|| ডেস্ক রিপোর্ট ||
তানজিদ হাসান তামিম দ্রুত ফিরলেও বাংলাদেশকে পথ দেখিয়েছেন নাজমুল হোসেন শান্ত ও সৌম্য সরকার। তাদের দুজনের পঞ্চাশ পার করা জুটিতে বিপদ কাটিয়ে ওঠে বাংলাদেশ। শুরুটা ভালো হলেও হাফ সেঞ্চুরি না পাওয়ার আক্ষেপ নিয়ে ফিরতে হয় সৌম্যকে। তবে দলের হাল ধরেছিলেন শান্ত। মেহেদী হাসান মিরাজকে সঙ্গে নিয়ে বাঁহাতি ব্যাটার যেভাবে ব্যাটিং করছিলেন তাতে বাংলাদেশের জয় পাওয়াটা ছিল কেবলই সময়ের ব্যাপার।
অথচ নাটকীয় ধসে ৯২ রানে হারতে হয়েছে সফরকারীদের। যার শুরুটা হয়েছে শান্তকে দিয়ে। মোহাম্মদ নবির স্পিনের বিপক্ষে খানিকটা ভুগছিলেন বাংলাদেশের অধিনায়ক। রান বের করতে না পারায় চাপে পড়ে সুইপ করতে গিয়ে শর্ট ফাইন লেগে থাকা হাশমতউল্লাহ শাহীদিকে ক্যাচ দিলেন ৪৭ রানের ইনিংস খেলা শান্ত। একটু পর ফিরেছেন থিতু হওয়া মিরাজও। এরপর তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ল বাংলাদেশের ব্যাটিং অর্ডার।
২ উইকেটে ১২০ রান করা বাংলাদেশ শেষ পর্যন্ত অল আউট হয়েছে ১৪৩ রানে। এমন হারের পর শান্ত জানিয়েছিলেন, তার উইকেটই পার্থক্য গড়ে দিয়েছে। যদিও দ্বিতীয় ওয়ানডের আগে শান্তর মতো হারের দায় নিয়েছেন মিরাজ নিজেও। বাংলাদেশের সহ-অধিনায়কের মতে, ২০ ওভারের পর উইকেট নরম ও টার্নিং আচরণ করতে থাকে। যার ফলে থিতু হওয়ায় তাঁর ও শান্তর খেলা শেষ করে আসা উচিত ছিল।
মিরাজ বলেন, ‘একটা জিনিস দেখেন, যখন আমি আর শান্ত ব্যাটিং করছিলাম তখন আমাদের দুজনের কাছে উইকেট সহজই মনে হচ্ছিলো। কিন্তু ২০ ওভার পর বল যখন একটু নরম এবং পুরনো হয়েছে তখন হঠাৎ করে টার্নিংটা শুরু হয়েছে, একটু বেশি। আপনি দেখেন মাঝে আমি আর শান্ত ধুঁকছিলাম ব্যাটিংয়ে, আমরা সেট ব্যাটার থাকাকালীন। হ্যাঁ, ওই সময় আমরা দুজন যেভাবে সেট ছিলাম আমাদের দুজনের ভেতরে একজনের শেষ করা উচিত ছিল। কারণ আমি শান্তকে বারবার বলছিলাম এই উইকেটে আমাদের দুজনের যেহেতু খেলতে সমস্যা হচ্ছে পরের ব্যাটারদের জন্য অনেক কঠিন হবে।’
‘হঠাৎ করে উইকেটটা এত স্লো টার্নিং হচ্ছিলো তারপর সোজা আসতেছিল। আপনি প্রেডিক্ট করতে পারবেন না কোন বল টার্ন করবে, কোনটা সোজা আসতেছে। এটা হঠাৎ করে হয়ে গেছে। ওই সময়টায় আমিও ভুল করেছি, শান্তও ভুল করেছে। আমরা এটা নিয়ে আলোচনা করেছি। এই উইকেটে আমার কাছে মনে হয় সেট ব্যাটারদের শেষ করা দরকার ছিল। অবশ্যই, আমি এবং শান্ত দুজনই ভুল করেছি।’
অথচ মুস্তাফিজুর রহমান ও তাসকিন আহমেদের বোলিং তোপে মাত্র ৭১ রানে ৫ উইকেট হারায় আগে ব্যাটিং করতে নামা আফগানিস্তান। সেখান থেকে হাশমতউল্লাহ শাহীদি ও মোহাম্মদ নবি মিলে স্বাগতিকদের পথ দেখান। দুজনের ১০৪ রানের জুটিতে শেষ পর্যন্ত ২৩৫ রানের পুঁজি পায় তারা। মিরাজ ভাবেননি আফগানরা এত রান করবেন। সেটার পেছনে নিজের এবং রিশাদ হোসেনের দায় দেখেন মিরাজ। তিনি মনে করেন, মাঝের ওভারে তারা দুজন যদি দুটি উইকেট নিতে পারতেন তাহলে বাংলাদেশের জন্য কাজটা সহজ হয়ে যেতো।
এ প্রসঙ্গে মিরাজ বলেন, ‘না, এটা কখনই মনে হয়নি। যেহেতু আমাদের পেস বোলাররা ভালো বোলিং করেছে, খুব দ্রুত পাঁচটা উইকেট নিয়েছে। আমরা মিডল অর্ডারে উইকেট পাইনি, ওরা শতরানের জুটি গড়েছে। আমি মনে করি বোলিংয়ে আমাদের পেস বোলাররা খুবই ভালো বোলিং করেছে। দারুণ শুরু করেছে ফিজ, শরিফুল, তাসকিন তিনজনই। কিন্তু আমার কাছ থেকে যতটা প্রত্যাশা ছিল ওতটা আমি পূরণ করতে পারিনি আমি মনে করি।’
‘মিডল ওভারে আমি আর রিশাদ যদি দুইটা উইকেট বের করতে পারতাম তাহলে আমাদের জন্য সহজ হয়ে যেতো। হয়ত আমি রান কম দিয়েছি কিন্তু দল আমার কাছে প্রত্যাশা করে উইকেট এনে দেয়া। কারণ আমার ভূমিকাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ দলে। আমি যদি উইকেট নিতে পারি, রান করতে পারি তাহলে আমি মনে করি বাংলাদেশ দলের জয়ে ভূমিকা রাখে।’