নাঈমের ছয় উইকেট, জয়ের সুবাস পাচ্ছে পূর্বাঞ্চল

ছবি: ছবি- ওয়ালটন

|| ডেস্ক রিপোর্ট ||
সংক্ষিপ্ত স্কোরঃ
মধ্যাঞ্চল দ্বিতীয় ইনিংসঃ ১৩২/৭ (৪০ ওভার)
(মোশাররফ ১১*, আবু হায়দার ৪** ; নাঈম ৬/৪৬)
পূর্বাঞ্চল দ্বিতীয় ইনিংসঃ ২৫৪/৩ ডিঃ (৪৩ ওভার)
(ইয়াসির ১০১*, জাকির ১৫*; তাসকিন ১/৩৭)
মধ্যাঞ্চল প্রথম ইনিংসঃ ২২৪ অলআউট (৭২.১ ওভার)
(মোসাদ্দেক ৫৭, পিনাক ৫১; তাইজুল ৬/৯২)
পূর্বাঞ্চল প্রথম ইনিংসঃ ৪২৫ অলআউট (৮৮.৫ ওভার)
(মাহমুদুল ৯৪, মমিনুল ৮২,; তাসকিন ৪/৯৬)
সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বিসিএলের ষষ্ঠ এবং শেষ রাউন্ডের খেলায় তৃতীয় দিনে নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিং করে ইনিংস ঘোষণা করেছে পূর্বাঞ্চল। মধ্যাঞ্চলকে ৪৫৬ রানের লক্ষ্য ছুঁড়ে দিয়েছে তাঁরা। লক্ষ্য তাড়া করতে নিজেদের ব্যাটিং করছে মধ্যাঞ্চল।
নাঈম ঘূর্ণিতে কুপোকাত মধ্যাঞ্চলঃ
দলীয় ৮ রানে প্রথম উইকেট হারানোর পর ২৯ রানের জুটি গড়েছিলেন শান্ত এবং সাইফ। তাঁদের সেই জুটি বেশীক্ষণ টিকতে দেন স্পিনার নাঈম হাসান। সাইফকে ৩১ রানে ফিরিয়েছেন তিনি। শান্তর সাথে জুটি গরতে ব্যাট হাতে উইকেটে নেমেছিলেন আব্দুল মজিদ।
কিন্তু মজিদকেও উইকেটে থিতু হতে দেননি নাঈম। ১১ রান করতেই লেগ বিফোরের ফাঁদে ফেলে মজিদকে সাজঘরের রাস্তা দেখান তরুণ এই স্পিনার। এরপর ব্যাটে হাতে দলের দায়িত্ব নিতে ক্রিজে নামেন অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান মার্শাল আইয়ুব।

