আরেকটি ফাইনালের অপেক্ষায় বাংলাদেশ

ছবি: বাংলাদেশ দল

|| ডেস্ক রিপোর্ট ||
এবারের এশিয়া কাপে খুব বেশি সুবিধা করতে পারছে না সরফরাজ আহমেদের পাকিস্তান। সুপার ফোরে নিজেদের গত ম্যাচেই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারতের বিপক্ষে দ্বিতীয়বারের মত পরাজিত হতে হয়েছে তাদের।
আর ৯ উইকেটের সেই পরাজয়ে টুর্নামেন্টের ফাইনালে খেলার স্বপ্ন কিছুটা ফিকে হয়ে গিয়েছে সরফরাজ বাহিনীর। লজ্জাজনক এই হারে স্বাভাবিকভাবেই যথেষ্ট কোণঠাসা অবস্থার মধ্যে আছে পাকিস্তানিরা। ফাইনালে পা রাখতে আগামীকাল আবুধাবির মাঠে বাংলাদেশের বিপক্ষে ম্যাচটিতে জয় ছাড়া বিকল্প নেই দলটির।
একই অবস্থা অবশ্য বাংলাদেশের ক্ষেত্রেও। ভারতের বিপক্ষে এই রাউন্ডের প্রথম ম্যাচটিতে ৭ উইকেটে পরাজিত হওয়ার পর দ্বিতীয় ম্যাচে আফগানিস্তানকে ৩ রানে হারিয়ে আশা বাঁচিয়ে রেখেছে তারা।আগামীকাল পাকিস্তানকে হারাতে পারলেই টানা দ্বিতীয়বারের মত এশিয়া কাপের ফাইনাল খেলার গৌরব অর্জন করবে মাশরাফি বিন মর্তুজার দল।
তবে কাজটি যে খুব একটা সহজ হবে না টাইগারদের পক্ষে তা বলাই বাহুল্য। কেননা সরফরাজদের দলটিতে রয়েছে ফখর জামান, হাসান আলি, মোহাম্মদ আমিরদের মতো বেশ কিছু তারকা ক্রিকেটার। নিজেদের দিনে যারা যেকোনো প্রতিপক্ষকে নাস্তানাবুদ করতে সক্ষম।
তার ওপরে ইনজুরি ইস্যুতে বেশ নাজেহাল অবস্থা টাইগারদের। দলের অভিজ্ঞ ওপেনার তামিম ইকবালের অনুপস্থিতিও ভোগাবে তাদের। কারণ আফগানদের বিপক্ষে গত ম্যাচেও ভাল করতে পারেনি বাংলাদেশের উদ্বোধনী জুটি।
সেই ম্যাচে লিটন কুমার দাস এবং নাজমুল হাসান শান্ত মাত্র ১৬ রানের উদ্বোধনী জুটি গড়েছিলেন। লিটন শেষ পর্যন্ত ৪১ রান করলেও শান্ত ৬ রান কর আউট হয়েছিলেন। ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছিলেন মোহাম্মদ মিথুনও। মাত্র ১ রান করে সাজঘরে ফিরেছিলেন তিনি।
মিডল অর্ডারে ইমরুল কায়েস এবং মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ জোড়া অর্ধশতক না হাঁকালে সেই ম্যাচে হয়ত পরাজয় নিয়েই মাঠ ছাড়তে হতো টাইগারদের। সুতরাং ওপেনিংয়ে স্থিতিশীলতার দিক থেকে অনেকটাই দুশ্চিন্তায় থাকবে বাংলাদেশ।

