মিরাজের দ্বিতীয়

ছবি: ছবি- ক্রিকফ্রেঞ্জি

|| ডেস্ক রিপোর্ট ||
জিম্বাবুয়ের দ্বিতীয় ইনিংসঃ ১০১/৩, ৩৬.১ ওভার
উইলিয়ামস ১৭*, রাজা ০* ; মিরাজ ২/২০, তাইজুল ১/২৪)
বাংলাদেশের প্রথম ইনিংসঃ ১৪১/৮, ৪৮ ওভার
(আরিফুল ৩৯*, অপু ৮*; চাতারা ৩/৯, জার্ভিস ২/২৮ )
জিম্বাবুয়ের প্রথম ইনিংসঃ ২৮২ অলআউট, ১১৭.৩ ওভার
(মুর- ৬৩*, উইলিয়ামস ৮৮ ; তাইজুল ইসলাম ৬/১০৮)
সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে বাংলাদেশের বিপক্ষে প্রথম ইনিংসে ১৪০ রানে এগিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিং করছে জিম্বাবুয়ে। টেস্টের তৃতীয় দিনের খেলার ইতিমধ্যে তিন উইকেট হারিয়ে ১০১ রান সংগ্রহ করেছে সফরকারীরা। বর্তমানে তাঁদের লিড দাঁড়িয়েছে ২৪০ রানে।
মিরাজের আঘাতঃ
লাঞ্চের পর এসেই জিম্বাবুয়ে শিবিরে আঘাত হানেন স্পিনার মিরাজ। ৩৭তম ওভারের প্রথম বলেই মাসাকাদজাকে লেগ বিফরের ফাঁদে ফেলে সাজ ঘরে ফেরান তিনি। অর্ধশতক থেকে মাত্র দুই রান দূরে ছিলেন এই ডানহাতি ব্যাটসম্যান। কিন্তু মিরাজের বলে রিভার্স সুইপ করতে গিয়েই খেলেন ধরা। ৪৮ রান করে ফিরে যেতে হয়েছে তাঁকে।
নতুন ব্যাটসম্যান হিসেবে মাঠে নেমেছেন সিকান্দার রাজা। তার সঙ্গে উইকেটে রয়েছেন শন উইলিয়ামস (১৭*)।
মাসাকাদজা-উইলিয়ামসের জুটিঃ

