সাব্বিরের ভুল

ছবি:

শ্রীলংকাঃ ১৫৭/৬ (৪৫ ওভার) ( রোশেন সিলভা ২৩* , দিলরুয়ান পেরেরা ২৯*) আব্দুর রাজ্জাক ৪/৫৯, তাইজুল ইসলাম ২/৫২
টস ভাগ্যঃ
চট্টগ্রাম টেস্টে টস ভাগ্য দীনেশ চান্দিমালের পক্ষে না গেলেও ঢাকা টেস্টে তা পক্ষেই গেছে লঙ্কান অধিনায়কের। আর টসে জিতে ঢাকার উইকেটের কথা বিবেচনা করে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নিতে দেরি করেননি এই লঙ্কান। কারণ মিরপুরের উইকেটে চতুর্থ ইনিংসে ব্যাটিং করার কাজটা সহজ নয়।
রাজ্জাকের প্রত্যাবর্তনঃ
দীর্ঘ চার বছর পর সাদা পোষাকে বাংলাদেশ দলে ফিরেছেন বাঁহাতি স্পিনার আবদুর রাজ্জাক। চট্টগ্রাম টেস্টে খেলা স্পিনার সানজামুল ইসলামের পরিবর্তে আজকের ম্যাচে সুযোগ পেয়েছেন এই বাঁহাতি স্পিনার।
আর সুযোগ পেয়ে সেটাকে কাজে লাগাতে ভুল করেননি এই অভিজ্ঞ স্পিনার। নিজের তৃতীয় ওভারে বোলিংয়ে এসে উইকেটের দেখা পান তিনি। চার বছর পর টেস্ট খেলতে নামা এই স্পিনারকে সামনে এগিয়ে এসে খেলতে গিয়ে স্ট্যাম্পিং হয়ে বিদায় নিয়েছেন দিমুথ করুনারত্নে।
ইতিবাচক শ্রীলংকাঃ
শুরুতে উইকেট হারালেও আগের টেস্টের দুই সেঞ্চুরিয়ানের ব্যাটে ঘুরে দাঁড়িয়েছে লঙ্কানরা। চট্টগ্রাম টেস্টের দুই সেঞ্চুরিয়ান ধনঞ্জয়া ডি সিলভা এবং কুশল মেন্ডিসের ব্যাটিং দেখে মনেই হয়নি শ্রীলংকাকে শুরুতে চাপে ফেলেছিলেন টাইগার স্পিনাররা।

