|| ক্রিকফ্রেঞ্জি করেসপন্ডেন্ট ||

নিজেদের টেস্ট ইতিহাসে দুই নম্বর জয়ের বেশ কাছে অবস্থান করছে আফগানিস্তান। স্বাগতিক বাংলাদেশের বিপক্ষে চট্টগ্রাম টেস্টে জয় পেতে হলে আর মাত্র ৪টি উইকেট তুলে নিতে হবে তাদের। 

কারণ রশিদ খানদের দেয়া ৩৯৮ রানের লক্ষ্যে ব্যাটিং করতে নেমে চতুর্থ দিন শেষে ৬ উইকেটে ১৩৬ রান সংগ্রহ করেছে সাকিব আল হাসানের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ। জয়ের জন্য এখনও তাদের প্রয়োজন ২৬২ রান। শেষ দিন ৩৯ রান নিয়ে খেলতে নামবেন অধিনায়ক সাকিব। আর তাঁর সঙ্গী সৌম্য সরকার এখনও রানের খাতা খোলেননি।  

বাংলাদেশে বিপক্ষে হয়তো চতুর্থ দিনই জয় তুলে নিতে পারতো আফগানিস্তান। কিন্তু বৃষ্টির কারণে এদিনের খেলা বেশ কিছুক্ষণ আগে শেষ হওয়ায় অপেক্ষা বেড়েছে সফরকারীদের। অপরদিকে ম্যাচ বাঁচাতে হলে বাংলাদেশকে নির্ভর করতে হবে আবহাওয়ার ওপর। টেস্টের শেষ দিন বেশিরভাগ সময় বৃষ্টি হলে তবেই ড্র করতে পারবে তারা ম্যাচটি। 

এর আগে চট্টগ্রাম টেস্টে টস জিতে ব্যাটিং করতে নেমে নিজেদের প্রথম ইনিংসে রহমত শাহর সেঞ্চুরিতে ৩৪২ রান সংগ্রহ করে আফগানিস্তান। জবাবে খেলতে নেমে মাত্র ২০৫ রানে প্রথম ইনিংসে অলআউট হয় স্বাগতিক বাংলাদেশ। ফলে ১৩৭ রানের বিশাল লিড নিয়ে দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করে রশিদ খানরা।

পরবর্তীতে দ্বিতীয় ইনিংসে ইব্রাহিম জাদরান এবং আসগর আফগানের জোড়া হাফ সেঞ্চুরিতে ২৬০ রান তুলতে সক্ষম হয় সফরকারীরা। এরই সঙ্গে বাংলাদেশের সামনে ৩৯৮ রানের পাহাড় সমান লক্ষ্য দাঁড়া করায় তারা। 

আফগানদের দেয়া বিশাল লক্ষ্যে খেলতে নেমে সাবধানী শুরু করেন বাংলাদেশের দুই ওপেনার সাদমান ইসলাম এবং লিটন দাস। দুজনই উইকেটে ধৈর্যের পরিচয় দেন। তাদের ব্যাটে কোনো উইকেট না হারিয়েই মধ্যাহ্নভোজের বিরতিতে যায় বাংলাদেশ। 

বিরতির পরই চট্টগ্রামে হানা দেয় বৃষ্টি। ফলে ঢেকে দেয়া হয় উইকেট। গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টির কারণে ২০ মিনিট পর খেলা শুরু হয় আবারো। তবে এরপরই আফগান চায়নাম্যান বোলার জহির খানের করা বলে এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে পড়ে আউট হতে হয় লিটনকে।। এই ডানহাতি ওপেনারের ব্যাট থেকে এসেছে ৩০ বলে ৯ রান। 

ডানহাতি-বাঁহাতি কম্বিনেশনের কারণে লিটন ফেরার পর তিন নম্বরে খেলতে পাঠানো হয় মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতকে। তবে ব্যাট হাতে ব্যর্থ হয়েছেন তিনি। ১৭ বলে ১২ রান করে জহির খানকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে আসগর আফগানের হাতে ধরা পড়েন এই অলরাউন্ডার।