২৯ রানের জুটি গড়েন তিনি শান্তর সাথে। কিন্তু তাঁকে সঙ্গ দিতে পারেননি শান্ত। নাঈমের ঘূর্ণিতে পরাস্ত হয়েছেন তিনি। মাহমুদুল হাসানের হাতে ক্যাচ দিয়ে ৩৬ রানে ফিরেছেন মধ্যাঞ্চলের অধিনায়ক শান্ত।
এরপর আইয়ুবকেও ফিরিয়েছেন তিনি। ১৬ রান করেছিলেন আইয়ুব। নাঈমের পরের শিকার প্রথম ইনিংসে দলের হয়ে সর্বোচ্চ রান করা মোসাদ্দেক হোসেন। ৭ রান করা মোসাদ্দেককে লেগ বিফোর করে আউট করেছেন তিনি। ঝুলিতে পূরে নিয়েছেন ছয়টি উইকেট।
সপ্তম উইকেটটি নিয়েছেন আবু জায়েদ রাহি। উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান জাকের আলিকে ১৩ রানে ফিরিয়েছেন রাহি। নতুন ব্যাটসম্যান হিসেবে উইকেটে রয়েছেন মধ্যাঞ্চলের মোশাররফ এবং আবু হায়দার রনি।
ইতিমধ্যে ১৩২ রানে সাত উইকেট হারিয়েছে তারা। পরাজিয়ের প্রহর গুনছে মধ্যাঞ্চল। ৩২৪ রানে পিছিয়ে তারা।
শুরুতেই চাপে মধ্যাঞ্চলঃ
বিশাল লক্ষ্য তাড়া করতে গিয়ে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুতেই উইকেট হারিয়ে বসে মধ্যাঞ্চল। প্রথম ইনিংসে অর্ধশতক হাঁকানো পিনাক ঘোষ লেগ বিফোর হয়ে ফিরে যান শূন্য রান করে। নতুন ব্যাটসম্যান হিসেবে উইকেটে নেমেছেন নাজমুল হাসান শান্ত।
একপ্রান্ত দিয়ে ব্যাট চালিয়ে যাচ্ছেন ওপেনার সাইফ। ইতিমধ্যে ৩২ বলে ২৯ রান তুলে নিয়েছেন তিনি। বর্তমানে মধ্যাঞ্চলের সংগ্রহ এক উইকেট হারিয়ে ৩৫ রান।
পূর্বাঞ্চলের ইনিংস ঘোষণাঃ
মমিনুল এবং ইয়াসিরের শতকের পর নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংস ঘোষণা করে দেয় পূর্বাঞ্চল। ১০১ রানে অপরাজিত ছিলেন ইয়াসির। তবে শতক করেই সাজঘরে ফিরেছেন মমিনুল। মোশাররফ হোসেনের বলে ক্যাচ দিয়ে আউট হয়েছেন তিনি।
৪৩ ওভার ব্যাটিং করে তিন উইকেট হারিয়ে ২৫৪ রানে ইনিংস ঘোষণা করে দেয় তারা।
ওয়ানডে মেজাজে নব্বইয়ের ঘরের মমিনুলঃ
সিলেটে দুর্দান্ত ব্যাটিং করে যাচ্ছেন মমিনুল হক। প্রথম ইনিংসে ওয়ানডে মেজাজে শতক হাঁকানোর পর দ্বিতীয় ইনিংসেও আগ্রসী ব্যাটিং করে যাচ্ছে তিনি। ইতিমধ্যে প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটে ১৯তম শতক হাঁকিয়েছেন এই বাঁহাতি। ১০৫ বল খেলেছেন তিনি। যেখানে নয়টি চার এবং একটি ছয়ের মার ছিল তাঁর।
তাঁর সাথে সমান তালে ব্যাট চালিয়ে যাচ্ছেন ইয়াসির আলি। ১০০ বল খেলে আশির ঘরে পৌঁছে গেছেন তিনি। দলের রান বর্তমানে ২১৮ রান দুই উইকেট হারিয়ে।
অর্ধশতকের দ্বারপ্রান্তে মমিনুলঃ
৬৩ বলে ৪৫ রান নিয়ে অর্ধশতকের সামনে পূর্বাঞ্চলের বাঁহাতি ব্যাটসম্যান মমিনুল হক। তাঁর সাথে উইকেটে রয়েছেন ইয়াসির আলি। ৫৬ রানে ৩৮ রানে ব্যাটিং করছেন তিনি।
পূর্বাঞ্চলের বর্তমান সংগ্রহ ২ উইকেট হারিয়ে ১১৮ রান। তাঁদের লিড দাঁড়িয়েছে ৩১৯ রানের।
দ্বিতীয় দিনের একেবারে সে বেলায় ব্যাটিংয়ে নেমেছিলেন পূর্বাঞ্চলের দুই ওপেনার ইমরুল কায়েস এবং রনি তালুকদার। এক ওভার খেলে কোন উইকেট না হারিয়ে ২ রান নিয়ে দিন শেষ করেছিল তাঁরা। তৃতীয় দিন ব্যাটিংয়ে নেমেই তাসকিন আহমেদের বলে লেগ বিফোর হয়ে ফিরে যান বাঁহাতি ওপেনার ইমরুল। মাত্র আট রান করেছিলেন তিনি। কিছুক্ষণ উইকেটে থেকে বিদায় নেন আরেক ওপেনার রনি=ও। ২৪ রান করেছিলেন তিনি, আউট হয়েছেন পেসার শাহাদাত হোসেনের বলে ক্যাচ দিয়ে। তিনে নামা মমিনুলের সাথে ৩১ রানের জুটি গড়েছিলেন তিনি।
মধ্যাঞ্চলের প্রথম ইনিংসঃ
তাইজুল ইসলামের ঘূর্ণি জাদুতে ম্যাচের দ্বিতীয় দিন ব্যাটিংয়ে নেমে আড়াই সেশনেই আউট হয়ে যায় মধ্যাঞ্চল। দুর্দান্ত বোলিং করে একাই ছয় উইকেট নিয়েছেন তাইজুল। শেষ পর্যন্ত ২২৪ রানে থেমে যায় মধ্যাঞ্চলের ইনিংস। মধ্যাঞ্চলের হয়ে মাত্র দুই ব্যাটসম্যান অর্ধশতকের ঘর পার করতে পেরেছেন।
ওপেনার পিনাক ঘোষ খেলেছিলেন ৫১ রানে ইনিংস এবং মোসাদ্দেক হোসেন খেলেছেন ৫৭ রানের ইনিংস।
পূর্বাঞ্চলের প্রথম ইনিংসঃ
টসে জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয়া পূর্বাঞ্চল ব্যাটসম্যানদের অসাধারণ ব্যাটিংয়ে প্রথম ইনিংসে ৪২৫ রান সংগ্রহ করে। দলের হয়ে চার ব্যাটসম্যান পৌঁছেছিলেন অর্ধশতকের ঘরে কিন্তু কেউ তিন অংকের খাতায় নাম লেখাতে পারেননি।
ইমরুল কায়েস ৭৮ রান, মমিনুল হক ৮২ রান, মাহমুদুল হাসান ৯৪ রান এবং জাকির আলি ৫২ রানের ইনিংস খেলেছিলেন। মধ্যাঞ্চলের হয়ে চার উইকেট নিয়েছেন পেসার তাসকিন আহমেদ।