ইমার্জিং এশিয়া কাপ

আবু হায়দারের ক্যামিও ইনিংসের পরও বাংলাদেশের বিদায়

ক্রিকফ্রেঞ্জি ডেস্ক

ক্রিকফ্রেঞ্জি ডেস্ক
প্রকাশের তারিখ: 23:08 মঙ্গলবার, 22 অক্টোবর, 2024

|| ডেস্ক রিপোর্ট ||

৩০ বলে ৫৯ রান! বিশেষজ্ঞ কোন ব্যাটার উইকেটে না থাকায় এমন সমীকরণ থেকে বাংলাদেশ ‘এ’ দলের জয় পাওয়াটা অসম্ভবই প্রায়। তবে দুই ওভারে তিন ছক্কায় বাংলাদেশের আশা একটু বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টা করলেন আবু হায়দার রনি। ইনিংসের ১৮তম ওভারে এসান মালিঙ্গার প্রথম বলেই লং অফের উপর দিয়ে ছক্কার মারলেন ডানহাতি এই ব্যাটার। ফিল্ডার সীমানার বাইরে থাকায় ডেলিভারি হওয়ার আগেই আম্পায়ার সেটিকে ডেডবল হিসেবে বিবেচনায় নিলেন। আম্পায়ারের এমন সিদ্ধান্ত মানতে পারছিলেন না আবু হায়দার। বাংলাদেশের ডাগ আউটও প্রতিবাদ করলেন চতুর্থ আম্পায়ারের কাছে গিয়ে। যদিও শেষ পর্যন্ত অনফিল্ড আম্পায়ারের সিদ্ধান্তই বহাল থাকে। তাতে বিফলে যায় আবু হায়দারের ছক্কায়।

সেখান থেকেই একটু একটু করে মোমেন্টাম হারাতে থাকে বাংলাদেশ। ম্যাচ জিততে হলে শেষ ওভারে ২৪ রান করতে হতো আবু হায়দারকে। সেই ওভার থেকে বাংলাদেশ তুলতে পেরেছে মাত্র ৩ রান। আকবর আলী, তাওহীদ হৃদয়, নাইম শেখদের ব্যাটিং ব্যর্থতায় আবু হায়দারের ২৫ বলে ৩৮ রানের ক্যামিও ম্যাচ জেতাতে পারেননি। শ্রীলঙ্কার কাছে ১৯ রানে হেরে ইমার্জিং এশিয়া কাপের গ্রুপ পর্ব থেকেই বিদায় নিলো বাংলাদেশ। দুই জয়ে চার পয়েন্ট নিয়ে টেবিল টপার হয়ে সেমিফাইনালে জায়গা করে নিয়েছে শ্রীলঙ্কা। একই গ্রুপ থেকে তাদের সঙ্গী আফগানিস্তান।

মাসকাটের ওমান ক্রিকেট একাডেমি গ্রাউন্ডে জয়ের জন্য ১৬২ রান তাড়ায় বাংলাদেশকে ভালো শুরুই এনে দেন দুই ওপেনার পারভেজ হোসেন ইমন ও সাইফ হাসান। বিশেষ করে পারভেজ ইমন শুরু থেকেই আক্রমণাত্বক ছিলেন। দুই ওভারে ১৬ রান এলেও তৃতীয় ওভারে সাহান আরাচ্চিগের বিপক্ষে দুই ছক্কা ও দুই চারে ২২ রানে তোলে বাংলাদেশ। তবে দ্রুত রান তোলায় মনোযোগী হতে গিয়ে পরের ওভারেই উইকেট দিয়ে গেছেন পারভেজ ইমন।

এসান মালিঙ্গার অফ স্টাম্পের বাইরের উড়িয়ে মারতে গিয়ে দুসান হেমন্থর হাতে ক্যাচ দিয়েছেন। বাঁহাতি ওপেনার আউট হয়েছেন ১০ বলে ২৪ রানে। পাওয়ার প্লে শেষ হওয়ার আগে হ্যামস্ট্রিংয়ের চোটে পড়ে রিটায়ার্ড হার্ট হয়েছেন ২৯ রানের ইনিংস খেলা সাইফ। সব মিলিয়ে এক উইকেট হারিয়ে প্রথম ৬ ওভারে ৫৯ রান তোলে বাংলাদেশ। তিনে নেমে একেবারেই সুবিধা করতে পারেননি নাইম শেখ। স্পিনার নিমেশ ভিমুক্তির বলে ব্যাকফুটে খেলতে গিয়ে লেগ বিফোর উইকেট হয়েছেন।

