promotional_ad

বাংলাদেশের স্বপ্ন যাত্রার ৩৪ বছর

ছবি- সংগৃহীত
promotional_ad

|| ক্রিকফ্রেঞ্জি করেসপন্ডেন্ট ||


১৯৮৬ সালের ৩১ মার্চ দিনটি নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের ক্রিকেটে আজীবন স্মরণীয় হয়ে থাকবে। কারণ এই দিনেই প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলার গৌরব অর্জন করে বাংলাদেশ। সেই ম্যাচে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ ছিল পরাশক্তি পাকিস্তান। 


অভিজ্ঞতায় পাকিস্তানের চেয়ে যোজন দূরত্বে থাকা বাংলাদেশ অবশ্য মোটেই সুবিধা করতে পারেনি। শ্রীলঙ্কার মোরাতুয়ার টাইরন ফার্নান্দো স্টেডিয়ামে সেদিন টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে ইমরান খান, ওয়াসিম আকরামদের তোপে মাত্র ৯৪ রানেই গুটিয়ে যায় গাজি আশরাফ হোসেন লিপুর বাংলাদেশ।


এই স্বল্প পুঁজি নিয়েও লড়াইটি মন্দ করেনি বাংলাদেশ। অন্তত প্রথম আন্তর্জাতিক ম্যাচ বিবেচনায় তো বটেই। ৯৫ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমেও পাকিস্তানকে খেলতে হয় ৩২.১ ওভার। একই সঙ্গে তারা হারায় ৩টি উইকেট। বাংলাদেশের হয়ে দুর্দান্ত বোলিং করেন ৩৬ বছর বয়সে অভিষেক হওয়া ডানহাতি পেসার জাহাঙ্গীর শাহ বাদশা। ৯ ওভারে মাত্র ২৩ রান খরচায় ২ উইকেট শিকার করেন তিনি। 


ঐতিহাসিক সেই ম্যাচের একাদশে ছিলেন দুই সহোদর মিনহাজুল আবেদিন নান্নু এবং নুরুল আবেদিন। ক্রিকফ্রেঞ্জির সঙ্গে আলাপচারিতায় প্রথম আন্তর্জাতিক ম্যাচের অনুভূতির কথা উঠে এসেছে তাদের কণ্ঠে। ওপেনার নুরুল আবেদিন জানান প্রথম ম্যাচ হলেও তেমন চাপ অনুভব করেননি তিনি।



promotional_ad

নুরুল বলেন, 'প্রকৃতপক্ষে আমরা যাওয়ার সময় চাপ অনুভব করিনি। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে গেলাম একদিন  বা দুইদিন আগে তো তখন পাশে পাকিস্তান দল বসা, শ্রীলঙ্কা দল বসা। তখন দেখেন আমাদের বয়সই কেমন, এদের দেখে একটু নড়েচড়ে উঠলাম। কিন্তু খেলার মাঠে অন্যকিছু কাজ করেনি। অনুভূতিটা অন্যরকম, জাতীয় দলের প্রথম ম্যাচ এত বড় খেলোয়াড়দের সাথে খেলা সত্যি রোমাঞ্চকর।'


একই সঙ্গে পাকিস্তানকে কাঁপিয়ে দেয়া বাদশাহর প্রশংসাও করেন নুরুল। তাঁর ভাষায়, 'বাদশা ভাই আসলেই ওই ম্যাচে অনেক ভালো বল করেছেন। উনিতো অভিজ্ঞ ছিলেন, আমাদেরতো তখন মাত্র শুরু। বাদশা ভাইয়ের তখন সিনিয়র লেভেলে খেলার অনেক অভিজ্ঞতা। তো ওটা উনি ধরে রেখেছেন, বাংলাদেশের প্রথম আন্তর্জাতিক ওয়ানডে অথচ তাকে দেখে বোঝার উপায় ছিলনা সেটা। স্বাভাবিকভাবে যেমন খেলে তেমনই খেলেছে। একটা নরমাল ক্রিকেট ম্যাচ যেমন হয় তেমন খেলেছে, কোন চাপ নেই কিছু নেই।'


নুরুল আবেদিনের এক বছরের ছোট ভাই নান্নু স্বাভাবিকভাবেই ছিলেন দারুণ রোমাঞ্চিত। পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কার মতো দলের বিপক্ষে এশিয়া কাপ খেলা বাংলাদেশের জন্য অনেক বড় ব্যাপার ছিল সেসময়। আর সেই রোমাঞ্চের আঁচ এসে লেগেছিল আজকের প্রধান নির্বাচকের গায়ে। 