এক কথায় খানিকটা হাত খুলেই খেলেছেন এই দুই ব্যাটসম্যান। মিরাজ,তাইজুলদের স্পিনকে চতুরতার সাথে খেলে দলকে পঞ্চাশ রানের পুঁজিও এনে দিয়েছেন এই দুইজন ব্যাটসম্যান।
তাইজুলের আঘাতঃ
চট্টগ্রাম টেস্টে একাই বল করেছিলেন ৬৭ ওভার। নিয়েছিলেন ৪ উইকেট। চট্টগ্রাম টেস্???ে বল হাতে ছিলেন ছন্দে, আর সেই ছন্দ দিয়েই বোলিং করছেন ঢাকা টেস্টেও। বোলিংয়ে এসে শুরুতে লঙ্কান ব্যাটসম্যানদের বিপদে না ফেলতে পারলেও সময় পার হওয়ার সাথে সাথে উইকেট থেকে সুবিধা নিয়ে উইকেট তুলে নিয়েছেন এই স্পিনার। উইকেটের অতিরিক্ত বাউন্সের কারণে ধনঞ্জয়া ডি সিলভাকে বোকা বানাতে সক্ষম হন তিনি। স্লিপে সাব্বির রহমানের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরার আগে ধনঞ্জয়ার ব্যাট থেকে এসেছিল ১৯ রান।
রাজ্জাকের জোড়া আঘাতঃ
জাতীয় দলে ফিরেই নিজের সামর্থ্যের প্রমান দিলেন রাজ্জাক। ম্যাচের শুরুতেই উইকেট নেয়ার পর দ্বিতীয় স্পেলে বোলিংয়ে এসে জোড়া আঘাত হানেন এই স্পিনার। ধানুস্কা গুনাথিলাকাকে ফেরানোর পর দুর্দান্ত এক ডেলিভারিতে অধিনায়ক দীনেশ চান্দিমালকে ০ রানে বিদায় করেন তিনি।
বাংলাদেশের সেশনঃ
ঢাকা টেস্টের প্রথম সেশনটি বাংলাদেশের পক্ষে গিয়েছে এইটা বললে হয়তো ভুল হবেনা। শুরুতে উইকেট নেয়ার পর ধনঞ্জয়া এবং কুশল সিলভার ব্যাটে ঘুরে দাঁড়ানোর শ্রীলংকাকে একাই ব্যাকফুটে ঠেলে দিয়েছেন স্পিনার আব্দুর রাজ্জাক। হ্যাট্রিকেরও সুযোগ সৃষ্টি করেছিলেন এই বাঁহাতি স্পিনার। লাঞ্চ বিরতিতে জাওয়ার পূর্বে লংকানদের সংগ্রহ ৪ উইকেটে ১০৫ রান।
লাঞ্চের পর টাইগারদের দারুণ শুরুঃ
লাঞ্চের পর ব্যাট করতে নেমে প্রথম বলে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে ইতিবাচক মনোভাব নিয়ে ব্যাটিং করার ইঙ্গিত দেন উইকেটে থিতু হয়ে খেলতে থাকা ব্যাটসম্যান কুশল মেন্ডিস। কিন্তু এরপরের বলেই রাজ্জাকের ঘূর্ণিতে পরাস্ত হন এই ব্যাটসম্যান। দুর্দান্ত আরেকটি ডেলিভারিতে ৬৮ রানে অপরাজিত থাকা কুশল মেন্ডিসকে বিদায় করেন তিনি। এরপরের ওভারে বোলিংয়ে এসে প্রথম বলেই আঘাত হানেন তাইজুল। নতুন ব্যাটসম্যান নিরোশান ডিকওয়েলাকে মাত্র ১ রানে বোল্ড আউট করেন এই স্পিনার।
সাব্বিরের ভুলঃ
স্লিপ পজিশনে এর আগের ম্যাচের ক্যাচ ফেলেছেন টাইগার ফিল্ডাররা। আর এই ম্যাচেও দেখা গেল একই চিত্র। স্লিপে একজন পাকাপোক্ত ফিল্ডারের জন্য সাব্বির রহমানকে একাদশে রাখা হয়েছিল। আর এই সাব্বিরই ক্যাচ ফেললেন স্লিপে। মুস্তাফিজুর রহমানের বলে দিলরুয়ান পেরেরার ক্যাচ ছেড়েছেন এই ডানাহতি ব্যাটসম্যান।
বাংলাদেশ একাদশ-
তামিম ইকবাল, ইমরুল কায়েস, মমিনুল হক, লিটন কুমার দাস (উইকেটরক্ষক), মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ (অধিনায়ক), মুশফিকুর রহিম, সাব্বির রহমান, তাইজুল ইসলাম, মেহেদী হাসান মিরাজ, আব্দুর রাজ্জাক, মুস্তাফিজুর রহমান।
শ্রীলঙ্কা একাদশ-
দিমুথ গুনারত্নে, কুশল মেন্ডিস, ধনঞ্জয়া ডি সিলভা, রোশেন সিলভা, দীনেশ চান্ডিমাল (অধিনায়ক), নিরোশান ডিকওয়েলা, দানুশকা গুনাথিলাকা, দিলরুয়ান পেরেরা, আকিলা ধনঞ্জয়া, রঙ্গনা হেরাথ, সুরঙ্গা লাকমল।