আমার ১৫০, সৌম্যর ১২০ আর বৃষ্টি বাঁচাতে পারেঃ সাকিব
ছবি: ছবিঃ বিসিবি, রতন গোমেজ

|| সিনিয়র ক্রিকেট করেসপন্ডেন্ট, চট্টগ্রাম থেকে ||
চার শ’র বেশি রান তাড়া করে জেতার নজির টেস্ট ক্রিকেটে আছে মাত্র চারটি। চট্টগ্রাম টেস্টে আফগানিস্তানের বিপক্ষে বাংলাদেশের লক্ষ্য চার শ’র চেয়ে দুই রান কম (৩৯৮)। লক্ষ্য তিন শ’র ঘরে থাকলেও এই রান করে জয় তুলে নেয়া যে সাত সমুদ্দুর তের নদী পাড়ি দেয়ার মতো, সেটা বুঝতে পারছেন সাকিব আল হাসান। কিন্তু ‘কঠিনেরে ভালোবাসিলাম’ তত্ত্বে বিশ্বাসী বাংলাদেশ অধিনায়ক কার্ডিফের স্মৃতি ফিরিয়ে আনার কথা বলছেন।
২০১৭ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে ২৬৫ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে ৩৩ রানেই চার উইকেট হারিয়েছিল বাংলাদেশ। রূপকথার গল্প লিখে খাদের কিনারে থাকা দলকে পাঁচ উইকেটের জয় এনে দিয়েছিলেন দুই সেঞ্চুরিয়ান সাকিব ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। চট্টগ্রাম টেস্টে ৩৯৮ রানের লক্ষ্যে ব্যাটিং করতে নেমে ১৩৬ রান তুলতেই ছয় উইকেট হারানো বাংলাদেশ এবার কি পারবে জয়ের বন্দরে নাও ভেড়াতে?

চতুর্থ দিন শেষে সংবাদ সম্মেলনে আসা সাকিব এমন প্রশ্নে বিচলিত না হয়ে উল্টো প্রশ্ন করেছেন, ‘রান কত দরকার?’ এরপরই জানিয়েছেন, কাজটা করা অসম্ভব নয় তবে বেশ কঠিন। সেটার জন্য অবশ্য নিজেকে ১৫০ ও সৌম্যকে ১২০ রান করার কথা বলছেন বিশ্বের অন্যতম সেরা এই অলরাউন্ডার। বিকল্প পথের কথাও বলছেন সাকিব। ব্যাটসম্যানরা না পারলে কেবল বৃষ্টিই এখন বাংলাদেশকে বাঁচাতে পারে বলে স্বীকার করে নিয়েছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক।
২০ মিনিটের দীর্ঘ সংবাদ সম্মেলনে দলের প্রায় সব অসংগতি নিয়েই কথা বলেছেন হাস্যোজ্জ্বল সাকিব। তাকে চিন্তিত মনে হয়নি। ম্যাচটা হাত থেকে ফঁসকে গেছে; এটা পরিস্কার হয়ে যাওয়াতেই হয়তো উটকো চাপ নিতে রাজি নন অপরাজিত থেকে চতুর্থ দিন শেষ করা সাকিব। হাসতে হাসতেই তিনি বলে যাচ্ছিলেন, ‘দুনিয়াতে কিছুই অসম্ভব নয়। দেখা যাক না কী হয়। আরেকটা আছে বৃষ্টি উপরে, ওটাও আমাদের বাঁচাতে পারে। বেশ কয়েকটা পথ আছে। এখন বাকিটা দেখা যাক।’
এই অবস্থায় থেকেও কার্ডিফের সুখ স্মৃতি ফিরিয়ে আনা সম্ভব? এমন প্রশ্নেও চাপ নেননি সাকিব। বলেছেন, ‘কার্ডিফ ফিরতে অন্য পাশে একজনকে থাকতে হবে। দুজন মিলেই করতে হবে। আমি যদি ১৫০ করি ওর (সৌম্য সরকার) অন্তত ১২০ করা লাগবে। তারপর আমরা জিততে পারব। অসম্ভব নয় কিন্তু অনেক কঠিন কাজটা।’
কাজটা কতোটা কঠিন, সেটা অনেকের চেয়েই ভালো করে জানেন সাকিব। তাই বাস্তবতা মেনে সাকিব বলছেন, ‘বাস্তবসম্মত ফল বললে আমরা এই ম্যাচ হারের খুব কাছাকাছি। একমাত্র বৃষ্টি আছে আর আল্লাহ যদি স্বয়ং আমাদের দুইজন প্লেয়ারের ওপর না পড়ে, তাহলে হারার সম্ভাবনাটাই খুব বেশি। এখানেও আসলে একটা চ্যালেঞ্জ থেকে যায়, আমরা যে ৪ জন বাকি আছি, তারা যদি কিছু একটা করে দেখাতে পারি…।’
জয়ের জন্য বাকি ২৬২ রান তুলতে সাকিবের হাতে মাত্র চার উইকেট। সাকিব ও সৌম্য সরকার অপরাজিত আছেন। এর বাইরে আছেন মেহেদী হাসান মিরাজ, তাইজুল ইসলাম ও নাঈম হাসান। এর মধ্যে দুজনই বোলার। অতীত বলছে মিরাজেও তেমন ভরসা করার সুযোগ নেই। তাই বন্ধুর পথ হলেও এদের নিয়েই যা লড়াই করার করতে হবে বাংলাদেশকে। বাকিটা ছেড়ে দিতে হবে বৃষ্টির হাতে।