ঝড় তুলে আউট রিয়াদ, ব্যর্থ সাব্বির

ছবি: ছবিঃ সংগৃহীত

|| ডেস্ক রিপোর্ট ||
ডেভিড ওয়ার্নারের ১৬৬ রানের ইনিংসের সুবাদে বিশ্বকাপে বাংলাদেশের বিপক্ষে রানের পাহাড় গড়েছে অস্ট্রেলিয়া। নির্ধারিত ৫০ ওভারে দলটির সংগ্রহ ৫ উইকেট হারিয়ে ৩৮১ রান। জবাবে ব্যাট করছে বাংলাদেশ।
ঝড় তুলে আউট রিয়াদ, ব্যর্থ সাব্বিরঃ
মুশফিককে নিয়ে পঞ্চম উইকেটে ১২৭ রানের জুটি গড়েছেন রিয়াদ। জুটি গড়ার মাঝে ৪১ বলে অর্ধশতক তুলে নেন। ব্যক্তিগত ৬৯ রানে তিনি কোল্টার নাইলের বলে ডিপ স্কয়ার লেগে কামিন্সের হাতে ধরা পড়েন। সাব্বির এরপর উইকেটে এসে প্রথম বলেই বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফেরেন।
মুশফিক-রিয়াদের ব্যাটে ঝড়ঃ
সাকিব, লিটন ফেরার পর রিয়াদকে নিয়ে বাংলাদেশের রানের চাকা সচল রেখেছেন মুশফিক। ৫৪ বলে তিনি হাফ সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন। প্রথমে কিছুটা দেখে শুনে খেললেও। ৪০ ওভারের পর থেকেই অজি বোলারদের উপর চড়াও হয়ে খেলা শুরু করেন এই দুজনে।
রিভিউ নিয়েও বাঁচতে পারলেন না লিটনঃ
ব্যক্তিগত ২০ রানে অজি স্পিনার অ্যাডাম জাম্পার বলে এলবিডব্লিউ হয়ে আউট হন লিটন দাস। আম্পায়ারের সিদ্ধান্তে অসন্তুষ্ট হয়ে রিভিউ নিয়েছিলেন লিটন। তবে, টিভি রিপ্লাইতে দেখা গেছে বলটি লেগ স্টাম্প বরাবর ছিল ফলে থার্ড আম্পায়ারও আউট দেন তাকে।
স্টার্কের গতিতে পরাস্ত তামিমঃ
তামিম ৬৫ বলে হাফ সেঞ্চুরিতে পৌঁছান। এরপর ব্যক্তিগত ৬২ রানে তিনি মিচেল স্টার্কের গতিতে পরাস্ত হয়ে বোল্ড হয়ে আউট হন।
সাজঘরে সাকিবঃ
বিশ্বকাপে টানা চার ম্যাচে পঞ্চাশোর্ধ রানের ইনিংস খেলেছিলেন সাকিব। আজ অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সেটি বাড়িয়ে নেয়ার সুযোগ ছিল। তবে ব্যক্তিগত ৪১ রানে স্টয়নিসের বলে ওয়ার্নারকে ক্যাচ দি্যে সেই রেকর্ডের সুযোগ হাতছাড়া করেন এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। সাকিব ফিফটি তুলে নিতে না পারলেও তামিম ৬৫ বলে ফিফটিতে পৌঁছান।

