সবুরে মেওয়া ফলেছে সাদমানের

ছবি: সাদমান ইসলাম অনিক, ক্রিকফ্রেঞ্জি

|| ক্রিকফ্রেঞ্জি করেসপন্ডেন্ট ||
সবুরে মেওয়া ফলে- এই প্রবাদ বাক্যটি যেন একেবারে যথার্থই বলতে হবে ২৩ বছর বয়সী ব্যাটসম্যান সাদমান ইসলামের জন্য। কেননা সদ্যই উইন্ডিজদের বিপক্ষে টেস্ট স্কোয়াডে ডাক পাওয়া এই ক্রিকেটারকে জাতীয় দলে ডাক পাওয়ার জন্য অপেক্ষায় থাকতে হয়েছে দীর্ঘ দিন।
অথচ ২০১৪ সালে এই সাদমানের সাথেই অনূর্ধ্ব ১৯ দলের হয়ে খেলা মেহেদী হাসান মিরাজ, আবু হায়দার রনি কিংবা মুস্তাফিজুর রহমানরা দেশের হয়ে খেলে যাচ্ছেন নিয়মিত। সতীর্থদের অনেকেই জাতীয় দলে খেলার সুযোগ পেলেও সাদমানকে পাড়ি দিতে হয়েছে দীর্ঘ এবং বন্ধুর পথ।
শুধু অনূর্ধ্ব ১৯ দলেই নয়, এখন পর্যন্ত চারটি এইচপি প্রোগ্রামে অন্তর্ভুক্ত ছিলেন তিনি। তবে এরপরেও ভাগ্যের শিকে ছেঁড়েনি তাঁর। শেষ পর্যন্ত ঘরোয়া ক্রিকেটকেই বেঁছে নিয়েছিলেন জাতীয় দলের 'পাসপোর্ট' হিসেবে। সেই লক্ষ্যে যে তিনি ভালোভাবেই সফল হয়েছেন তা বলাই বাহুল্য।

সর্বশেষ জাতীয় ক্রিকেট লীগের (এনসিএল) আসরে ব্যাট হাতে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক ছিলেন ঢাকা মেট্রোর হয়ে খেলা সাদমান। ৬৪.৮০ গড়ে ৬৪৮ রান সংগ্রহ করা এই ব্যাটসম্যানের প্রতি তাই স্বাভাবিকভাবেই সুনজর ছিল নির্বাচকদের।
উইন্ডিজদের বিপক্ষে প্রস্তুতি ম্যাচে সেকারণেই তাঁকে পরীক্ষা করে নিতে চেয়েছিলেন তাঁরা। সেই পরীক্ষাতেও দারুণভাবে পাস করে গিয়েছেন বাঁহাতি ব্যাটসম্যান সাদমান। ব্যাট হাতে গ্যাব্রিয়েল, রোচ এবং পলদের মতো পেসারদের সামলে ৭৩ রানের ঝলমলে একটি ইনিংস খেলেন তিনি। এরপরেই পেয়ে গেলেন জাতীয় দলের টিকিট।
তরুণ সাদমানের মতে এই সাফল্যের পেছনে সবথেকে বেশি অগ্রজ ভূমিকা পালন করেছে তাঁর অধ্যবসায় এবং আত্মপ্রত্যয়ের মানসিকতা। সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে সেই বক্তব্যই ফুটে উঠেছে তাঁর কণ্ঠে। বলেছেন,
'লক্ষ্য ছিল যে যেখানেই খেলবো সেখানেই পারফর্ম করতে থাকব। কোন একদিন সুযোগ আসবে। আমি যদি পারফর্ম করতে থাকি তাহলে অবশ্যই কোন একদিন সুযোগ আসবে।'
ভাল কিছু পাওয়ার জন্য যে দীর্ঘ প্রতিক্ষাও তুচ্ছ তাঁর চাক্ষুষ প্রমাণ এই সাদমান ইসলাম অনিক। সতীর্থরা যখন দেশ মাতৃকার জন্য খেলে যাচ্ছেন, প্রমাণ করে যাচ্ছেন নিয়মিত তখন সাদমান হয়তো ব্যাট হাতে খেলছেন বিকেএসপি কিংবা ফতুল্লাহর মাঠে। তবে এত কিছুর পরেও অপেক্ষার এই প্রহর ফুরানোয় খুশি সাদমান। অপেক্ষা করে ভাল কিছু পাওয়ার আনন্দে উদ্বেলিত তিনি,
'অপেক্ষা তো করতেই হয়। জাতীয় দলে খেলা তো সকলেরই স্বপ্ন থাকে। যেমন আমি বিশ্বকাপের পর এসে প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটে খেলেছি। ঢাকা প্রিমিয়ার লীগ থেকে শুরু করে সবখানে খেলে আসছি,' বলেন সাদমান।
উল্লেখ্য প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটের এখন পর্যন্ত মোট ৪২ ম্যাচে ৪৬.৫০ গড়ে ৩০৩২ রান সংগ্রহ করেছেন সাদমান। যেখানে তাঁর রয়েছে ৭টি শতক এবং ১৬টি অর্ধশতক। সুতরাং টেস্ট খেলার অভ্যাস যে ভালোভাবেই আছে তাঁর তা হলফ করেই বলা যায়।