এমন কি করলাম, আমাকে নিষিদ্ধ করলো, প্রশ্ন তাসকিনের

ছবি: ছবি- সংগৃহীত

|| ডেস্ক রিপোর্ট ||
২০১৬ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বোলিং অ্যাকশন নিয়ে প্রশ্ন ওঠে তাসকিন আহমেদের। ৯ মার্চ নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে প্রথম রাউন্ডের ম্যাচ চলাকালীন তাঁর বিরুদ্ধে রিপোর্ট করেন দায়িত্বরত আম্পায়াররা। এরপর ১২ মার্চ চেন্নাইয়ে অ্যাকশন পরীক্ষা দেন তাসকিন। কিন্তু ভারতের বিপক্ষে ম্যাচের ঠিক আগে তাঁকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে আইসিসি।
সেই ঘটনার পর ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়ে আইসিসি। কারণ নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে যে ম্যাচে অবৈধ বোলিং অ্যাকশনের অভিযোগ উঠে তাসকিনের বিরুদ্ধে সেই ম্যাচে ১৫ ডিগ্রির নিচে হাত বাঁকে তাঁর। এমনকি পরবর্তীতে দেখা গেছে মাত্র কয়েকটি অ্যাকশনে সমস্যা রয়েছে তাসকিনের।
এমনকি ভারতকে সুবিধা দিতেই তাসকিনকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে বলে দাবি করেন অনেক ক্রিকেট প্রেমী। এরপর অনেক দিন পার হয়ে গেছে। বোলিং অ্যাকশন শুধরে মাঠেও ফিরেছেন তাসকিন। কিন্তু আজও বিশ্বকাপের সেই তিক্ত অভিজ্ঞতা স্মৃতির মানসপটে জ্বলজ্বল করে তাঁর। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে তামিম ইকবাল এবং রুবেল হোসেনের সঙ্গে এক লাইভ আড্ডায় চার বছর আগের সেই দুঃখ শেয়ার করছেন ২৫ বছর বয়সী তাসকিন।

সেই ঘটনার কথা মনে পড়লে এখনও আক্ষেপে পোড়েন ডানহাতি এই পেসার। তাসকিন বলেন, 'এমন কি করলাম, আমাকে নিষিদ্ধ করে দিলো? এরপরের ছয় মাস কোন খেলা ছিল না। শর্ত ছিলো অ্যাকশন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে না পারলে এক বছর নিষিদ্ধ থাকতে হবে। এরপর আবারো ব্যর্থ হলে ২ বছর। আর তৃতীয়বার আজীবন নিষিদ্ধ।'
ভারতের বিপক্ষে সেই বিশ্বকাপেই এক রানে হেরেছিল বাংলাদেশ। যার ক্ষত এখনও বয়ে নিয়ে বেড়াচ্ছেন অনেক ক্রিকেটারর। সেই ম্যাচে তাসকিন থাকলে ফলাফল ভিন্নও হতে পারতো হয়তো। সেই ম্যাচের স্মৃতিও বেশ কষ্ট দেয় তাসকিনকে।
তাঁর ভাষ্যমতে, 'পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচের পর আমাদের খেলা ছিল ভারতের সঙ্গে। এই ম্যাচের আগেই আমাকে নিষিদ্ধ করা হয়। সেটা ব্যাঙ্গালুরুতে। সবাই যখন ম্যাচ খেলতে যায়, আমি হোটেলে একাই ছিলাম। ওই ম্যাচটা আমরা এক রানে হারলাম, ম্যাচ হারার পর প্রায় সবাই কান্না করছিলাম। আমার খুব কষ্ট লাগছিলো, একে তো নিষিদ্ধ হলাম আবার ম্যাচটাও হারলাম। খুব দোয়া করছিলাম কিন্তু হয়নি। পরে অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে ম্যাচ বাকি রেখেই দেশে ফিরে আসি একা। প্লেনে, এয়ারপোর্টে এমনকই বাসায় আসার পরও অনেক কান্না পাচ্ছিলো।'
বোলিং অ্যাকশন শুধরানোর জন্য এরপর কম চেষ্টা করেননি তাসকিন। কোচ মাহবুব আলী জ্যাকির অধীনে রাত দিন অনুশীলন করে গেছেন। নিজের অধ্যবসায়ের এই ফলাফল অবশ্য হাতেনাতেই পেয়েছেন তিনি। অস্ট্রেলিয়ায় অ্যাকশন পরীক্ষা দিয়ে সাফল্যের সঙ্গে উতরেও গেছেন।
তাসকিন বলেছেন, 'হিথ স্ট্রিক (সাবেক পেস বোলিং কোচ) চলে যাওয়ার আগে আমাকে মাহবুব আলী জ্যাকি স্যারের অধীনে রেখে যান, দিন-রাত সারাদিন আমি ড্রিল করতাম, অ্যাকাডেমিতে প্র্যাক্টিস করতাম। স্যার মাঝে মধ্যে আমাকে না বলেই বাসায় চলে আসতেন, আমি ড্রিল ঠিকভাবে করছি কিনা দেখতে। তখন আমার নামাজ পরে একটাই দোয়া থাকতো, আল্লাহ আমাকে এই বিপদ থেকে উদ্ধার করো। অস্ট???রেলিয়াতে পরীক্ষা দিতে যাওয়ার আগের দিন আমি রোজা রাখি। এরপর আল্লাহর রহমতে পাশ করে যাই।'