promotional_ad

বিপিএলের ওরা চার জন

promotional_ad

বাংলাদেশের ক্রিকেটের গতি পথই বদলে দিয়েছে বিপিএল। ক্রিকেটের অনেক রথীমহারথীরাও টাইগারদের উত্থানের রসদ হিসেবে দেখেন বিপিএলকে। কেউ আবার মনে করেন সাকিব-তামিমদের সাহসী ব্যাটিং শিখিয়েছে বাংলাদেশের ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় এই মহাযজ্ঞ।


দর্শক সংখ্যায় জনপ্রিয় ফ্র‍্যাঞ্চাইজি ক্রিকেট লিগের ছোটো তালিকায় বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের জায়গা না হলেও। দর্শক সংখ্যা, বিশ্বজোড়া সম্প্রচার,  বিদেশি ক্রিকেটারদের উপস্থিতি বিচার করলে আইপিএলের পরেই থাকবে বিপিএল।


২০১২ সালে ফিক্সিংয়ের কালো থাবা বাদ দিলে এই ফ্র‍্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্টটি অনেক কিছুই দিয়েছে বাংলাদেশকে। বিপিএলের জন্ম হওয়ার আগে বাংলাদেশে  একটি মানসম্পন্ন ঘরোয়া ক্রিকেট লীগের অভাব ছিল। বিপিএল সেই শূন্যতা পূরণ তো করেছেই সঙ্গে বিসিবির পকেটও ভারি করছে।


বিপিএলের চলতি আসরের খেলা প্রায় শেষের দিকে, একদিন পরেই মাঠে গড়াচ্ছে শেষ চারের খেলা। টুকটাক কিছু বিতর্ক বাদ দিলে, এটিই হতে চলেছে বিপিএলের সবচেয়ে সফল আসর। কারণ, আগের চেয়ে অনেক বিদেশী খেলোয়াড় বেশি অংশগ্রহণ করেছেন এবার।


একারণেই শুধু সফল বলছি না... বিদেশী ক্রিকেটারদের সাথে পাল্লা দিয়ে, অন্য আসরগুলোর চেয়ে এবার দেশি ক্রিকেটারদের পারফরমেন্স চোখে পড়েছে বেশি। অনেক তরুণ ক্রিকেটারই বিদেশীদের কাছ থেকে আলো কেড়ে নিয়েছেন নিজেদের দিকে।


ব্যাটে বলে নিজেদের সেরা পারফরমেন্স ধরে রেখেছেন জাতীয় দলের ক্রিকেটাররাও। সম্ভবত সেরা চার অধিনায়কের দলই বিপিএলের চলতি আসরে শেষ চার নিশ্চিত করেছে। দলীয় পারফরমেন্সের সাথে শেষ চার নিশ্চিত করা অধিনায়করাও নিজেদের পারফরমেন্সে উজ্জ্বল ছিলেন বিপিএলের চলতি আসরে।


ঘুরে আসা যাক, চার অধিনায়কের পারফরমেন্সে...


তামিম ইকবাল (কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স):


দক্ষিণ আফ্রিকা সফরেই ইনজুরির কবলে পড়েছিলেন, টাইগার ড্যাশিং ওপেনার তামিম ইকবাল। সেরে না ওঠায় বিপিএলের চলতি আসরের শুরুর বেশ কিছু ম্যাচ মিস করেছেন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের এই আইকন ক্রিকেটার। ব্যাট হাতে ফিরেই নিজের ব্যাটিং ঝলক দেখিয়েছেন তিনি।



promotional_ad

মাত্র ৮ ম্যাচ খেলে ২৬৫ রান সংগ্রহ করেছেন তামিম। ২ অর্ধশতকে এ রান করেছেন তিনি। ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ অপরাজিত ৬৫ রান। ৩৭.৮৫ গড়ে ১৫৩.৩২  স্ট্রাইক রেটে রান করেছেন এই বাঁহাতি। শুধু ব্যাট হাতেই নয় কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের হয়ে নিজের অধিনায়কত্বের ঝলকও দেখিয়েছেন দেশ সেরা এই ওপেনার।


৮ ম্যাচের মধ্যে ৭ ম্যাচেই কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের অধিনায়কের আর্মব্যান্ড পড়ে খেলেছেন তামিম। এর মধ্যে ৬ ম্যাচেই দুর্দান্ত জয় তুলে নিয়েছে তার দল। অধিনায়কের ব্যাট হাতে মারমুখী শুরু পুরো দলকে অনুপ্রাণিত করবে স্বাভাবিকই।