বাংলাদেশের অধিনায়ক আকবরও টিকতে পারেননি বেশিক্ষণ। রান তোলার তাড়নায় উড়িয়ে হেমন্থকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে সীমানার কাছে ক্যাচ দিয়েছেন। শামীমকেও ফিরিয়েছেন হেমন্থ। ডানহাতি লেগ স্পিনারের লেংথ ডেলিভারিতে সুইপ করে ছক্কা মারতে গিয়ে নিপুন রানসিকাকে ক্যাচ দিয়েছেন। ব্যর্থতার পাল্লা ভারী করে ফিরেছেন হৃদয়, মাহফুজুর রহমান রাব্বিরাও। ১০৩ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে বিপাকে পড়ে বাংলাদেশ।

রমেশ মেন্ডিসের এক ওভারে দুই ছক্কা মেরে বাংলাদেশকে ম্যাচে ফেরানোর চেষ্টা করেন আবু হায়দার। পরের ওভারে মেরেছেন আরও এক ছক্কা। তবুও বাংলাদেশকে জয় এনে দিতে পারেননি। ক্যামিও ইনিংস খেলে শেষ পর্যন্ত আবু হায়দার অপরাজিত ছিলেন ৩৮ রানে। শ্রীলঙ্কার হয়ে একাই তিনটি উইকেট নিয়েছেন হেমন্থ। একটি করে উইকেট পেয়েছেন নিমেশ, মেন্ডিস, মালিঙ্গা এবং নিপুন।

এর আগে টস হেরে ব্যাটিং করতে নেমে শ্রীলঙ্কাকে দারুণ শুরু এনে দেন ইশোডা লঙ্কা এবং লাহিরু উদারা। উদ্বোধনী জুটিতে তারা দুজনে মিলে যোগ করেন ৪০ রান। ইনিংসের পঞ্চম ওভারে ২৩ রান করা ইশোডাকে ফিরিয়ে জুটি ভাঙেন মাহফুজুর রাব্বি। বাঁহাতি স্পিনারের শর্ট লেংথ ডেলিভারিতে উড়িয়ে মারার চেষ্টায় শর্ট থার্ডম্যানে থাকা আবু হায়দারের হাতে ক্যাচ দিয়েছেন। তিনে নেমে ‍উদারার সঙ্গে জুটি গড়ার চেষ্টা করেন নুয়ান্দো।

তাদের ২৬ রানের জুটি ভাঙেন রেজাউর রহমান রাজা। ডানহাতি পেসারের লেগ স্টাম্পের উপরে করা ডেলিভারিতে ফাইন লেগ দিয়ে খেলতে চেয়েছিলেন উদারা। তবে শর্ট লেগে দাঁড়িয়ে রাকিবুল হাসান ক্যাচ নিলে ৩৫ রানে ফিরতে হয় তাকে। একটু পর আউট হয়েছেন নুয়ান্দোও। সাইফের বলে শামীমের হাতে ক্যাচ দিয়েছেন লঙ্কান অধিনায়ক। ২০ বল খেলে করেছেন ১৯ রান। ৮১ রানে ৩ উইকেট হারানোর পর শ্রীলঙ্কাকে পথ দেখান সাহান আরচ্চিগে ও পবন রত্নায়েক।

দারুণ ব্যাটিংয়ে দ্রুত রানও বাড়াতে থাকেন তারা। ২৬ বলে ৪২ রানের ইনিংস খেলা পবনকে ফিরিয়ে ৬৪ রানের জুটি ভাঙেন রেজাউর। ডানহাতি পেসারের বলে হৃদয়ের হাতে ক্যাচ দিয়েছেন তিনি। রমেশ মেন্ডিসও আউট হয়েছেন একটু পরই। শেষ দিকে বিদায় নিয়েছেন ৩০ রানে। ৭ উইকেট হারিয়ে ১৬১ রান তোলে শ্রীলঙ্কা। বাংলাদেশের হয়ে দুটি করে উইকেট নিয়েছেন রিপন মণ্ডল ও রেজাউর।