নাঈমের ক্যারিয়ার সেরা বোলিং

ছবি: ছবি- ওয়ালটন

|| ডেস্ক রিপোর্ট ||
দুই স্পিনার তাইজুল ইসলাম এবং নাঈম হাসানের ঘূর্ণিতে তিন দিনেই বিসিএলের ষষ্ঠ এবং শেষ রাউন্ডের ম্যাচ জিতেছে পূর্বাঞ্চল। সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত এই ম্যাচে মধ্যাঞ্চলকে ৩২১ রানে হারিয়েছে পূর্বাঞ্চল।
২০৩ রানের লিড নিয়ে তৃতীয় দিন শুরু করেছিল পূর্বাঞ্চল। দুই ওপেনার ইমরুল কায়েস এবং রনি তালুকদার ব্যর্থ হয়েছিলেন দিনের শুরুতেই। কিন্তু অধিনায়ক মমিনুল হক এবং ইয়াসির আলির ওয়ানডে মেজাজের শতকে বিশাল লিড সংগ্রহ করে পূর্বাঞ্চল। দুইজন তৃতীয় উইকেট জুটিতে দলের খাতায় যোগ করেছিলেন ১৭৫ রান।
মমিনুল খেলেছিলেন ১০৬ বলে ১০০ রানের ইনিংস, যা তাঁর প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটের ১৯তম শতক। যেখানে নয়টি চার এবং একটি ছয় ছিল মমিনুলের। কিন্তু শতক হাঁকিয়ে অপরাজিত ছিলেন ইয়াসির। ১০৯ বলের ইনিংসে ১০টি চার এবং দুটি ছয়ে ১০১ রান করেছিলেন ইয়াসির। যা তাঁর প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটের ষষ্ঠ শতক।
দিনের দেড় সেশন ব্যাটিং করে তিন উইকেটে ২৫৪ রান সংগ্রহ করে ইনিংস ঘোষণা করে পূর্বাঞ্চল। মধ্যাঞ্চলের সামনে ৪৫৬ রানের পাহাড়সম লক্ষ্য ছুঁড়ে দেয় তাঁরা।
জবাবে ব্যাট করতে নেমে নাঈম হাসানের স্পিনে শুরুতেই উইকেট হারায় পূর্বাঞ্চল। প্রথম ইনিংসে অর্ধশতক হাঁকানো পিনাক ঘোষকে লেগ বিফোরের ফাঁদে ফেলে শূন্যরানে ফিরিয়েছেন নাঈম।
অপর প্রান্ত দিয়ে মারকুটে মেজাজে ব্যা??িং করা শুরু করেন আরেক ওপেনার সাইফ হাসান। পিনাকের বিদায়ে তাঁর সাথে নতুন ব্যাটসম্যান হিসেবে যোগ দিয়েছিলেন দলের অধিনায়ক নাজমুল হাসান শান্ত।
কিন্তু সাইফকে বেশীক্ষণ উইকেটে থাকতে দেননি নাঈম। ৪০ বলে ৩১ রান করা এই ব্যাটসম্যানকে খালেদ আহমেদের হাতে ক্যাচ বানিয়ে ফিরিয়েছেন এই স্পিনার নাঈম। ২৯ রানের জুটি ভাঙ্গেন তিনি। এরপর নাঈমের স্পিন জাদুর সামনে দাঁড়াতে পারেনি মধ্যাঞ্চলের আর কোন ব্যাটসম্যানই।
একে একে আব্দুল মজিদ, শান্ত, মার্শাল আইয়ুব, মোসাদ্দেক হোসেন, মোশাররফ হোসেন, আবু হায়দারদের সাজঘরের পথ দেখিয়েছেন নাঈম। তুলে নিয়েছেন এক ইনিংসে আট উইকেট, ৪৭ রান খরচায়। যা তাঁর ঘরোয়া প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটে ক্যারিয়ার সেরা ইনিংস। এর আগে এবছরই জাতীয় লিগে ১০৬ রান দিয়ে আট উইকেট নিয়েছিলেন নাঈম

দুর্দান্ত এই বোলিং করে ম্যাচ সেরাও হয়েছেন ডানহাতি স্পিনার নাঈম। দলের হয়ে বাকি দুই উইকেট নিয়েছেন পেসার আবু জায়েদ রাহি।
শেষ পর্যন্ত ১৩৫ রানেই থেমে যায় মধ্যাঞ্চলের দ্বিতীয় ইনিংস, পূর্বাঞ্চল জয়ী হয় ৩২১ রানে। দ্বিতীয় ইনিংসে দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৩৬ রান নেন অধিনায়ক শান্ত। ৩১ রানের ইনিংস খেলেন ওপেনার সাইফ হাসান।
এই ম্যাচে টস জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন পূর্বাঞ্চলের অধিনায়ক মমিনুল হক। ব্যাটসম্যানদের অসাধারণ ব্যাটিংয়ে প্রথম ইনিংসে ৪২৫ রান সংগ্রহ করে। দলের হয়ে চার ব্যাটসম্যান পৌঁছেছিলেন অর্ধশতকের ঘরে কিন্তু কেউ তিন অংকের খাতায় নাম লেখাতে পারেননি।
ইমরুল কায়েস ৭৮ রান, মমিনুল হক ৮২ রান, মাহমুদুল হাসান ৯৪ রান এবং জাকির আলি ৫২ রানের ইনিংস খেলেছিলেন। মধ্যাঞ্চলের হয়ে চার উইকেট নিয়েছেন পেসার তাসকিন আহমেদ।
নিজেদের প্রথম ইনিংসে ব্যাটিংয়ে নেমে তাইজুলের বিধ্বংসী স্পিনের সম্মুখীন হতে হয় মধ্যাঞ্চলের ব্যাটসম্যানদের। তাঁর ঘূর্ণি জাদুতে ম্যাচের দ্বিতীয় দিন ব্যাটিংয়ে নেমে আড়াই সেশনেই থেমে যায় মদ্ধাঞ্চলের ইনিংস। ২২৪ রানেই অলআউট হয়ে যায় মধ্যাঞ্চল। ২০১ রানের লিড পায় পূর্বাঞ্চল।
দুর্দান্ত বোলিং করে একাই ছয় উইকেট নিয়েছেন বাঁহাতি স্পিনার তাইজুল। মধ্যাঞ্চলের হয়ে মাত্র দুই ব্যাটসম্যান অর্ধশতকের ঘর পার করতে পেরেছেন। ওপেনার পিনাক ঘোষ খেলেছিলেন ৫১ রানে ইনিংস এবং মোসাদ্দেক হোসেন খেলেছেন ৫৭ রানের ইনিংস।
সংক্ষিপ্ত স্কোরঃ
পূর্বাঞ্চল প্রথম ইনিংসঃ ৪২৫ অলআউট (৮৮.৫ ওভার)
(মাহমুদুল ৯৪, মমিনুল ৮২,; তাসকিন ৪/৯৬)
মধ্যাঞ্চল প্রথম ইনিংসঃ ২২৪ অলআউট (৭২.১ ওভার)
(মোসাদ্দেক ৫৭, পিনাক ৫১; তাইজুল ৬/৯২)
পূর্বাঞ্চল দ্বিতীয় ইনিংসঃ ২৫৪/৩ ডিঃ (৪৩ ওভার)
(ইয়াসির ১০১*, মমিনুল ১০০; তাসকিন ১/৩৭)
মধ্যাঞ্চল দ্বিতীয় ইনিংসঃ ১৩৪ অলআউট (৪২.২ ওভার)
(শান্ত ৩৬, সাইফ ৩১; নাঈম ৮/৪৭)