ক্যারিয়ারের এই পর্যায়ে এসে ধারাবাহিক পারফরমেন্সের রহস্য হিসেবে তামিম বরাবরই বলেন অভিজ্ঞতাই তাকে এতদূর নিয়ে এসেছে। ছোট্টো একটি ঘটনা বলি। গ্রুপ পর্বে নিজেদের শেষ ম্যাচে সিলেট সিক্সার্সের মুখোমুখি হয়েছিল তামিম ইকবালের কুমিল্লা। সেই ম্যাচ না খেললেও, ম্যাচের এক পর্যায়ে টিভি সাক্ষাৎকারে কথা বলতে আসেন তামিম ইকবাল।


ব্যাটিং করছিলেন কুমিল্লার উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যান লিটন দাস। আর বোলিংয়ে সিলেটের পেসার কামরুল ইসলাম রাব্বি। রাব্বির করা একটি বল নো হয়। তামিমকে জিজ্ঞেস করা হয়, ফ্রী হিটে কি হতে পারে? তামিম বলেন, ডট হবে! এবং তাই হয়। এরপর তামিম নিজেই জানিয়েছেন, এটা অনুমান করার শক্তি পেয়েছেন ১২ বছরের অভিজ্ঞতা থেকে। তামিমের অভিজ্ঞতায় বাংলাদেশের ক্রিকেট অনন্য উচ্চতায় চলে যাবে এটাই আশা করেন সবাই।


সাকিব আল হাসান (ঢাকা ডায়নামাইটস):


সাকিব বরাবরই একজন আক্রমণাত্মক অধিনায়ক। বিপিএলের চলতি আসরেও তার অধিনায়কত্বের সেই ধারা দেখা গেছে। একাদশে পরিবর্তন এনে স্কোয়াডে থাকা প্রায় প্রত্যেক ক্রিকেটারকেই খেলিয়েছেন। তাতে দলও সফল হয়েছে। সাকিব নিজেই জানিয়েছিলেন তার দল, কোনো একজনের উপর নির্ভরশীল নয়। প্রতি ম্যাচেই কেউ না কেউ ঠিকই দুর্দান্ত খেলে অন্য দলের সঙ্গে পার্থক্য গড়ে দিয়েছেন।


সাকিব নিজেও ব্যাটে-বলে ছন্দে আছেন বিপিএলের চলতি আসরে। তবে, বল হাতে এবার আলো ছড়িয়েছেন তিনি। শেষ চারের আগ পর্যন্ত ১১ ম্যাচে ১৯ উইকেট নিয়ে টুর্নামেন্টের সর্বাধিক উইকেট শিকারি এই বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার। ইকোনোমিটাও চোখে পড়ার মতো ১২.৯৪। টুর্নামেন্টে শুরুর দিকে  ব্যাট হাতে খুব একটা ফর্মে না থাকলেও শেষের দিকে এসে ব্যাট হাতেও নিজের নামের প্রতি সুবিচার করেছেন তিনি।


১১ ম্যাচে ১৭৬ রান করেছেন এই তারকা। কোনো অর্ধশতক না থাকলেও বেশ কয়েকটি চল্লিশের ঘরের ইনিংস খেলেছেন তিনি। ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ অপরাজিত ৪৭ রান। সাকিব ব্যাটে বলে কতটা দুর্দান্ত ছিলেন তার প্রমাণ দেবে স্কোরকার্ড গুলোই।


মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ (খুলনা টাইটান্স):



বিপিএলের গত আসরেও খুলনা টাইটান্সের অধিনায়ক হিসেবে চমক দেখিয়েছিলেন মাহমুদুল্লাহ। সেবার দুর্দান্ত বোলিংয়ে বেশ কয়েকটি ক্লোজ ম্যাচ জিতিয়েছিলেন এই অলরাউন্ডার। এবার ব্যাটে বলে খুব বেশি ছন্দে না থাকলেও দলের অন্য ক্রিকেটারদের পারফরমেন্স বের করে আনতে তার অনুপ্রেরণার জুড়ি নেই।


