জয়ের দ্বারপ্রান্তে বাংলাদেশ

ছবি: ছবিঃ আইসিসি

|| ডেস্ক রিপোর্ট ||
বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে ওঠার আরেকটি পরীক্ষায় আফগানিস্তানের বিপক্ষে নির্ধারিত ৫০ ওভারে সাত উইকেটে ২৬২ রান করেছে বাংলাদেশ। তামিম ইকবাল, সাকিব আল হাসান ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের ধৈর্যশীল ইনিংস, মুশফিকুর রহিমের দায়িত্বশীল ইনিংস ও শেষদিকে মোসাদ্দেক হোসেনের ক্যামিওতে মন্থর উইকেটেও এমন লড়াকু পুঁজি দাঁড় করিয়েছে বাংলাদেশ। জবাবে ব্যাট করছে আফগানিস্তান।
জয়ের সুবাস পাচ্ছে বাংলাদেশঃ
ব্যক্তিগত মাত্র ২ রানে আফগান অলরাউন্ডার রশিদ খান সাজঘরে ফেরেন মুস্তাফিজুর রহমানের বলে মাশরাফি বিন মর্তুজাকে ক্যাচ দিয়ে। আফগানদের অষ্টম উইকেট পতনের ফলে জয়ের সুবাস পাচ্ছে বাংলাদেশ।
জাদরানকে ফিরিয়ে সাকিবের পাঁচঃ
২৩ রান করা নাজিবুল্লাহ জাদরানকে ফিরিয়ে বিশ্বকাপে প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে পাঁচ উইকেট দখলের কীর্তি গড়েছেন সাকিব। জাদরান সাকিবের বলে মুশফিকের স্টাম্পিংয়ের শিকার হয়েছেন।
লিটন দাসের দুর্দান্ত থ্রোতে সাজঘরে ইকরামঃ
আফগানিস্তানের উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান ইকরাম আলী রান আউট হয়ে সাজঘরে ফিরেছেন। তিনি লিটন দাসের দুর্দান্ত থ্রোতে নন স্ট্রাইকিং প্রান্তে রান আউট হয়েছেন।
সাকিবের চতুর্থ শিকার আসগরঃ
নিজের সপ্তম ওভারে বল করতে এসে দ্বিতীয় বলেই ২০ রান করা আসগর আফগানকে নিজের চতুর্থ শিকার বানিয়েছেন। আফগান সাকিবকে সুইপ শটে উড়িয়ে মারতে গিয়ে সাব ফিল্ডার সাব্বিরের হাতে ক্যাচ দিয়েছেন তিনি সীমানার কাছে।
সাকিবের জোড়া শিকারঃ
সাকিবের বলে শর্ট মিড অনে লিটন দাসের দুর্দান্ত ক্যাচে আউট হয়েছেন ৪৭ রান করা আফগান অধিনায়ক গুলবাদিন নাইব।একই ওভারে মোহাম্মদ নবিকে বোল্ড করেন বাঁহাতি এই স্পিনার।
মোসাদ্দেকের উইকেটঃ

