার অবস্থায় তখনই বাংলাদেশের ব্যাটিং অর্ডারে ধস। শুরুটা তামিমকে দিয়ে, শেষটা করেছেন লিটন দাস। মাঝের সময়টায় সাজঘরে ফিরেছেন অধিনায়ক মুমিনুল হক এবং শান্ত। তাতে ১ উইকেটে ৮৭ রান তোলা বাংলাদেশ ৫ উইকেট হারিয়েছে ১২২ রানে। উইয়ান মুল্ডার এবং ডোয়াইন অলিভারের পেস আর সুইং সামলাতে না পারা বাংলাদেশের ব্যাটারদের উইকেট ভেঙে পড়েছে তাসের ঘরের মতো। দ্বিতীয় দিন শেষে ৫ উইকেটে ১৩৯ রান তোলা বাংলাদেশের শেষ ভরসা অভিজ্ঞ মুশফিকুর রহিম। দ্বিতীয় দিন শেষে প্রোটিয়াদের চেয়ে ৩১৪ রানে পিছিয়ে বাংলাদেশ।
পোর্ট এলিজাবেথে প্রথম ইনিংসে দক্ষিণ আফ্রিকার করা ৪৫৩ রানের জবাব দিতে নেমে ইনিংসের প্রথম ওভারেই উইকেট হারায় বাংলাদেশ। ডোয়াইন অলিভারের গুড লেংথের বেরিয়ে যাওয়া বল খেলতে গিয়ে স্লিপে দাঁড়িয়ে থাকা সারেল এরউইয়ের হাতে ক্যাচ তুলে দেন মাহমুদুল হাসান জয়। প্রথম টেস্টের প্রথম ইনিংসে সেঞ্চুরি তুলে নেয়া জয় এদিন ফিরেছেন শূন্য রানে।
এরপর অবশ্য নাজমুল হোসেন শান্তকে নিয়ে দারুণ এক জুটি গড়েন তামিম ইকবাল। শুরু থেকেই দক্ষিণ আফ্রিকার বোলারদের ওপর চড়াও হয়ে ব্যাটিং করতে থাকেন তারা দুজনে। লিজাড উইলিয়ামসের বলে চার মেরে জুটির পঞ্চাশ পূরণ করেন শান্ত। এদিকে ফেরার ম্যাচে দারুণ ব্যাটিং করলেও হাফ সেঞ্চুরি হাতছাড়া করেছেন তামিম।
উইয়ান মুল্ডারের গুড লেংথের বলে লেগ বিফোর উইকেটের ফাঁদে পড়ে সাজঘরে ফিরেছেন বাঁহাতি এই ওপেনার। নিজের ফেরার ম্যাচে তামিমের ব্যাট থেকে এসেছে ৫৭ বলে ৪৭ রান। ইনিংসটি খেলতে আটটি চার মেরেছেন তামিম। বাঁহাতি এই ওপেনারের পর আউট হয়েছেন শান্তও।

মুল্ডারের বলে শুরুতে আম্পায়ার আউট না দিলেও রিভিউ নিয়ে শান্তকে ফেরায় দক্ষিণ আফ্রিকা। ফেরার আগে বাঁহাতি এই ব্যাটার করেছেন ৭৪ বলে ৩৩ রান। থিতু হতে পারেননি মুমিনুল হকও। মুল্ডারের বলে লেগ বিফোর উইকেটের ফাঁদে পড়ে ৬ রানে আউট হয়েছেন বাংলাদেশের টেস্ট অধিনায়ক।
মুমিনুলের মতো থিতু হওয়ার আগেই আউট হয়েছেন লিটন। পেসার অলিভারের দারুণ সুইংয়ে বোল্ড হয়েছেন এই উইকেটকিপার ব্যাটার। মূলত ব্যাট এবং প্যাডের মাঝে বড় গ্যাপ থাকাতেই বোল্ড হয়েছেন ১১ রান করা লিটন। শেষ বিকেলে অবশ্য আর কোনো উইকেট হারাতে দেয়নি মুশফিক এবং ইয়াসির আলী রাব্বি। মুশফিক ৩০ এবং ইয়াসির অপরাজিত ৮ রানে।
আগের দিনের ৫ উইকেটে ২৭৮ রান নিয়ে ব্যাটিংয়ে নেমে সকালের শুরুটা বেশ ভালো করেছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। খালেদ আহমেদের আলগা বলে চার মারেন কাইল ভেরেইনে। তাতে সকালের শুরুতেই তিনশ স্পর্শ করে প্রোটিয়ারা। যদিও এরপরই সাজঘরে ফেরেন ভেরেইনে।
খালেদের দারুণ এক ডেলিভারিতে ড্রাইভ করতে গিয়ে বোল্ড আউট হন এই উইকেটকিপার ব্যাটার। সাজঘরে ফেরার আগে ২২ রান করেছেন তিনি। ভেরেইনে ফেরার পর ক্যামিও দেখাতে শুরু করেন কেশভ মহারাজ। উইয়ান মুল্ডারকে সঙ্গে নিয়ে গড়েন ৮০ রানের জুটি।
এর মাঝে ৫৫ বলে হাফ সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন মহারাজ। তাইজুল ইসলামের বলে মুল্ডার ৩৩ রানে ফিরলে ভাঙে মহারাজের সঙ্গে ৮০ রানের দারুণ এক জুটি। এবাদত হোসেনের বলে সিঙ্গেল নিয়ে চারশ পূরণ করে প্রোটিয়ারা। দারুণ ব্যাটিংয়ে সেঞ্চুরি পথেই হাঁটছিলেন মহারাজ।
যদিও ডানহাতি এই ব্যাটারকে ফিরিয়ে নিজের ৫ উইকেট পূর্ণ করেন তাইজুল। বাঁহাতি এই স্পিনারের বলে বোল্ড হয়ে ৮৪ রানে ফিরেছেন মহারাজ। শেষ দিকে তাইজুলের বলে হার্মারকে দারুণ এক স্টাম্পিং করেছেন লিটন দাস। ডানহাতি এই ব্যাটার ফিরেছেন ২৯ রানে। আর লিজাড উইলিয়ামসকে ফেরান মেহেদি হাসান মিরাজ। বাংলাদেশের হয়ে তাইজুল ৬টি এবং খালেদ নিয়েছেন তিনটি উইকেট।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
দক্ষিণ আফ্রিকা (প্রথম ইনিংস)- ৪৫৩/১০ (১৩৬.২ ওভার) (এলগার ৭০, পিটারসেন ৬৪, বাভুমা ৬৭, মহারাজ ৬৭*, রিকেলটন ৪২, এরউই ২৪; তাইজুল ৬/১৩৫, খালেদ ৩/১০০)
বাংলাদেশ (প্রথম ইনিংস)- ১৩৯/৫ (৪১ ওভার) (তামিম ৪৭, শান্ত ৩৩, মুশফিক ৩০*; মুল্ডার ৩/১৫, অলিভিয়ার ???/১৭)