তবে আশার কথা হল ব্যাট হাতে নিজের প্রথম ম্যাচেই নিজেকে প্রমাণ করেছেন ইমরুল কায়েস। সাধারণত ওপেনিংয়ে খেললেও আফগানদের বিপক্ষে মিডল অর্ডারে নেমে ৭২ রানের অপরাজিত একটি ইনিংস খেলেছিলেন সদ্য আরব আমিরাতে যাওয়া ইমরুল। তবে আজ তাঁকে ওপেনিংয়ে দেখা যেতে পারে বলে ধারণা করা যাচ্ছে।
পিচ এবং কন্ডিশন-
আবুধাবির শেখ জায়েদ স্টেডিয়ামটি বরাবরই যথেষ্ট ব্যাটিং সহায়ক। পরিসংখ্যান বলছে এই উইকেটে প্রথমে ব্যাটিং করতে নামা দলের গড় রান ২৫০ এর ওপরে। যদিও গত ম্যাচে এই মাঠেই আফগানদের বিপক্ষে ২৪৯ রান সংগ্রহ করেছিল বাংলাদেশ।
এদিকে আবহাওয়া রিপোর্ট বলছে আগামীকাল আবুধাবির আদ্রতা থাকবে ৪৮ শতাংশ এবং তাপমাত্রা থাকবে ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ফলে বলা যায় এই গরম আবহাওয়ার মাঝে আরেকটি কঠিন পরীক্ষার মুখেই পড়তে হচ্ছে মাশরাফির দলকে।
মুখোমুখি- এখন পর্যন্ত মোট ৩৫টি ওয়ানডে ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছে পাকিস্তান এবং বাংলাদেশ। যেখানে মাত্র ৪টিতে জয়ের দেখা পেয়েছে বাংলাদেশ। অপরদিকে ওয়ানডে ফরম্যাটের এশিয়া কাপে ১১টি ম্যাচের একটিতেও জয় পায়নি টাইগাররা। সুতরাং সেদিক থেকে অনেকটাই এগিয়ে থাকছে পাকিস্তানিরা।
স্পটলাইটে থাকবেন যারা-
সাকিব আল হাসান (বাংলাদেশ)- আফগানিস্তানের বিপক্ষে শুন্য রানে দুর্ভাগ্যজনকভাবে আউট হয়েছিলেন টাইগার অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। সুতরাং আগামীকালের ম্যাচটিতে নিজেকে প্রমাণের তাগিদেই মাঠে নামবেন তিনি।
তার ওপর পরিসংখ্যান বলছে পাকিস্তানের বিপক্ষে ব্যাট হাতে অনেকটাই সফল সাকিব। এখন পর্যন্ত ১৫টি ওয়ানডেতে ৪০.৭৫ গড়ে মোট ৪৮৯ রান সংগ্রহ করেছেন সাকিব। যেখানে রয়েছে ১টি শতক এবং ৩টি অর্ধশতক।
বল হাতেও পাকিস্তানের বিপক্ষে সফলতার পরিচয় দিয়েছেন সাকিব। ১৫টি ওয়ানডেতে তাঁর শিকার ২১টি উইকেট। যেখানে তাঁর ইকোনমি রেট ৪.৪৯। সুতরাং আগামীকালের ম্যাচেও স্পটলাইটে থাকছেন তিনি। এবারের এশিয়া কাপে ৪ ম্যাচে ৭ উইকেট শিকার করেছেন তিনি।
শোয়েব মালিক (পাকিস্তান)-ভারতের বিপক্ষে গত ম্যাচে ৭৮ রানের দারুণ একটি ইনিংস খেলেছিলেন অলরাউন্ডার শোয়েব মালিক। দলের বিপর্যয়ের মুখে তাঁর সেই ইনিংসটিই ২৩৭ রানের সম্মানজনক একটি স্কোর গড়তে সাহায্য করেছিল পাকিস্তানকে। বল হাতে যদিও এই টুর্নামেন্টে কোন উইকেট পাননি তিনি।
এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের বিপক্ষে ব্যাট হাতে ২৫.০৮ গড়ে মোট ৩০১ রান সংগ্রহ করেছেন মালিক। যেখানে ১টি অর্ধশতক রয়েছে তাঁর। এছাড়াও বল হাতে ১৮ম্যাচে ??াত্র ৩.৭৬ ইকোনমি রেটে তাঁর শিকার ১৫টি উইকেট।
বাংলাদেশ স্কোয়াড-
লিটন দাস, সাকিব আল হাসান, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, মুশফিকুর রহিম, আরিফুল হক, মোহাম্মদ মিথুন, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত, নাজমুল হোসেন শান্ত, মাশরাফি বিন মুর্তজা (অধিনায়ক), মমিনুল হক, মেহেদী হাসান মিরাজ, আবু হায়দার রনি, রুবেল হোসেন, মুস্তাফিজুর রহমান, নাজমুল ইসলাম অপু, সৌম্য সরকার, ইমরুল কায়েস।
পাকিস্তান স্কোয়াড-
ফখর জামান, ইমাম-উল-হক, শান মাসুদ, বাবর আজম, শোয়েব মালিক, সরফরাজ আহমেদ (অধিনায়ক, উইকেটরক্ষক), হারিস সোহেল, আসিফ আলী, মোহাম্মদ নওয়াজ, ফাহিম আশরাফ, শাদব খান, মোহাম্মদ আমির, হাসান আলী, জুনায়েদ খান, উসমান খান, শাহীন শাহ আফ্রিদি।