হাশমতউল্লাহ শহীদিকে ফিরিয়েছেন মোসাদ্দেক। ব্যক্তিগত ১১ রানে মুশফিকের স্ট্যাম্পিংয়ের শিকার হয়েছেন শহীদি।
ব্রেক থ্রু এনে দিলেন সাকিবঃ
পাওয়ার প্লেতে আফগানিস্তানের কোনো উইকেট তুলে নিতে পারেনি বাংলাদেশ। ১০ ওভারে ৪৮ রান করে উইকেটশূন্য থাকে আফগানরা। একাদশতম ওভারে বল করতে এসে পঞ্চম বলেই ২৪ রান করা রহমত শাহকে নিজের শিকার বানিয়েছেন সাকিব আল হাসান। শাহ মিড অনে উড়িয়ে মারতে গিয়ে ক্যাচ দিয়েছেন তামিমের হাতে।
সাবধানী শুরু আফগানদেরঃ
বাংলাদেশের দেয়া বড় লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে সাবধানী শুরু করেন দুই আফগান ওপেনার গুলবাদিন নাইব ও রহমত শাহ। শুরু থেকেই মুস্তাফিজুর রহমান ও মাশরাফি বিন মুর্তজাকে দেখে শুনে খেলছেন তাঁরা।
প্রথম ইনিংস বিবরণঃ
আফগানিস্তান স্পিনারদের কথা মাথায় রেখে ওপেনিং জুটিতে পরিবর্তন আনে টসে হেরে ব্যাট করতে নামা বাংলাদেশ। তামিম ইকবাল এবং সৌম্য সরকারের বদলে তামিম এবং লিটন দাসকে ইনিংস উদ্বোধন করতে পাঠায় টিম ম্যানেজমেন্ট।
ডানহাতি-বাঁহাতি কম্বিনেশনে খেলতে নেমে তামিমের সঙ্গে শুরুটা ভালোই করেছিলেন লিটন। তামিম একপ্রান্তে ধীরগতিতে খেললেও হাত খুলে খেলছিলেন লিটন। কিন্তু ইনিংসের পঞ্চম ওভারে মুজিব উর রহমানের বলে অফ সাইডে ড্রাইভ করতে গিয়ে ক্যাচ দিয়ে বসেন লিটন।
শর্ট কভার অঞ্চলে হাসমতউল্লাহ শহীদির হাতে ক্যাচ দিয়ে ১৭ বলে ১৬ রান করে ফেরেন এই উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান। যদিও টিভি রিপ্লেতে দেখা যাচ্ছিলো শহীদির নেওয়া ক্যাচটি মাটি ছুঁয়েছে।
লিটন বিদায় নিলে সাকিব আল হাসানের সঙ্গে জুটি গড়েন তামিম ইকবাল। দুজন মিলে দলকে অর্ধশত রানের জুটি এনে দেন। আগের কয়েক ম্যাচে বড় স্কোর গড়তে না পারলেও এই ম্যাচে দেখেশুনে খেলে বড় ইনিংস খেলার আভাস দিচ্ছিলেন তামিম।
যদিও মোহাম্মদ নবির ঘূর্ণিতে ৩৬ রানের মাথায় বোল্ড হন এই ওপেনার। এরপরের ওভারে সাকিবকে লেগ বিফরের ফাঁদে ফেলেন লেগ স্পিনার রশিদ খান। আম্পায়ার আউট দিলেও রিভিউ নিয়ে বেঁচে যান বিশ্বসেরা এই অলরাউন্ডার।
দলীয় ৮৫ রানে তামিম ইকবাল ফিরে গেলেও মুশফিকুর রহিমকে সঙ্গে নিয়ে জুটি গড়ার পাশাপাশি আরও একটি হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন সাকিব।
চলতি বিশ্বকাপে এটা তাঁর তৃতীয় হাফ সেঞ্চুরি। এছাড়া ওয়েস্ট ইন্ডিজ এবং ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সেঞ্চুরি হাঁকিছিলেন সাকিব। চলমান বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ রান সংগ্রহকারী ব্যাটসম্যান তিনি।
ইনিংসটি খেলার মাঝে বিশ্বকাপে বাংলাদেশের প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে হাজার রান করার মাইলফলক স্পর্শ করেন সাকিব। হাফ সেঞ্চুরি তুলে নিয়ে অবশ্য আর বেশি দূর যেতে পারেননি বাংলাদেশ অলরাউন্ডার। মুজিব উর রহমানের স্পিন ঘূর্ণিতে এলবিডব্লিউর ফাঁদে পড়ে ৫১ রানে বিদায় নেন সাকিব।
লিটন দাস এবং সাকিব আল হাসানকে বিদায় করার পর সৌম্য সরকারকে নিজের তৃতীয় শিকার হিসেবে তুলে নেন মুজিব। টপ অর্ডার ছেড়ে মিডল অর্ডারে খেলতে নামা সৌম্যকে ৩ রানে এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলেন তিনি।
ম্যাচের ২৪ ওভার থেকে ৩৬ ওভারের মধ্যে আফগান বোলারদের দাপটে কোনও বাউন্ডারি হাঁকাতে পারেনি বাংলাদেশ। ৩৭তম ওভারে দওলত জাদরানকে ছক্কা হাঁকিয়ে হাফ সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন মুশফিক।
ইনিংসের ৪১ ওভারে দুই’শ রান পূর্ণ হয় বাংলাদেশের। এরপর ব্যক্তিগত ২৭ রানে নাইবের বলে ফিরেছেন মাহমুদউল্লাহ। নবিকে ক্যাচ দিয়ে ফিরেছেন তিনি। এরপর উইকেটে মুশফিকের সঙ্গে যোগ দেন মোসাদ্দেক।
মন্থর উইকেটেও দাপটের সঙ্গে খেলেন তিনি। মুশফিকের সঙ্গে জুটি গড়েন ৪২ রানের। ইনিংসের ৪৯তম ওভারে ফিরে যান মুশফিক। ফেরার আগে তাঁর ব্যাটে আসে ৮৭ বলে ৮৩ রানের অসাধারণ একটি ইনিংস।
ইনিংসের শেষ বলে নাইবের বলে ফিরেছেন মোসাদ্দেক। ফেরার আগে ২৪ বলে চারটি চারে ৩৫ রান করেন তরুণ এই অলরাউন্ডার।
সংক্ষিপ্ত স্কোরঃ
বাংলাদেশঃ ২৬২/৭ (৫০ ওভার)
(মুশফিক ৮৩, সাকিব ৫১; মুজিব ৩/৩৯)
আফগানিস্তানঃ ১৯১/৮ (৪৪ ওভার)