ক্রিকেটই ছেড়ে দিয়েছিলেন রাহী

ছবি:

বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগের (বিপিএল) পঞ্চম আসরের অন্যতম সেরা বোলার ছিলেন খুলনা টাইটান্সের পেসার আবু জায়েদ রাহী। মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের অধীনে দল শিরোপা জিততে না পারলেও ব্যক্তিগত পারফর্মেন্স দিয়ে সকলের নজর কেড়েছেন রাহী।
খুলনার জার্সিতে ১২ ম্যাচ খেলে নিয়েছেন ১৮ উইকেট। ছিলেন টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উইকেট শিকারী বোলার। নিজের প্রথম দুই আসরে বিপিএলে খেলেছেন ঢাকা এবং রংপুরের জার্সিতে।
দুবারই সাকিব আল হাসানের অধিনায়কত্বে খেলেছেন রাহী। প্রথম দুই বার বল হাতে সফল হলেও আলোচনায় আসেননি তেমন। এবার মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের অধীনে খেলে সব আলো কেড়ে নিয়েছেন এই ডানহাতি পেসার।
তবে এবার তার দল ফাইনাল খেলতে পারেনি বলে খানিকটা হতাশও তিনি। জানিয়েছেন দল যদি ফাইনালে খেলতো তাহলে আরও উইকেট নিতে পারতেন। পাশাপাশি প্রথম দুই আসরের চেয়ে এবারের আসরকেই বেশী প্রাধান্য দিচ্ছেন রাহী।
বিপিএলের পর জাতীয় দলের ৩২ জনের ক্যাম্পেও ডাক পেয়েছেন তিনি। ডাক পেয়ে দারুণ উচ্ছ্বসিত এই পেসার। চলতি মাসের ২৭ তারিখ থেকে শুরু হতে যাওয়া এই ক্যাম্পে যোগ দেয়ার আগে কথা বলেছেন বাংলা দৈনিক মানবজমিনের সাথে। সেখানে তিনি বলেন,

'এ নিয়ে তিনটি বিপিএলে আমি খেলেছি। প্রথম আসরে রংপুরের হয়ে তো খেলার সুযোগ হয়নি। এরপর দ্বিতীয় বছর আমি ঢাকাতে খেলি। আসলে ঢাকা আমাকে নেয়ার পর টেনে বল করেছিলাম।
সাকিব ও সুজন ভাই আমার বোলিং দেখে ম্যাচ খেলায়। মোটামুটি ভালো হয়েছে সেবার। এবারতো খুলনাতে দারুণ করতে পেরেছি। যদি ফাইনাল পর্যন্ত খেলতে পারতাম তাহলে হয়তো আরো কিছু উইকেট বেশি পেতাম।'
২০১০ সালে ঘরোয়া ক্রিকেটে যাত্রা শুরু রাহীর। ছিলেন ২০১১, ১২ এবং ১৩ সালের সেরা উইকেট শিকারী বোলার। দুর্দান্ত বোলিং করে নজরেও এসেছিলেন নির্বাচকদের। কিন্তু তারপরও জাতীয় দলের দরজা খোলেনি তার জন্য।
জাতীয় দলে সুযোগ না পেয়ে হতাশ হয়ে ক্রিকেটও ছেড়ে দিয়েছিলেন তিনি। ক্রিকেট ছেড়ে পাড়ি জমান যুক্তরাষ্ট্রে। কিন্তু সেখানে মন না টেকায় আবারো দেশে ফিরে আসেন। এরপর কয়েকদিনের বিরতি দিয়ে আবারো মাঠে নেমে পড়েন রাহী। এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন,
'২০১০ সালে আমি জাতীয় লীগে (এনসিএল) খেলা শুরু করি। এরপর তিন বছর টানা সেরা উইকেট শিকারি ছিলাম পেস বোলারদের মধ্যে। কিন্তু হঠাৎ করেই আমাকে হতাশা ঘিরে ধরে। মনে হচ্ছিল ক্রিকেট খেলে আর কিছুই হবে না। ২০১৩ সালে আমি ইউএসএতে চলে যাই, ভাবছিলাম আর ক্রিকেটই খেলবো না।
বড় কোনো সুযোগই আসছিল না, মনে হচ্ছে আর কোনো দিন সুযোগ পাবো না তাই বিদেশ চলে যাই। কিন্তু সেখানে মন টিকছিল না, তখন আমার কোচ ইমন ভাই বলেন, মন না টিকলে চলে আয়।
ভালই তো খেলছিলি, এখনতো আমাদের সিলেট টিমেই পেসার নাই তুই চলে আয়। আমি তখন চলে আসি। এসেই সে বছর আমি পেসারদের মধ্যে সেরা উইকেট শিকারি হই। এরপর তো গেল দুটি বছর ধরে খেলে যাচ্ছি। বিপিএলে এবার তো ভালো করছি।'
শ্রীলংকা সিরিজ এবং ত্রিদেশীয় সিরিজের জন্য ঘোষিত ৩২ দলের প্রাথমিক স্কোয়াডে ডাক পেলেও এখন পর্যন্ত একবারও মূল স্কোয়াডে ডাক পাননি রাহী। তবে তিনি আশাবাদী শীঘ্রই জাতীয় দলের দরজা খুলে যাবে তার জন্য। রাহীর ভাষ্যমতে,
'আমি আশাবাদী, সামনে হয়তো জাতীয় দলে ডাক পাবো। সেই ভাবে খেলে যাচ্ছি আমি। আপনি দেখেন ভারত দলে অনেকের বলে কিন্তু খুব গতি নেই। তারপরও তারা কত দারুণ বল করছে। আমি সেভাবে খেলে যেতে চাই।'