আফগানদের বিপক্ষে বাংলাদেশের দুঃস্বপ্নের হার

ছবি:

|| ডেস্ক রিপোর্ট ||
এশিয়া কাপের গ্রুপ পর্বে নিজেদের শেষ ম্যাচে বাংলাদেশকে ১৩৬ রানের ব্যবধানে হারিয়ে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে শেষ চারে জায়গা করে নিয়েছে আফগানিস্তান ক্রিকেট দল।
ম্যাচটিতে আগে ব্যাট করে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৭ উইকেটে ২৫৫ রান করে আফগানিস্তান। জবাবে বাংলাদেশ দল ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতায় মাত্র ১১৯ রানে গুটিয়ে যায়। ফলে বড় ব্যবধানে হারতে হয় বাংলাদেশকে।
মাঝারি লক্ষ্যে খেলতে নেমে ওপেনিংয়ে টাইগারদের হয়ে ব্যাট করেন লিটন কুমার দাস ও নাজমুল হোসেন শান্ত। দলীয় ১৫ রানে ৭ রান করে মুজিব উর রহমানের বলে আউট হয়েছেন অভিষিক্ত শান্ত।
এরপর আফতাব আলমের বলে ৬ রান করা লিটন লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়ে আউট হয়েছেন। তৃতীয় উইকেটে বাংলাদেশ দলের হাল ধরেন সাকিব আল হাসান ও মমিনুল হক। তবে দলীয় ৩৯ রানে ৯ রান করা মমিনুল নাইবের বলে উইকেটরক্ষক শাহজাদকে ক্যাচ দিলে আবারও বিপদে পড়ে বাংলাদেশ।
মমিনুলের বিদায়ের পর সাকিবের সাথে যোগ দেন লঙ্কানদের বিপক্ষে অর্ধশতক হাঁকানো মোহাম্মদ মিথুন। তবে তিনিও বেশিক্ষণ স্থায়ী হতে পারেননি। ২ রান করে আউট হয়েছেন নাইবের বলে। সাকিব-মাহমুদুল্লার ব্যাটে ১৬তম ওভারে দলীয় অর্ধশতকের দেখা পায় বাংলাদেশ।
ইনিংসের ২২ তম ওভারে দুইবার রশিদের লেগ বিফোরের আবেদন নাকোচ করে দেন আম্পায়ার রড টাকার। শেষে রিভিউ নিলেও দেখা যায় বল মাহমুদুল্লাহর প্যাড স্পর্শ করেছে লেগ স্ট্যাম্প বরাবর। ফলে বেঁচে যান মাহমুদুল্লাহ। এরপর নিজের দ্বিতীয় ওভারে এসেই ৩২ রান করা সাকিবকে ফিরিয়েছেন রশিদ খান।

