অপ্রতিরোধ্য স্মিথে ছড়ি ঘোরাচ্ছে অস্ট্রেলিয়া

ছবি: ছবি- সংগৃহীত

|| ডেস্ক রিপোর্ট ||
চলমান ওল্ড ট্রাফোর্ড টেস্টে বেশ সুবিধাজনক অবস্থায় আছে সফরকারী অস্ট্রেলিয়া। ৩ উইকেটে ১৭০ রানে দ্বিতীয় দিন শুরু করা অস্ট্রেলিয়া সাবেক অধিনায়ক স্টিভেন স্মিথের ডাবল সেঞ্চুরিতে ৪৯৭ রানে নিজেদের প্রথম ইনিংস ঘোষণা করেছে।
জবাবে খেলতে নেমে মাত্র ১০ রানের মাথায় ওপেনার জো ডেনলিকে (৪) ম্যাথু ওয়েডের হাতে ক্যাচ বানিয়ে ব্রেক থ্রু এনে দেন পেসার প্যাট কামিন্স। এরপর নাইট ওয়াচম্যান ক্রেইগ ওভারটনকে সঙ্গে নিয়ে ২৩ রানে দিনের বাকি খেলা শেষ করেন রোরি বার্নস। ১৫ রান নিয়ে টেস্টের তৃতীয় দিন ব্যাট করতে নামবেন বাঁহাতি বার্নস। আর তাঁর সঙ্গী ওভারটনের সংগ্রহ ৩ রান।
অস্ট্রেলিয়ার ৪৯৭ রানের এই পাহাড়ের পেছনে সবথেকে বড় ভূমিকা রয়েছে স্মিথের। দীর্ঘ এক বছর নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরার পর যেন আরো ধারালো হয়ে উঠেছে তাঁর ব্যাট। চলমান অ্যাশেজ সিরিজই এর চাক্ষুষ প্রমাণ। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ইংল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম টেস্টের দুই ইনিংসেই সেঞ্চুরির দেখা পান এই ডানহাতি।
এরপর লর্ডস টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে বিরুদ্ধ স্রোতে ব্যাটিং করে ৯২ রানের ইনিংস খেলেন তিনি। জফরা আর্চারের বলে মাথায় আঘাত পেয়ে পরের টেস্টে অনুপস্থিত থাকলেও ওল্ড ট্রাফোর্ডে আবারো পরিচিত রুপে ফিরেছেন স্মিথ। অবশ্য এবার আরো বেশি ক্ষুরধার ব্যাটিং উপহার দিয়েছেন অভিজ্ঞ এই ব্যাটসম্যান।

প্রথম দিন ৬০ রানে অপরাজিত থেকে খেলা শেষ করা স্মিথ দ্বিতীয় দিন দুর্দান্ত ব্যাটিং করে তুলে নেন অ্যাশেজে নিজের তৃতীয় ডাবল সেঞ্চুরি। অ্যাশেজ সিরিজে সর্বোচ্চ ডাবল সেঞ্চুরি পাওয়া ব্যাটসম্যানদের তালিকায় এখন তিন নম্বরে রয়েছেন স্মিথ। তাঁর সামনে রয়েছেন শুধুই ইংল্যান্ডের কিংবদন্তী ব্যাটসম্যান ওয়ালি হ্যামন্ড এবং সর্বকালের সেরা ব্যাটসম্যান স্যার ডন ব্র্যাডম্যান। অ্যাশেজে ৪টি ডাবল সেঞ্চুরি রয়েছে হ্যামন্ডের। যেখানে ৮টি ডাবল সেঞ্চুরির মালিক ব্র্যাডম্যান।
এদিকে স্মিথ ছাড়াও ওল্ড ট্রাফোর্ডে এদিন দুর্দান্ত ব্যাটিং করেছেন অধিনায়ক টিম পেইন এবং লোয়ার অর্ডার ব্যাটসম্যান মিচেল স্টার্ক। দুজনই পেয়েছেন হাফ সেঞ্চুরির দেখা। ষষ্ঠ উইকেটে পেইনের সঙ্গে স্মিথের ১৪৫ রানের জুটিই মূলত পার্থক্য গড়ে দিয়েছিল অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটিংয়ে। ৫৮ রান করে পেইনের বিদায়ের পর অষ্টম উইকেটে স্টার্কের সঙ্গেও ৫১ রানের বড় জুটি গড়েন এই স্মিথ।
তাঁর ২১১ রানের বিশাল ইনিংসটির সমাপ্তি ঘটে জো রুটের বলে ডেনলির হাতে ক্যাচ দিয়ে। তবে বিদায় নেয়ার আগেই দলকে শক্ত অবস্থানে নিয়ে যান তিনি। ৪৩৮ রানের মাথায় তাঁর উইকেটটি হারানোর পর ৫৯ রানের আরেকটি দারুণ জুটি গড়েন নাথান লায়ন এবং স্টার্ক।
এই জুটি গড়ার পথে টেস্ট ক্যারিয়ারে দশ নম্বর হাফ সেঞ্চুরিও তুলে নেন স্টার্ক। এরপরেই ইনিংস ঘোষণা করে দেয় অস্ট্রেলিয়া। ইংল্যান্ডের পক্ষে ৯৭ রান খরচায় ৩টি উইকেট নেন পেসার স্ট্রুয়ার্ট ব্রড। এছাড়াও ২টি করে উইকেট পেয়েছেন জ্যাক লিচ এবং ক্রিস ওকসের বদলী হিসেবে খেলতে নামা ক্রেইগ ওভারটন।
এর আগে টেস্টের প্রথম দিন টসে জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক টিম পেইন। তবে বৃষ্টির কারণে এদিন খেলা হয় মাত্র ৪৪ ওভার। এই সময়ের মধ্যেই অবশ্য ব্যাটিং কারিশমা দেখান স্মিথ। ২৮ রানে ২ উইকেট হারিয়ে ফেলা দলকে বিপদমুক্ত করেন ৬০ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলে। একই সঙ্গে মার্নাস ল্যাবুশানের সঙ্গে তৃতীয় উইকেটে গড়েন ১১৬ রানের জুটি। ৬৭ রান করে ল্যাবুশানে আউট হলেও অপরাজিত থেকেই দিনের খেলা শেষ করেন স্মিথ।
সংক্ষিপ্ত স্কোরঃ
অস্ট্রেলিয়াঃ (প্রথম ইনিংস) ৪৯৭/৮ (১২৬ ওভার) (ডিক্লে) (স্মিথ- ২১১, ল্যাবুশানে-৬৭; ব্রড-৩/৯৭, লিচ-২/৮৩)
ইংল্যান্ডঃ (প্রথম ইনিংস) ২৩/১ (১০ ওভার) (বার্নস-১৫*, ওভারটন-৩*; কামিন্স-১/১০, হ্যাজেলউড-০/৩)