|| ডেস্ক রিপোর্ট ||
সংক্ষিপ্ত স্কোর-
ওয়েস্ট ইন্ডিজ (প্রথম ইনিংস)- ৪৫০/৯ (১৪৪.১ ওভার) (লুইস ৯৭, আথানেজ ৯০, হজ ২৫, সিলভা ১৪, গ্রেভস ১১৫*, রোচ ৪৭, সিলস ১৮, শামার ১১*; হাসান ৩/৮৭, তাসকিন ২/৭৬)
বাংলাদেশ (প্রথম ইনিংস)- ২৬৯/৯ (৯৮ ওভার) (জাকির ১৫, জয় ৫, দিপু ১৮, মুমিনুল ৫০, লিটন ৪০, মিরাজ ২৩, জাকের ৫৩; আলজারি ৩/৬৯, সিলস ২/৪২)
ওয়েস্ট ইন্ডিজ (দ্বিতীয় ইনিংস)- ১৫২/১০ (৪৬.১ ওভার) (লুইস ৮, ব্রাথওয়েট ২৩, কাভেম ১৫, অ্যাথানাজ ৪২, ডি সিলভা ২২, আলজারি ১৭; তাসকিন ৬/৬৪)
বাংলাদেশ (দ্বিতীয় ইনিংস)- ৮/২ (৫ ওভার)
ওয়েস্ট ইন্ডিজের তখনও দুই ব্যাটার আউট হতে বাকি। তবে স্বাগতিকদের লিড তিনশ ছাড়িয়ে গেছে অনেক আগেই। বাংলাদেশের লক্ষ্য যাতে সাড়ে তিনশ পেরিয়ে না যায় উইকেটের পেছনে দাঁড়িয়ে মেহেদী হাসান মিরাজকে সেটাই মনে করিয়ে দিচ্ছিলেন লিটন দাস। বাংলাদেশের উইকেটকিপারের চাওয়া পূর্ণ করেছেন তাসকিন আহমেদ। শামার জোসেফ ও কেমার রোচকে ফিরিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে দ্বিতীয় ইনিংসে ১৫২ রানে গুড়িয়ে দিয়েছেন ডানহাতি এই পেসার। তাসকিনের ৬ উইকেটের দিনে স্বাগতিকরা ৩৩৩ রানের লিড পেয়েছে। ফলে অ্যান্টিগা টেস্ট জিততে বাংলাদেশের সামনে লক্ষ্য ৩৩৪ রান।
জাকিরের পর জয়কে হারিয়ে বিপাকে বাংলাদেশ
অ্যান্টিগায় ৩৩৪ রান তাড়ায় শুরুটা ভালো হলো না বাংলাদেশের। ইনিংসের প্রথম ওভারেই জাকির হাসানের উইকেট হারিয়েছে সফরকারীরা। কেমার রোচের অফ স্টাম্পের বাইরের বলে ইনসাইড এজে বোল্ড হয়ে ফিরেছেন বাঁহাতি এই ওপেনার। প্রথম ইনিংসে ১৫ রান করা জাকির এবার থেমেছেন রানের খাতা খোলার আগেই। আরেক ওপেনার মাহমুদুল হাসান জয়ও বেশিক্ষণ টিকতে পারলেন না। জেইডেন সিলসের দারুণ এক ডেলিভারিতে আউট সাইড এজ হয়ে স্লিপে থাকা জাস্টিন গ্রিভসকে ক্যাচ দিয়েছেন ৬ রান করা জয়।
তাসকিনের ৬ উইকেট, বাংলাদেশের লক্ষ্য ৩৩৪ রান
বাংলাদেশের চেয়ে ১৮১ রানে এগিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিংয়ে নামে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ইনিংসের তৃতীয় ওভারেই উইকেট হারাতে পারতো স্বাগতিকরা। তাসকিন আহমেদের ফুল লেংথ ডেলিভারিতে ডিফেন্স করতে গিয়ে এজ হয়ে স্লিপে ক্যাচ দিয়েছিলেন ক্রেইগ ব্রাথওয়েট। তবে সহজ ক্যাচ লুফে নিতে পারেননি শাহাদাত হোসেন দিপু। পরের বলে মিকাইল লুইসকেও ফেরানোর সুযোগ ছিল বাংলাদেশের সামনে। তাসকিনের ফুল লেংথ ডেলিভারিতে খেলতে গিয়ে বলের লাইন মিস করেছিলেন লুইস। বল প্যাডে আঘাত করায় ডানহাতি পেসার আবেদন করলেও খুব বেশি আত্মবিশ্বাসী ছিলেন না।