মোসাদ্দেক ফেরার পর দ্রুত ফিরতে হয়েছে উইকেট রক্ষক ব্যাটসম্যান মুশফিকুর রহিমকেও। রশিদ খানের করা ২৪তম ওভারের প্রথম বলে এলবিডব্লিউর শিকার হন তিনি। আউট হওয়ার আগে ২৫ বলে ২৩ রানের ইনিংস এসেছে মুশফিকের ব্যাট থেকে।

উইকেটে থিতু হতে পারেননি মুমিনুল হকও। আফগান অধিনায়ক রশিদের বলেই মাত্র ৩ রান করে এলবিডব্লিউয়ের শিকার হন তিনি। ৮২ রানে মুমিনুলের উইকেট হারানোর পর ওপেনার সাদমানকে নিয়ে ইনিংস মেরামত শুরু করেন অধিনায়ক সাকিব আল হাসান।

২০ রানের জুটি গড়ে চা পান বিরতিতে যান এই দুই ব্যাটসম্যান। বিরতির পর খেলতে নামার পর আবারো বিপর্যয়ে পড়ে বাংলাদেশ। মোহাম্মদ নবির বলে এলবিডব্লিউ হয়ে ৪১ রানে সাজঘরে ফেরেন সাদমান।

তিনি আউট হলে সাকিবের সঙ্গে ক্রিজে যোগ দেন অলরাউন্ডার মাহমুদউল্লাহ। কিন্তু নামের প্রতি সুবিচার করতে পারেননি তিনি। রশিদ খানের গুগলিতে শর্টে ইব্রাহিম জাদরানের হাতে ক্যাচ দিয়ে ৭ রান করে ফিরেছেন তিনি।

মাহমুদউল্লাহর পর নতুন ব্যাটসম্যান হিসেবে ব্যাটিংয়ে নামেন সৌম্য সরকার। কিন্তু এরপর   জহুর আহমেদ স্টেডিয়ামে আবারও ভারী বৃষ্টি শুরু হলে দিনের খেলার সমাপ্তি ঘোষণা করেন আম্পায়াররা। টেস্টের পঞ্চম দিন খেলা শুরু হবে বাংলাদেশ সময় সকাল সাড়ে নয়টায়। 

বাংলাদেশ একাদশঃ 

সৌম্য সরকার, সাদমান ইসলাম অনিক, মুমিনুল হক, মুশফিকুর রহিম, সাকিব আল হাসান (অধিনায়ক)। মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, লিটন কুমার দাস (উইকেট রক্ষক), মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত, মেহেদি হাসান মিরাজ, তাইজুল ইসলাম, নাঈম হাসান। 

আফগানিস্তান একাদশঃ

ইহসানউল্লাহ, ইব্রাহিম জাদরান, রহমত শাহ, হাশমতউল্লাহ শহিদি, আসগর আফগান, মোহাম্মদ নবি, আফসার জাজাই (উইকেট রক্ষক), রশিদ খান (অধিনায়ক), ইয়ামিন আহমদজাই, কাইস আহমেদ, জহির খান। 

সংক্ষিপ্ত স্কোরঃ  

আফগানিস্তান (প্রথম ইনিংস)- ৩৪২/১০ (১১৭ ওভার) (রহমত-১০২, আফগান-৯২; তাইজুল-৪/১১৬, নাঈম-২/৪৩
 
বাংলাদেশ (প্রথম ইনিংস)- ২০৫/১০ (৭০.৫ ওভার) (মোসাদ্দেক- ৪৮*, মমিনুল-৫২; রশিদ-৫/৫৫, নবি-৩/৫৬)

আফগানিস্তান (দ্বিতীয় ইনিংস)- ২৬০/১০ (৯০.১ ওভার) (আফসার-৪৮*, আসগর ৫০, ইব্রাহিম ৮৭; সাকিব ৩/৫৩)

বাংলাদেশ (দ্বিতীয় ইনিংস)- ১৩৬/৬ (৪৪.২ ওভার) (সাকিব ৩৯*, সৌম্য ০*)