তাইজুলের ঘূর্ণিতে পথ হারিয়েছে জিম্বাবুয়ে

ছবি: ছবি- বিসিবি

|| ডেস্ক রিপোর্ট ||
জিম্বাবুয়ের স্কোরঃ ২৮২ অলআউট, ১১৭.৩ ওভার
মুর- ৬৩*, উইলিয়ামস ৮৮ ; তাইজুল ইসলাম ৬/১০৮
টাইগার স্পিনার তাইজুল ইসলামের বোলিং তোপে দ্বিতীয় দিনের প্রথম সেশনেই লণ্ডভণ্ড জিম্বাবুয়ের ব্যাটিং লাইন আপ। বাঁহাতি এই স্পিনার একাই তুলে নিয়েছেন ছয়টি উইকেট। যার ফলে জিম্বাবুয়ের প্রথম ইনিংস থেমে যায় ২৮২ রানে। দলের হয়ে ৬৩ রানে অপরাজিত ছিলেন পিটার মুর।
বাংলাদেশ বনাম জিম্বাবুয়ের মধ্যকার টেস্ট দিয়ে দেশের অষ্টম টেস্ট ভেন্যু হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়াম। ঐতিহাসিক ম্যাচটিতে টসে জিতে এদিন ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন জিম্বাবুয়ে অধিনায়ক হ্যামিল্টন মাসাকাদজা।
ব্যাটিংয়ে নেমে প্রথম দিন শেষে পাঁচ উইকেট হারিয়ে ২৩৫ রান সংগ্রহ করেছে সফরকারীরা। রবিবার টেস্টের দ্বিতীয় দিন ব্যাটিংয়ে নেমে দারুণভাবে নিজেদের ধৈর্যের পরীক্ষা দিচ্ছে জিম্বাবুয়ে। রাহি, তাইজুলদের ভালই দেখেশুনে খেলছে মাঠে থাকা জিম্বাবুয়াইন দুই ব্যাটসম্যান পিটার মুর এবং চাখাবা।
১৪৬ বলে টেস্ট ক্যারিয়ারের চতুর্থ অর্ধশতক হাঁকিয়েছিলেন মুর এবং চাকাবার সাথে গড়েছিলেন ৬০ রানের জুটি। ঠিক শেষ সময়ই আঘাত হানেন বাঁহাতি স্পিনার তাইজুল। চাকবাকে শর্টে শান্তর হাতে ক্যাচ বানিয়ে ২৮ রানে ফেরান তিনি।

এরপর আর কোন ব্যাটসম্যান সঙ্গ দিতে পারেন নি মুরকে। ওয়েলিংটন মাসাকাদজা, জার্ভিসদের ফিরিয়েছেন তাইজুল, অপু। জিম্বাবুয়ের হয়ে সর্বোচ্চ ৮৮ রান করেন উইলিয়ামস।
শনিবার প্রথম দিনের শুরুতেই জিম্বাবুয়ে শিবিরে আঘাত হানেন টাইগার স্পিনার তাইজুল ইসলাম। সরাসরি বোল্ড করে ওপেনার ব্রায়ান চারিকে সাজঘরে ফেরান মাত্র ১৩ রানে। ইনিংসের ১১তম ওভারে দলীয় ৩৫ রানে প্রথম উইকেট হারায় জিম্বাবুয়ে।
চারির বিদায়ের পড় ক্রিজে নেমেছিলেন ব্রেন্ডন টেইলর। কিন্তু তাঁকে উইকেটে বেশীক্ষণ টিকতে দেন নি তাইজুল। শর্ট লেগে নাজমুল হোসেন শান্তর দুর্দান্ত এক ক্যাচে মাত্র ৬ রানে ফেরেন তিনিও। টেইলরের বিদায়ে ক্রিজে নামেন শন উইলিয়ামস।
উইলিয়ামসকে সঙ্গে নিয়ে ফিফটি হাঁকিয়ে লাঞ্চ ব্রেকে যায় জিম্বাবুয়ে। কিন্তু লাঞ্চের পর বল করতে নেমেই আঘাত হানেন পেসার আবু জায়েদ রাহি। উইকেটে থিতু হয়ে খেলতে থাকা হ্যামিল্টন মাসাকাদজাকে লেগ বিফরের ফাঁদে ফেলেন ঘরের ছেলে আবু জায়েদ রাহি। ৫২ রান করে বিদায় নেন জিম্বাবুয়ের দলপতি।
মাসাকাদজার বিদায়ের পর অভিষেক টেস্ট খেলতে নামা নাজমুল ইসলাম অপু তাঁর চতুর্থ ওভারেই ক্যারিয়ারের প্রথম টেস্ট উইকেটের দেখা পান। দুর্দান্ত এক ডিলেভারিতে সিকান্দার রাজাকে বোল্ড আউট করে সাজঘরে ফেরত পাঠান তিনি।
৪ উইকেট হারালেও শন উইলিয়ামস এবং পিটার মুর মিলে দলের হাল ধরেন। দুজন মিলে যোগ করেন ৭২ রান। উইলিয়ামস ফিফটি তুলে নিয়ে এগোচ্ছিলেন শতকের দিকে। কিন্তু ব্যক্তিগত ৮৮ রানে মাহমুদুল্লাহ রিয়াদকে উইকেট ছুঁড়ে দেন এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান।
এরপর দিনের শেষ ওভার পর্যন্ত দেখে শুনে পার করেছেন জিম্বাবুয়ের দুই ব্যাটসম্যান পিটার মুর এবং চাখাবা। সফরকারীদের পক্ষে সর্বোচ্চ ৮৮ রান এসেছে শন উইলিয়ামসের ব্যাট থেকে। ৯১ ওভার ব্যাট করে ৫ উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশী বোলারদের কঠিন পরীক্ষা নিয়েছে জিম্বাবুয়ের ব্যাটসম্যানরা।
বাংলাদেশ একাদশ-
লিটন কুমার দাস, ইমরুল কায়েস, মমিনুল হক, মুশফিকুর রহিম (উইকেটরক্ষক), মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ (অধিনায়ক), নাজমুল হোসেন শান্ত, আরিফুল হক, মেহেদি হাসান মিরাজ, তাইজুল ইসলাম, নাজমুল ইসলাম অপু, আবু জায়েদ চৌধুরী রাহি।
জিম্বাবুয়ে একাদশ-
হ্যামিল্টন মাসাকাদজা (অধিনায়ক), ব্রায়ান চারি, ক্রেইগ আরভিন, ব্র্যান্ডন টেইলর, শন উইলিয়ামস, সিকান্দার রাজা, পিটার মুর, রেগিস চাকাবভা (উইকেটরক্ষক), ব্র্যান্ডন মাভুটা, ওয়েলিংটন মাসাকাদজা, কাইল জার্ভিস, টেন্ডাই চাতারা।