ক্রিকফ্রেঞ্জিকে নান্নু বলেন, 'প্রথম ওয়ানডে অনেক বেশি উত্তেজনা কাজ করছিল কারণ এশিয়া কাপ ক্রিকেট এবং শ্রীলঙ্কা, পাকিস্তানের সব বিশ্ব তারকারা ছিল। তাদের সাথে খেলার জন্য আমরা তখনো সেভাবে প্রস্তুত ছিলাম না, শুধু ঘরোয়া খেলতাম, অত সুযোগ সুবিধাও ছিলনা। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলতে গিয়েছি তো এটা আমাদের অনেক বড় অর্জন ছিল।'


আজকের তামিম ইকবাল, মুশফিকুর রহিমরা যে পরিমাণ সুযোগ সুবিধা পেয়ে থাকেন তার ছিটেফোঁটাও ছিল না ৩৪ বছর আগের সেই ম্যাচটিতে। বোর্ড থেকে বাড়তি কোনো সরঞ্জামও সরবরাহ করা হতো না তেমন। ব্যাট, প্যাড থেকে শুরু করে চেস্ট গার্ড পর্যন্ত ক্রিকেটারদের নিজেদের কিনতে হতো খেলার আগে। এরপরেও দেশের হয়ে খেলাকেই বড় করে দেখছেন নান্নু, 



জাতীয় দলের সাবেক এই অধিনায়ক বলেন, 'আমাদের সরঞ্জামও সেভাবে ছিলনা। আমরা শ্রীলঙ্কাতে গিয়ে চেস্ট গার্ড, গার্ড, আর্ম গার্ড সব কিনেছি খেলার আগে। এরকম অনেক মনে রাখার মত জিনিস আছে। সবকিছুর উপরে দেশকে প্রতিনিধিত্ব করেছে দেশের প্রথম আন্তর্জাতিক ম্যাচে এটা বিরাট ব্যাপার।' 


পাকিস্তানের কিংবদন্তি ক্রিকেটার ইমরান খান, ওয়াসিম আকরামদের সঙ্গে খেলতে পারাও অনেক বড় ব্যাপার বলে মনে করেন নান্নু। তাঁর ভাষায়, 'ইমরান খান, ওয়াসিম আকরাম, সেলিম মালিক, জাভেদ মিয়াদাদ, আব্দুল কাদির সবার সাথে খেলা একটা বিরাট অর্জন। তো এটা আমদের সবার কাছেই সবসময় মনে থাকবে। এসকল খেলোয়াড়ের সান্নিধ্যে প্রথম যাওয়া, অভিজ্ঞতা ভাগাভাগি করা এটা আমাদের কাছে বিরাট ব্যাপার ছিল।'  


দুই ভাই মিলে দেশকে প্রতিনিধিত্ব করা যেকোনো পরিবারের জন্য বিশেষ কিছু। আর সেই রোমাঞ্চকর মুহূর্তের স্বাদ পেয়েছেন নান্নু এবং নুরুল। গর্বিত নান্নু তাই বলেন, 'এটা আমাদের পরিবারের জন্য অনেক বড় কিছু যে দুই ভাই একসাথে দেশকে প্রতিনিধিত্ব করেছি। দেশের প্রথম আন্তর্জাতিক ম্যাচেই মাঠে নামা একসাথে এটা অন্যরকম কিছু। আমরা খুব রোমাঞ্চিত ছিলাম যে দুই ভাই একসাথে খেলবো। একাদশটা যখন ঘোষণা হয় তখনকার অনুভূতি ভাষায় প্রকাশ করার মত ছিল না।' 



আরো খবর

সম্পাদক এবং প্রকাশক: মোঃ কামাল হোসেন

বাংলাদেশের ক্রিকেট জগতে এক অপার আস্থার নাম ক্রিকফ্রেঞ্জি। সুদীর্ঘ ১০ বছর ধরে ক্রিকেট বিষয়ক সকল সংবাদ পরম দায়িত্ববোধের সঙ্গে প্রকাশ করে আসছে ক্রিকফ্রেঞ্জি। প্রথমে শুধুমাত্র সংবাদ দিয়ে শুরু করলেও বর্তমানে ক্রিকফ্রেঞ্জি একটি পরিপূর্ণ অনলাইন মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম।

মেইল: cricfrenzy@gmail.com
ফোন: +880 1305-271894
ঠিকানা: ২য় তলা , হাউজ ১৮, রোড-২
মোহাম্মাদিয়া হাউজিং সোসাইটি,
মোহাম্মাদপুর, ঢাকা
নিয়োগ ও বিজ্ঞপ্তি
বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ
নিয়ম ও শর্তাবলী
নীতিমালা
© ২০১৪-২০২৪ ক্রিকফ্রেঞ্জি । সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
footer ball