এরপর ২৭ রান করা মাহমুদুল্লাহকে ফিরিয়ে আফগানিস্তানের হয়ে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারের রেকর্ড গড়েন রশিদ। তার উইকেট সংখ্যা এখন ১১২ টি। এর আগে ১১১ উইকেট নিয়ে আফগানদের সবচেয়ে বেশি উইকেটের মালিক ছিলেন মোহাম্মদ নবী।
মিরাজ ৪ রান করে রহমত শাহর বলে আউট হয়েছেন। মাশরাফি উইকেটে এসে ১০ বল মোকাবেলা করলেও রানের খাতা খোলার আগেই ফিরেছেন মোহাম্মদ নবীর বলে। ১ রান করে আবু হায়দার রনি রান আউট ও রুবেল রানের খাতা খোলার আগেই আউট হলে মাত্র ১১৯ রানে অল আউট হয় বাংলাদেশ।
এর আগে, সাকিবের দুর্দান্ত বোলিংয়ে লাগাম ছাড়া হয়নি আফগানদের রানের খাতা। ম্যাচে দশ ওভারে ৪২ রান দিয়ে চার উইকেট শিকার করেছেন সাকিব। তবে হাশমতউল্লাহর ফিফটির পরে রশিদ-নাইবের দুর্দান্ত ফিনিশিংয়ে চ্যালেঞ্জিং সংগ্রহই করেছে আফগানরা।
শুরুতে টসে হেরে ফিল্ডিং করতে নেমে বাংলাদেশকে উড়ন্ত সূচনা এনে দেন অভিষিক্ত পেসার আবু হায়দার রনি। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে ওপেনার ইহসান উল্লাহকে বিদায় করেন তিনি।
মোহাম্মাদ মিথুনের হাতে ৮ রান করে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন এই ডানহাতি ব্যাটসম্যান। এরপরে আবারও রনির শিকার হয়ে বিদায় নেন রহমত শাহ (১০)। রাউন্ড দা উইকেট থেকে ভিতরে আসা ডেলিভারি খেলতে গিয়ে স্ট্যাম্প ভেঙ্গে যায় তার।
এরপরে প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করেন শেহজাদ এবং হাশমতউল্লাহ শহীদী। দলীয় ৭৯ রানে ফিরে গেছেন শেহজাদ (৩৭)। রনির দুর্দান্ত ক্যাচে উইকেট নিয়েছেন সাকিব।
এরপরে হাশমতউল্লাহর সঙ্গে ব্যাটিংয়ে আসেন অধিনায়ক আসগর আফগান। তবে ৮ রান করা আসগরকে ফিরিয়েছেন সাকিব। তবে দেখে শুনে খেলে নিজের ক্যারিয়ারের তৃতীয় ফিফটি পূরন করেছেন হাশমতউল্লাহ।
এদিকে আসা যাওয়ার মিছিলে থিতু হওয়ার চেষ্টায় ব্যর্থ হয়েছেন সামিউল্লাহ শিনওয়ারি। ১৮ রানে তিনিও বোল্ড হয়েছেন সাকিবের বলে। তার কিছুক্ষন পরেই হাশমতউল্লাহকে (৯২ বলে ৫৮ রান) লিটনের ক্যাচে ফিরিয়েছেন রুবেল হোসেন।
৪১ তম ওভারে বল করতে এসে মোহাম্মদ নবী (১০) কে লেগ বিফোরের ফাঁদে ফেলে বিদায় করেছেন সাকিব। ১৬০ রানে ৭ উইকেট হারানো আফগানদের পুনরায় ম্যাচে ফিরিয়েছেন আজ ২০ বছরে পা দেয়া রশিদ খান এবং গুলবাদিন নাইব।
শেষদিকে দ্রুতগতিতে রান তুলেছেন এই দুজন। গড়েছেন ৯৫ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি। 'বার্থডে বয়' রশিদ করেছেন ৩২ বলে আঁটটি চার ও একটি ছক্কায় ৫৭ রান। নাইবের সংগ্রহ ৩৮ বলে পাঁচটি চারে ৪২ রান। শেষমেশ ২৫৫ রানে থামে আফগানরা।
বাংলাদেশের একাদশঃ- লিটন দাস (উইকেটরক্ষক), নাজমুল হোসেন শান্ত, সাকিব আল ??াসান, মমিনুল হক, মোহাম্মাদ মিথুন, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, মোসাদ্দেক হোসেন, মেহেদি হাসান মিরাজ, মাশরাফি বিন মর্তুজা (অধিনায়ক), রুবেল হোসেন, আবু হায়দার রনি।
আফগানিস্তান একাদশঃ- মোহাম্মদ শেহজাদ (উইকেটরক্ষক), ইহসান উল্লাহ, রহমত শাহ, হাশমতউল্লাহ শহীদী, আসগর আফগান (অধিনায়ক), মোহাম্মদ নবী, সামিউল্লাহ শিনওয়ারি, গুলবাদিন নাইব, রশিদ খান, আফতাব আলম, মুজিব উর রহমান।