কোহলিই পাল্টে দিয়েছেন তামিমকে

ছবি: ছবি- সংগৃহীত

|| ডেস্ক রিপোর্ট ||
একটা সময় ফিটনেস নিয়ে খুব একটা ভাবতেন না বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের খেলোয়াড়েরা। ধারাবাহিকভাবে ভালো খেলার জন্য যে ফিটনেস একটি অপরিহার্য বিষয় এটি ধারণা ছিল না অনেকেরই। ব্যতিক্রম নন ওপেনার তামিম ইকবালও। ফিটনেসের বদলে রান করার প্রতি বেশি গুরুত্ব দিতেন তিনি।
তবে এই মানসিকতায় এরই মধ্যে পরিবর্তন এনেছেন তামিম। খেলায় শারীরিক সামর্থ্য যে অনেক বড় প্রভাবক সেটি বুঝতে পেরেছেন তিনি। এখন প্রশ্ন হলো হঠাৎ করে এই বোধোদয় কি করে হলো তামিমের? টাইগার ওপেনার নিজেই দিয়েছেন এর উত্তর।
মূলত ভারতের অধিনায়ক বিরাট কোহলিকে দেখেই অনুপ্রাণিত হয়েছেন তামিম। দুই-তিন বছর আগে কোহলির অনুশীলন এবং জিম দেখে নিজেদের পার্থক্যটি উপলব্ধি করতে পেরেছেন তামিম। এমনকি একটা সময় কোহলিকে দেখে নাকি লজ্জাও লাগতো তাঁর।

ক্রিকেটের জনপ্রিয় ওয়েবসাইট ইএসপিএনক্রিকইনফোতে সাবেক ভারতীয় ক্রিকেটার ও ধারাভাষ্যকার সঞ্জয় মাঞ্জরেকারের সঙ্গে নানা বিষয় নিয়ে কথা বলেন তামিম। সেই ভিডিও সাক্ষাৎকারে ফিটনেসের বিষয়টিও খোলাসা করেন তিনি, টেনে আনেন কোহলি প্রসঙ্গ।
তামিম বলেন, 'আমার এটা বলতে কোনো লজ্জাই নেই যে, আমার মনে হয় প্রকাশ করা উচিত, ২-৩ বছর আগে যখন আমি বিরাট কোহলিকে দেখেছি জিমে কাজ করতে, রানিং ও অন্য সবকিছু, নিজেকে নিয়ে লজ্জা লাগত আমার। সত্যিই নিজেকে নিয়ে লজ্জা লাগত। মনে হতো, ‘এই ছেলেটি, সম্ভবত আমার বয়সীই, এই ধরনের কাজ করছে, এত ট্রেনিং করছে ও সাফল্য পাচ্ছে, আমি হয়তো তার অর্ধেকও করছি না। তার পর্যায়ে যেতে না পারি, অন্তত তার পথ তো অনুসরণ করার চেষ্টা করতে পারি। হয়তো তার ৫০ ভাগ, ৩০-৪০ বা ৬০ ভাগ, যেটাই হোক… (হতে পারব)।'
শুধু কোহলিই নন, তামিম অনুপ্রেরণা পান গোটা ভারত দলটিকে দেখলেই। ফিটনেস নিয়ে তারা যেভাবে কাজ করে সেটি নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয় বলে মনে করেন তিনি। তাঁর ভাষ্যমতে, 'সঞ্জয় ভাই, এটা আমাকে বলতেই হবে। ভারতীয় একজন ধারাভাষ্যকার ও সাবেক ভারতীয় ক্রিকেটারের সঙ্গে কথা বলছি বলেই নয়, আমাকে এটা বলতেই হবে, ভারত যেহেতু আমাদের প্রতিবেশী দেশ, আমরা অনেক কিছুই অনুসরণ করি। ভারতীয় দল যখন ফিটনেসের দিক থেকে বদলাতে শুরু করল, সেটিই বাংলাদেশকে সবচেয়ে বেশি প্রভাবিত করেছে।'
ফিটনেসের প্রতি গুরুত্ব দেয়ার পর থেকে নিজের মধ্যে আমূল পরিবর্তন লক্ষ্য করতে পারেন তামিম। মাঞ্জরেকারের সঙ্গে আলাপকালে নিজেই জানালেন এমনটা। বললেন, 'এখন যদি আপনি ২০১৫ সালের আমাকে দেখেন, সেখান থেকে আমার ওজন ৯ কেজি কমেছে। ওই সময়টায় ফিটনেস নিয়ে অনেক খাটতে শুরু করেছি আমি। কৃতিত্ব দিতে হবে আমাদের ট্রেনারকেও।'
তবে কোহলির প্রসঙ্গ টানলেও তামিম ভুলে যাননি বন্ধু এবং সতীর্থ মুশফিকুর রহিমের কথা। বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সবচাইতে পরিশ্রমী ক্রিকেটার হিসেবেে সুখ্যাতি আছে মুশফিকের। টাইগার উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যানকে উদাহরণ হিসেবে তুলে ধরতে তাই কার্পণ্য করেননি তামিম।
বন্ধু মুশফিকের প্রসঙ্গে তামিমের বক্তব্য, 'আমাদের দলেও দারুণ একজন উদাহরণ আছে, মুশফিকুর রহিম। আমি তার ক্রিকেটীয় দিকে যাব না, ফিটনেসের দিক থেকে সে নিজেকে যেভাবে সামলায়, সেটা বলছি। সে এমন একজন, যাকে অনুসরণ করা যায়। হ্যাঁ, বিরাট কোহলি অবশ্যই উদাহরণ সৃষ্টি করেছে। মুশফিকও বাংলাদেশ দলে অনেক তরুণ ক্রিকেটারের আদর্শ হতে পারে।'