সাকিব-তামিমের জুটিঃ
তৃতীয় উইকেটে সাকিবকে নিয়ে একটি বড় জুটি গড়েন তামিম। এই দুজনে ইতিমধ্যে পঞ্চাশোর্ধ রানের জুটি গড়েছেন। সাকিব তিন নম্বরে নেমে শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক খেলতে থাকেন। তাকে যোগ্য সঙ্গ দিচ্ছেন ওপেনার তামিম। এই দুজনের ব্যাটে ১৭.৪ ওভারে দলীয় সেঞ্চুরিতে পৌঁছায় বাংলাদেশ।
রিভিউ হারালো অস্ট্রেলিয়াঃ
কোল্টার নাইলের করা অষ্টম ওভারের পঞ্চম বলটি আঘাত হানে সাকিবের প্যাডে। এরপর অস্ট্রেলিয়ার জোড়ালো আবেদন ফিরিয়ে দেন আম্পায়ার। অজি দলপতি রিভিউ নিলে দেখা যায় বলটি লেগ স্টাম্পের কিছুটা বাইরে পিচ আপ করেছে। ফলে নট আউটের সিদ্ধান্ত দেন থার্ড আম্পায়ার। তাই রিভিউ নষ্ট হয় অস্ট্রেলিয়ার।
রান আউটে প্রথম উইকেট গেল বাংলাদেশেরঃ
ব্যাটিংয়ে নেমে শুরু থেকেই হাত খুলে খেলতে থাকেন দুই বাংলাদেশি ওপেনার তামিম ইকবাল ও সৌম্য সরকার। দলীয় ২৩ রানে ব্যক্তিগত ১০ রানে তামিমের সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝিতে রান আউট হন সৌম্য।
প্রথম ইনিংস বিবরণঃ
অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে জিততে হলে বিশ্বকাপের ইতিহাস বদলাতে হবে বাংলাদেশকে। বিশ্বকাপে এতো রান তাড়া করে জেতার রেকর্ড নেই। বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ রান তাড়া করার যে রেকর্ড আয়ারল্যান্ডের দখলে, সেই রেকর্ড গড়তে তাদের পাড়ি দিতে হয়েছিল ৩২৭ রানের লক্ষ্য।
এই ম্যাচের শুরুতে টসে জিতে ব্যাট করতে নেমে প্রথম দুই ওভারে বাংলাদেশের বোলারদের বিপক্ষে একটু সতর্ক হয়েই খেলেন দুই অজি ওপেনার ডেভিড ওয়ার্নার এবং অ্যারন ফিঞ্চ।
তৃতীয় ওভার থেকে খানিকটা হাত খুলে খেললেও ষষ্ঠ ওভারে বাংলাদেশকে বড় সুযোগ দিয়েছিলেন ওয়ার্নার। মাশরাফি বিন মুর্তজাকে ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টকে খেলতে গিয়ে সাব্বির রহমানের হাতে ক্যাচ তুলে দেন তিনি।
কিন্তু সেই ক্যাচ লুফে নিতে ব্যর্থ হন সাব্বির রহমান। এরপর ১৪৭ বলে ১৬৬ রান করে আউট হন তিনি। মূলত তাঁর ব্যাটেই বড় সংগ্রহের ভিত পায় অস্ট্রেলিয়া।
ওয়ার্নার আউট হওয়ার আগে দলীয় ১২১ রানে ৫৩ রান করা ফিঞ্চকে আউট করেন পার্টটাইমার সৌম্য সরকার। দ্বিতীয় উইকেটে উসমান খাওয়াজাকে নিয়ে ১৯২ রানের জুটি গড়েন ওয়ার্নার।
বাঁহাতি ওয়ার্নারকে ফিরিয়ে এই জুটি ভাঙেন সৌম্য। ব্যক্তিগত ১৬৬ রানে তিনি সৌম্যকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে শর্ট থার্ড ম্যানে রুবেলের হাতে ধরা পড়ে আউট হন।
সৌম্যর করা ৪৭তম ওভারে দলীয় ৩৫২ রানে উসমান খাওয়াজার সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝিতে মাত্র ১০ বলে ৩২ রান তোলা গ্লেন ম্যাক্সওয়েল সাজঘরে ফেরেন। এর তিন বল পর ৮৯ রান করা খাওয়াজাকে উইকেটের পেছনে মুশফিকের ক্যাচ বানিয়ে আউট করেন সৌম্য।
পরের ওভারেই নতুন ব্যাটসম্যান স্টিভ স্মিথকে ব্যক্তিগত ১ রানে এলবির ফাঁদে ফেলে আউট করেন টাইগার পেসার মুস্তাফিজুর রহমান। অস্ট্রেলিয়ার ইনিংসের ৪৯ ওভারে বৃষ্টির উৎপাতে খেলা কিছুক্ষণ বন্ধ থাকে।
বৃষ্টি থামলে আবারও মাঠে নামেন দুই অপরাজিত ব্যাটসম্যান মার্কুস স্টয়নিস ও অ্যালেক্স ক্যারি। স্টয়নিস ১৭ ও ক্যারি ১১ রান করে অস্ট্রেলিয়াকে ৩৮১ রানে পৌঁছে দেন।
সংক্ষিপ্ত স্কোরঃ
অস্ট্রেলিয়াঃ ৩৮১/৫ (৫০ ওভার)
(ওয়ার্নার ১৬৬, খাওয়াজা ৮৯, ফিঞ্চ ৫৩; সৌম্য ৩/৫৮, মুস্তাফিজ ১/৬৯)
বাংলাদেশঃ ৩০৩/৬ (৪৫.৫ ওভার)
(মুশফিক ৮৪*)