আম্পায়ারও সাড়া দেয়নি বাংলাদেশের আবেদনে। তাসকিন আত্মবিশ্বাসী না হওয়ায় রিভিউও নেয় সফরকারীরা। তবে একটু পর টিভি রিপ্লেতে দেখা যায় রিভিউ নিলে আউট হতেন ১ রান করা লুইস। যদিও কয়েক ওভার পর ওয়েস্ট ইন্ডিজের ওপেনারকে ফিরিয়েছেন তাসকিনই। বাংলাদেশের পেসারের অফ স্টাম্পের বাইরের বলে এজ হয়ে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়েছেন। প্রথম ইনিংসে ৯৭ রান করা লুইস এবার ফিরেছেন মাত্র ৮ রানে। তিনে নেমে সুবিধা করতে পারেননি কেসি কার্টি। তাসকিনের অফ স্টাম্পে পড়ে ভেতরে ঢোকা ডেলিভারিতে খেলতে গিয়ে স্লিপে থাকা মাহমুদুল হাসান জয়কে ক্যাচ দিয়েছেন।
পরের ওভারে আউট হয়েছেন ব্রাথওয়েটও। স্লিপে থাকা জয়কে ক্যাচ দিয়েছেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের অধিনায়ক। এরপর জুটি গড়ে তোলেন কাভেশ হজ ও অ্যালিক অ্যাথানাজ। তারা দুজনে মিলে ৫০ রানের জুটি গড়ে। লাঞ্চ থেকে ফেরার কয়েক ওভার পর কাভেমকে ফিরিয়ে জুটি ভাঙেন তাসকিন। ডানহাতি পেসারের অফ স্টাম্পের বাইরের লেংথ ডেলিভারিতে এজ হয়ে লিটনের হাতে ক্যাচ দিয়েছেন ১৫ রান করা কাভেম। পরের ওভারে অ্যাথানাজকে নিজের শিকার বানান মিরাজ। ডানহাতি অফ স্পিনারের বলে লেগ বিফোর উইকেট হয়েছেন ৪২ রান করা অ্যাথানাজ।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের রান একশ হওয়ার আগে ফিরেছেন জাস্টিন গ্রিভসও। প্রথম ইনিংসে সেঞ্চুরি করা ব্যাটারকে এবার ২ রানে ফিরিয়েছেন তাসকিন। বাংলাদেশের পেসারের দুর্দান্ত ডেলিভারিতে বোল্ড হয়েছেন তিনি। দ্রুত রান তোলার চেষ্টায় থাকা জশুয়া ডি সিলভাকে ফিরিয়ে সফরকারীদের স্বস্তি আরও বাড়িয়ে দেন তাইজুল ইসলাম। বাঁহাতি স্পিনারের অফ স্টাম্পের বাইরের বেরিয়ে যাওয়া ডেলিভারিতে কাট করতে গিয়ে ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে থাকা হাসান মুরাদকে ক্যাচ দিয়েছেন ২২ রান করা ডি সিলভা। লিড বাড়িয়ে নিতে দ্রুত রান তোলায় মনোযোগী ছিলে আলজারি ও রোচ। যদিও তাদের দুজনকে বাংলাদেশের পথের কাঁটা হয়ে দাঁড়াতে দেননি মিরাজ।
বাংলাদেশের স্পিনারের বলে সুইপ করতে গিয়ে ব্যাকওয়ার্ড স্কয়ার লেগে দাঁড়িয়ে থাকা জাকেরকে ক্যাচ দিয়েছেন ১৭ রান করা আলজারি। ওয়েস্ট ইন্ডিজের পরের দুই উইকেটই নিয়েছেন তাসকিন। শামার জোসেফকে দারুণ এক ডেলিভারিতে বোল্ড করে টেস্ট ক্যারিয়ারে প্রথমবারের মতো ৫ উইকেটের দেখা পান বাংলাদেশের এই পেসার। শেষ ব্যাটার হিসেবে স্লোয়ার ডেলিভারিতে রোচকেও ফিরিয়েছেন তিনি। তবে সেখানে অবিশ্বাস্য ক্যাচ ধরা মিরাজের অবদানই হয়ত বেশি। তাসকিনের ৬ উইকেটে দ্বিতীয় ইনিংসে ১৫২ রানে অল আউট হয়েছে ক্যারিবীয়রা।
১৮১ রানে পিছিয়ে থেকেও ইনিংস ঘোষণা বাংলাদেশের
ব্যাটারদের ব্যর্থতায় ৯ উইকেটে ২৬৯ রান নিয়ে তৃতীয় দিন শেষ করেছিল বাংলাদেশ। তাসকিন আহমেদ ও শরিফুল ইসলামের সামনে ব্যাটিংয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের লিড কমানোর সুযোগ ছিল সফরকারীরা। তাদের দুজনকে ব্যাটিংয়ে না পাঠিয়ে ইনিংস ঘোষণা করেন মেহেদী হাসান মিরাজ। বাংলাদেশের চেয়ে ১৮১ রানে এগিয়ে থেকে আবারও ব্যাটিংয়ে নামে ওয়েস্ট ইন্ডিজ।