|| ডেস্ক রিপোর্ট ||
৩০.১ ওভার, ৯ মেইডেন, ৪৯ রান এবং ১০ উইকেট! এমন বোলিং কার্ড দেখে আপনি হয়ত ভাবতেই পারেন এক ম্যাচে এমন বোলিং নতুন কী। আপনি যদি এমন কিছু ভেবে থাকেন তাহলে খানিকটা বোকামিই করছেন। এটা আদৌতে রঞ্জি ট্রফিতে আনশুল কাম্বোজের এক ইনিংসের বোলিং ফিগার। অর্থাৎ এক ইনিংসে প্রতিপক্ষের সব ব্যাটারকে একাই আউট করেছেন হারিয়ানার এই পেসার।
রঞ্জি ট্রফির ২০২৪-২৫ মৌসুমের পঞ্চম রাউন্ডে চৌধুরি বানসি লাল স্টেডিয়ামে কেরালার বিপক্ষে খেলছে হারিয়ানা। আগের দিনে ৮ উইকেট তুলে নিয়ে বৃহস্পতিবার বোলিংয়ে এসেছিলেন আনশুল। রেকর্ড করতে আরও দুই উইকেট নিতে হতো ডানহাতি পেসারের। শেষ ব্যাটার হিসেবে শন রজারকে উইকেটের পেছনে ক্যাচ বানিয়ে প্রতিপক্ষের ১০ ব্যাটারকেই আউট করার কীর্তি গড়েন তিনি। হারিয়ানার বোলার হিসেবে এটাই ক্যারিয়ার সেরা বোলিং ফিগার।
এর আগে ২০০৪-০৫ মৌসুমে বিদর্ভের বিপক্ষে ২৪ রানে ৮ উইকেট নিয়েছিলেন জগিন্দার শর্মা। সেই সঙ্গে রঞ্জিতে তৃতীয় বোলার হিসেবে ইনিংসে প্রতিপক্ষের সব ব্যাটারের উইকেট নেয়ার কীর্তি গড়েছেন আনশুল। ১৯৫৬-৫৭ মৌসুমে বাংলার প্রেমাংশু চ্যাটার্জি ও ১৯৮৫-৮৬ মৌসুমে রাজস্থানের প্রদীপ সান্দেরামও ইনিংসে প্রতিপক্ষের ১০ উইকেট নিয়েছিলেন। সব মিলিয়ে ভারতের ষষ্ঠ বোলার হিসেবে এমন রেকর্ড করেছেন আনশুল।
লেগ স্পিনার শুভাশীষ গুপ্ত, অনিল কুম্বলে এবং উড়িশার পেসার দেবাশীষ মোহন্তির এমন কীর্তি আছে। ভারতের একমাত্র বোলার হিসেবে আন্তর্জাতিক টেস্টে ইনিংসে ১০ উইকেট নিয়েছেন কুম্বলে, ১৯৯৯ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে দিল্লি টেস্টে। আন্তর্জাতি ক্রিকেটেও ইনিংসে ১০ উইকেট নেয়া তিন বোলারের একজন ভারতের এই লেগ স্পিনার। বাকি দুজন ইংল্যান্ডের জিম লেকার ও নিউজিল্যান্ডের এজাজ প্যাটেল।
বক্সিংয়ের জন্য সুপরিচিত হারিয়ানার কার্নাল থেকে উঠে এসেছেন আনশুল। শৈশবে খোলা মাঠে ক্রিকেট খেলেছেন তিনি। ১৪ বছরের আগ পর্যন্ত ক্রিকেটকে সেভাবে গুরুত্বের সঙ্গে নেননি ডানহাতি এই পেসার। তবে যখন ক্রিকেটে মনোযোগ দেন তখন শুধু রাজ্য দলই নয় আইপিএলেও জায়গা করে নিয়েছেন। ভারতের অনূর্ধ্ব-১৯ দলে সুযোগ না পেলেও মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের জার্সিতে দুনিয়ার সবচেয়ে জনপ্রিয় ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্টে খেলেছেন আনশুল।
ইনিংসে ১০ উইকেট নেয়া ছাড়াও বল হাতে সময়টা বেশ ভালো যাচ্ছে ২৩ বছর বয়সী পেসারের। বিজয় হাজারে ট্রফিতে নিজেদের প্রথম শিরোপা জয়ে ৩.৫৮ ইকনোমি রেটে ১৭ উইকেট নিয়েছিলেন। টুর্নামেন্টের তৃতীয় সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি আনশুল সেমিফাইনালে তামিলনাড়ুর বিপক্ষে ৩০ রানে ৪ উইকেট শিকার করেছিলেন।
মৌসুমের শুরুতে দুলীপ ট্রফিতে ভারত ‘সি’ এবং ভারত ‘বি’ এর ম্যাচে ৬৯ রানে ৮ উইকেট নিয়েছিলেন। যেখানে সরফরাজ খান, রিংকু সিং ও নারায়ণ জগাদ্বেশানকে আউট করেছেন। সবশেষ মাসে ইমার্জিং এশিয়া কাপে ভারতের স্কোয়াডেও ছিলেন। পাকিস্তান শাহীনসের বিপক্ষে ৩৩ রানে ৩ উইকেট নিয়ে পুরো ম্যাচ ঘুরে দিয়েছিলেন আনশুল। এদিকে আনক্যাপড হিসেবে মুম্বাইয়ের রিটেইন করার গুঞ্জন উঠলেও শেষ পর্যন্ত তা হয়নি।