ইডেন থেকে লর্ডস, খলনায়ক থেকে নায়ক

ছবি: ছবিঃ সংগৃহীত

|| ডেস্ক রিপোর্ট ||
ওয়ানডে অভিষেক ২০১১ সালে হলেও ২০১৬ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনাল দিয়েই বিশ্বমঞ্চে নিজেকে অন্যভাবে চিনিয়েছিলেন ইংল্যান্ডের অলরাউন্ডার বেন স্টোকস। ইডেন গার্ডেন্সে তিন বছর আগের সেই ফাইনালে স্নায়ু চাপের কাছে হেরে গিয়েছিলেন তিনি। শেষ ওভারের প্রথম চার বলে ওয়েস্ট ইন্ডিজ অলরাউন্ডার কার্লোস ব্র্যাথওয়েটের কাছে চার ছক্কা হজম করে ইংলিশদের শিরোপা জয়ের স্বপ্নভঙ্গ করেছিলেন স্টোকস। সেই হারের পর অনেকটাই ভেঙে পড়েছিলেন এই অলরাউন্ডার। তারপরও থেমে যাননি, হয়তো ভাগ্য দেবতাও চেয়েছেন স্টোকস নায়ক হোক আরও বড় মঞ্চে।
তিন বছর পর বিশ্বকাপ ফাইনালে ইংলিশদের জেতালেন সেই স্টোকসই। ছোট ক্যারিয়ারে উত্থান-পতনের মাঝে দিয়ে বিশ্বকাপ ফাইনালে লেখা হল তার খলনায়ক থেকে নায়ক হওয়ার গল্প। ফিনিক্স পাখির মত নিজেকে নতুন করে যেন বিশ্বমঞ্চে চেনালেন এই অলরাউন্ডার। ইংল্যান্ড জিতলো তাদের প্রথম বিশ্বকাপ শিরোপা, স্টোকস হলেন বিশ্বকাপ ফাইনালের সেরা খেলোয়াড়।

মাঝের এই তিনবছরে ক্রিকেটের 'ব্যাড বয়' এর খ্যাতিটাও পেয়েছেন স্টোকস। ২০১৭ সালের অ্যাশেজের আগে ব্রিস্টলে মারামারির ঘটনায় লিপ্ত হয়েছেন, বাদ পড়েছেন অ্যাশেজের দল থেকে। কেটেছেন আদালতের চক্কর, তারপরও থামেননি। সব কঠিন পথ পাড়ি দিয়ে লর্ডসের ময়দানে ইংলিশদের জয়ের এই নায়ককে প্রশংসায় ভাসিয়েছেন দলপতি ইয়ন মরগান।
তিন বছর আগের সেই ফাইনালে হারের পর অনেকের ক্যারিয়ারই থেমে যেতে পারতো বলে মনে করছেন এই দলপতি। কিন্তু সব কঠিন পরিস্থিতি পেছনে ফেলে ফাইনালে ইংলিশদের জয়ে বড় অবদান রাখার জন্য স্টোকসকে ধন্যবাদ জানাতে ভুলেননি মরগান। তিনি বলেন, 'আমার মতে ২০১৬ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ফাইনালের পর অনেকের ক্যারিয়ারই শেষ হয়ে যেতে পারতো।
কিন্তু সেটা হয়নি, বিশেষ করে স্টোকসের ক্ষেত্রে। দলের জন্য স্টোকস সব সময়ই নিজের সেরাটা দিয়েছে। ব্যক্তিগত এবং দলীয়ভাবে দলকে সবসময়ই জেতানোর চেষ্টা করেছে। ট্রেনিংয়ে এবং টিম মিটিংয়েও সবাইকে নেতৃত্ব দেয় সে। অসাধারণ একজন ক্রিকেটার স্টোকস। আজ তো সে অনেক বড় ভূমিকা পালন করেছে। আমরা তার কাছে কৃতজ্ঞ, ধন্যবাদ তাকে।'
২০১৬ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ফাইনালে হারের পর এই মরগানই বলেছিলেন ক্রিকেট বড়ই নিষ্ঠুর খেলা। শেষ ওভারে স্নায়ু চাপ ধরে রাখতে না পারায় বেন স্টোকসের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন তিনি। মরগান বলেছিলেন, 'ক্রিকেট বড়ই নিষ্ঠুর খেলা, চার বলে চার ছক্কা হাঁকিয়েও ম্যাচ জেতা সম্ভব। দলের সবাই সব পরিস্থিতি একসঙ্গে মোকাবেলা করেছে।
স্টোকস এখান থেকে ভেঙ্গে পড়বে না আশা করছি। ভালোভাবেই সে ফিরবে। আর আমার বিশ্বাস এখান থেকেই আমাদের উন্নতির যাত্রাটা শুরু হবে। নিজেদেরকে বুঝতে হবে আমরা কিভাবে কি করতে চাই। আজকের রাতটা অনেক কষ্টের, সবাই একসঙ্গে কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করব।'