বিপিএলের চলতি আসরের প্রায় পুরোটা সময়ই সর্বাধিক উইকেট শিকারির তালিকার উপরের দিকে ছিলেন খুলনা টাইটান্স পেস তারকা আবু জায়েদ রাহী। মারকুটে ব্যাটিংয়ে নজর কেড়েছেন অলরাউন্ডার আরিফুল হক। তাছাড়া, আফিফ হোসেন ধ্রুবর ব্যাট-বলে দুর্দান্ত পারফরমেন্সের মূলে ছিলেন মাহমুদুল্লাহ। এই তরুণদের প্রায় প্রত্যেকেই বিভিন্ন সাক্ষাৎকারে বলেছেন, মাহমুদুল্লাহর স্বাধীনচেতা অধিনায়কত্বের কারণেই তাদের এই দুর্দান্ত পারফরমেন্স।


ব্যাটে-বলে অবশ্য সময়টা খুব একটা খারাপ যায়নি মাহমুদুল্লাহরও। ১১ ম্যাচে ২৯২ রান করে শীর্ষ ৫ রান সংগ্রাহকদের মধ্যে আছেন তিনি। পুরো আসরে ২৯.২০ গড়ে রান করেছেন তিনি। ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ৫৯ রান। বল হাতে ১১ ম্যাচে ৬ উইকেট নিয়েছেন এই ডানহাতি অলরাউন্ডার।


মাশরাফি বিন মর্তুজা (রংপুর রাইডার্স):


বিপিএলের চলতি আসরে ম্যাচের পর ম্যাচ ভালো বোলিং করে চলেছেন মাশরাফি। তবে, তার বোলিং নিয়ে কোনো আলোচনা হচ্ছে না। আলোচনার প্রায় সবটা জুড়েই তার বিস্ময়কর ব্যাটিং। ব্যাটসম্যান মাশরাফি এবার ছাড়িয়ে গেছেন বোলার মাশরাফিকে। এবারের বিপিএলের শুরুতেই ছোটো দুটি ঝড়ো ইনিংস খেলেছিলেন মাশরাফি।


তবে, কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের বিপক্ষে আকস্মিক ভাবে তিন নম্বরে নেমে ৪২ রানের যে ইনিংস খেলেছেন, সেটি তার টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারেরই অন্যতম সেরা। ক্রিস গেইলের সঙ্গে ৪.২ ওভারে ৬০ রানের জুটি গড়েন নড়াইল এক্সপ্রেস। যার মধ্যে তারই অবদান ১৭ বলে ৪২ রান! যতক্ষণ ক্রিজে ছিলেন, টি২০ ক্রিকেটের ফেরিওয়ালা ক্রিস গেইলকে দর্শক বানিয়ে রেখেছিলেন।


এরপর, সিলেট সিক্সার্সের বিপক্ষেও দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে হাতের মুঠো থেকে বেড়িয়ে যাওয়া ম্যাচ জিতিয়েছেন মাত্র ১০ বলে ১৭ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলে। পুরো টুর্নামেন্টে ১১ ম্যাচে ১৫২.৩২ স্ট্রাইক রেটে ১৩১ রান করেছেন ম্যাশ। তাছাড়া বল হাতে ১৩ উইকেট নিয়ে তরুণ, রাহী-রনিদের সঙ্গে তিনিও ছুটছেন দুর্দান্ত গতিতে।



আরো খবর

সম্পাদক এবং প্রকাশক: মোঃ কামাল হোসেন

বাংলাদেশের ক্রিকেট জগতে এক অপার আস্থার নাম ক্রিকফ্রেঞ্জি। সুদীর্ঘ ১০ বছর ধরে ক্রিকেট বিষয়ক সকল সংবাদ পরম দায়িত্ববোধের সঙ্গে প্রকাশ করে আসছে ক্রিকফ্রেঞ্জি। প্রথমে শুধুমাত্র সংবাদ দিয়ে শুরু করলেও বর্তমানে ক্রিকফ্রেঞ্জি একটি পরিপূর্ণ অনলাইন মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম।

মেইল: cricfrenzy@gmail.com
ফোন: +880 1305-271894
ঠিকানা: ২য় তলা , হাউজ ১৮, রোড-২
মোহাম্মাদিয়া হাউজিং সোসাইটি,
মোহাম্মাদপুর, ঢাকা
নিয়োগ ও বিজ্ঞপ্তি
বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ
নিয়ম ও শর্তাবলী
নীতিমালা
© ২০১৪-২০২৪ ক্রিকফ্রেঞ্জি । সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
footer ball