৪৭ রানে দুই উইকেট হারানোর পর বড় জুটি গড়ার পথে হাঁটছেন জিম্বাবুয়ে অধিনায়ক মাসাকাদজা এবং উইলিয়ামস। ইতিমধ্যে ৪৪ রানের জুটি গড়েও ফেলেছেন তাঁরা দু'জন। ৯১ রান নিয়ে দিনের প্রথম সেশন শেষ করেছে জিম্বাবুয়ে।
মাসাকাদজা বর্তমানে ৩৯ রান নিয়ে উইকেটে রয়েছেন এবং তাঁর সাথে দারুণ সঙ্গ দিয়ে যাচ্ছেন বাঁহাতি ব্যাটসম্যান উইলিয়ামস (১৬*)।
ইমরুলের অসাধারণ ক্যাচঃ
ব্যাটিংয়ে নেমে শুরু থেকেই বাউন্ডারি হাঁকানোর মেজাজে ছিলেন অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান টেইলর। ২৫ বলে ২৪ রান তুলেও নিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু তাইজুলের বলে মারতে গিয়ে ধরা পড়েন ইমরুল কায়েসের হাতে। লং অনে পিছন থেকে দৌড়ে গিয়ে দুর্দান্ত এক ক্যাচ লুফে নেন ইমরুল আর সাজঘরে ফেরত পাঠান বিধ্বংসী হতে থাকা টেইলরকে।
নতুন ব্যাটসম্যান হিসেবে মাঠে নেমেছেন প্রথম ইনিংসে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক শন উইলিয়ামস। তার সঙ্গে উইকেটে রয়েছেন অধিনায়ক মাসাকাদজা (১৫*)।
অসহায় চারিঃ
অপুর হাত থেকে ক্যাচ ফসকে বেঁচে গেলেও মিরাজের কাছে ঠিকই ধরা পড়েছেন জিম্বাবুয়ের ওপেনার ব্রায়ান চারি। ব্যক্তিগত দ্বিতীয় ওভারে এসেই চারির স্ট্যাম্প উড়িয়ে দিয়েছেন মিরাজ। সামনে পা নিয়ে ব্লক করতে গিয়েছিলেন, কিন্তু মিরাজের অসাধারণ ডেলিভারিতে বোকা হয়ে সরাসরি বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফিরে গিয়েছেন চারি (৪)।
অপুর ক্যাচ মিসঃ
তৃতীয় দিনের তৃতীয় ওভারে পেসার আবু জায়েদ রাহির বলে ব্রায়ান চারির ক্যাচ ফেলে দিয়েছেন নাজমুল ইসলাম অপু। সপাটে কাট করতে গিয়ে পয়েন্টে থাকা অপুর কাছে উড়ে গিয়েছিল বলটি। একটু বাহিরে ছিল বিধায় ঝাপ দিয়েছিলেন অপু, কিন্তু ক্যাচটি লুফে নিতে পারেননি তিনি।
প্রথম এবং দ্বিতীয় দিনঃ
শনিবার টস জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয় জিম্বাবুয়ের অধিনায়ক হ্যামিল্টন মাসাকাদজা। টেস্টের প্রথম দিন দুই দলই ভগাভাগি করে নিয়েছিল। জিম্বাবুয়ে ২৩৫ রান করে শেষ করেছিল প্রথম দিন। আর বাংলাদেশ সাজঘরে পাঠাতে পেরেছিল পাঁচ জিম্বাবুয়াইন ব্যাটসম্যানকে।
কিন্তু দ্বিতীয় দিনের সকালের সেশনেই জিম্বাবুয়েকে ২৮২ রানে গুটিয়ে দিয়েছিল বাংলাদেশ।তাইজুল ইসলামের ঘূর্ণির সামনে দাঁড়াতেই পারেনি প্রতিপক্ষের ব্যাটসম্যানরা। ১৪৬ বলে টেস্ট ক্যারিয়ারের চতুর্থ অর্ধশতক হাঁকিয়েছিলেন মুর এবং চাকাবার সাথে গড়েছিলেন ৬০ রানের জুটি। এরপরই তাইজুলের ঘূর্ণির সামনে দিসেহারা হয়ে পড়েন তাঁরা।
একাই ছয় উইকেট নিয়েছেন তাইজুল। প্রথম ইনিংসে জিম্বাবুয়ের হয়ে সর্বোচ্চ ৮৮ রান করেন শন উইলিয়ামস। ৬৩ রানে অপরাজিত ছিলেন পিটার মুর।
জবাবে ব্যাট করতে নেমে জিম্বাবুয়ের বোলারদের তোপের মুখে পড়ে বাংলাদেশের টপ অর্ডার। লাঞ্চের পর ব্যাটিংয়ে নেমে দুই ওভার না খেলতেই চেন্ডাই চাতারার বলে বোল্ড হয়ে ফিরে যান বাঁহাতি ওপেনার ইমরুল (৫)। ব্যাকফুটে গিয়ে নরম হাতে খেলতে গিয়ে ইনসাইড এজ হয়ে অফ স্টেপে এসে বল লাগে এবং উল্লাসে মেতে উঠেন জিম্বাবুয়াইনরা।
এর খানিক পরই উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন লিটন এবং শান্ত। দলের বিপর্যয়ে উইকেটে টিকতে পারেন নি অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ রিয়াদও। ০ রানে ইনসাইড এজে বোল্ড হন এই ডানহাতি ব্যাটসম্যান। এরপর মুশফিক এবং মমিনুল হাল ধরার চেষ্টা করলেও আঘাত হানেন সিকান্দার রাজা।
১১ রানে মমিনুল ফিরলে বড় বিপদের মধ্যে পড়ে বাংলাদেশ। ৩১ রান করা মুশফিকও ফেরেন উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে। মেহেদি মিরাজ এবং আরিফুল হক হাল ধরে খেললেও মিরাজ ২১ রান করে শন উইলিয়ামসকে উইকেট দিয়ে বসেন।
শেষ পর্যন্ত আরিফুল হকের অপরাজিত ৪১ রানের উপর ভর করে মাত্র ১৪৩ রানেই গুটিয়ে যায় বাংলাদেশ। ১৩৯ রানের লিড পায় সফরকারীরা। জিম্বাবুয়ের পক্ষে টেন্ডাই চাটারা এবং সিকান্দার রাজা নেন ৩টি করে উইকেট।
দিনের শেষে ব্যাটিংয়ে নেমেছিলেন সফরকারীরা। ২ ওভার খেলে ১ রানে কোন উইকেট না হারিয়ে দিন শেষ করেছে তাঁরা।
বাংলাদেশ একাদশ-
লিটন কুমার দাস, ইমরুল কায়েস, মমিনুল হক, মুশফিকুর রহিম (উইকেটরক্ষক), মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ (অধিনায়ক), নাজমুল হোসেন শান্ত, আরিফুল হক, মেহেদি হাসান মিরাজ, তাইজুল ইসলাম, নাজমুল ইসলাম অপু, আবু জায়েদ চৌধুরী রাহি।
জিম্বাবুয়ে একাদশ-
হ্যামিল্টন মাসাকাদজা (অধিনায়ক), ব্রায়ান চারি, ক্রেইগ আরভিন, ব্র্যান্ডন টেইলর, শন উইলিয়ামস, সিকান্দার রাজা, পিটার মুর, রেগিস চাকাবভা (উইকেটরক্ষক), ব্র্যান্ডন মাভুটা, ওয়েলিংটন মাসাকাদজা, কাইল জার্ভিস, টেন্ডাই চাতারা।