|| ডেস্ক রিপোর্ট ||
আগের দিনই ধারণা করা যাচ্ছিল ক্যারিবীয় পেসাররা বাংলাদেশকে চেপে ধরতে চাইবেন তৃতীয় দিনে। হয়েছেও তাই। নিয়মিত আর অনিয়মিত পেসাররা মিলে তৃতীয় দিনে বাংলাদেশের ৭ উইকেট তুলে নিয়েছেন। বাংলাদেশ ৯ উইকেটে ২৬৯ রান করে তৃতীয় দিনের খেলা শেষ করেছে। তাসকিন আহমেদ ১১ ও শরিফুল ইসলাম ৫ রান নিয়ে অপরাজিত আছেন। এই দুজনে বাংলাদেশের ব্যবধান কতটা কমাতে পারেন সেটাই দেখার বিষয়। বাংলাদেশ এখনও ক্যারিবীয়দের চেয়ে পিছিয়ে আছে ১৮১ রানে।
অ্যান্টিগা টেস্টের তৃতীয় দিনের শুরু থেকেই দেখেশুনে খেলছিলেন আগের দিনের দুই অপরাজিত ব্যাটার শাহাদাত হোসেন দিপু ও মুমিনুল হক। প্রথম ৮ ওভারে ২৪ রান যোগ করেছিলেন তারা। যদিও ধৈর্য হারিয়ে কেমার রোচের অফ স্টাম্পের অনেক বাইরের বলে ডিফেন্স করতে গিয়ে আউট সাইড এজ হয়ে প্রথম স্লিপে কেভাম হজের হাতে ক্যাচ দেন দিপু। ফলে তৃতীয় দিনে বাংলাদেশের প্রথম উইকেটের পতন হয়।
দিপু আউট হয়েছেন ৭১ বলে ১৮ রান করে। এরপর তৃতীয় উইকেটে মুমিনুলকে সঙ্গ দিতে আসেন উইকেটরক্ষক ব্যাটার লিটন দাস। প্রথম সেশনের বাকি সময়টা লিটনকে নিয়ে বেশ ভালোই সামাল দিয়েছেন মুমিনুল। হাফ সেঞ্চুরির অপেক্ষা নিয়ে ৩৮ রান করে মধ্যাহ্নভোজের বিরতিতে যান মুমিনুল। তার সঙ্গে ২১ রান নিয়ে অপরাজিত থাকেন লিটন। বাংলাদেশ ৩ উইকেটে ১০৫ রান নিয়ে লাঞ্চে যায়।
মধ্যাহ্নভোজের বিরতির পর ১১৫ বলে হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন মুমিনুল। তবে ইনিংস বড় করতে পারেননি তিনি। ব্যক্তিগত ৫০ রানেই জেইডেন সিলসের বলে এলবিডব্লিউ হয়ে ফিরে যান বাংলাদেশের এই বিশেষজ্ঞ টেস্ট ব্যাটার। এরপর লিটনকে সঙ্গ দিতে আসেন মেহেদী হাসান মিরাজ।
দুজনে মিলে বেশ ভালোই এগিয়ে নিচ্ছিলেন বাংলাদেশকে। তবে শামার জোসেফের এক লেন্থ ডেলিভারিতে এই জুটি ভেঙেছে। অফ স্টাম্পের বাইরের বল টেনে খেলতে গিয়ে ইন সাইড এজ হয়ে বোল্ড হন লিটন। ব্যক্তিগত ৪০ রানে তিনি সাজঘরে ফিরেছেন। এরপর ব্যাটিংয়ে নামেন বাংলাদেশের ব্যাটিং অর্ডারের শেষ স্বীকৃত ব্যাটার জাকের আলী।
প্রথম সেশনে ৬৫ রান তুলেছিল বাংলাদেশ। তবে একটি উইকেট হারিয়েছিল টাইগাররা। দ্বিতীয় সেশনে ২ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। রান তুলতে পারে ৬০। বাংলাদেশ ৫ উইকেটে ১৬৫ রান তুলে চা পানের বিরতিতে যায়। মিরাজ ২২ ও জাকের ৫ রান নিয়ে অপরাজিত থাকেন।
বিরতির পরই মিরাজকে হারিয়েছে বাংলাদেশ। শর্ট বলে ফাঁদ পেতেছিলেন আলজারি জোসেফ। বাউন্সার দিয়ে মিরাজকে বাধ্য করেন শর্ট লেগে ক্যাচ দিতে। আর তাতেই ১৬৬ রানে বাংলাদেশ ষষ্ঠ উইকেট হারায়। আর মিরাজ ফিরেছেন ২৩ রানে।
এরপর তাইজুল ইসলামকে নিয়ে বিপর্যয় সামাল দেন জাকের। দুজনের হাত খুলে খেলেছেন। জাকেরের সঙ্গে সপ্তম উইকেটে ৬৮ রানের জুটি গড়ার পর আউট হন তাইজুল। আলজারি জোসেফের বলে বোল্ড হওয়ার আগে ২৬ রান করেন তাইজুল। সঙ্গী ফিরে গেলেও একপ্রান্ত আগলে রেখে হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন জাকের।
শামার জোসেফকে চার মেরে তিনি হাফ সেঞ্চুরিতে পৌঁছান। তবে তাকে ইনিংস লম্বা করতে দেননি জাস্টিন গ্রেভস। ডিফেন্স করতে গিয়ে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়েছেন তিনি। এরপর হাসান মাহমুদ ও তাসকিন মিলে বাংলাদেশকে ফলো অন এড়াতে সাহায্য করেন। তবে এই দুজনের জুটি লম্বা হতে দেননি গ্রেভস। হাসান মাহমুদকে স্লিপে ক্যাচ দিতে বাধ্য করেছেন এই পেসার। এরপর আলোক স্বল্পতার কারণে আগে ভাগেই দিনের খেলা শেষ করতে বাধ্য হন আম্পায়াররা।
সংক্ষিপ্ত স্কোর-
ওয়েস্ট ইন্ডিজ (প্রথম ইনিংস)- ৪৫০/৯ (১৪৪.১ ওভার) (লুইস ৯৭, আথানেজ ৯০, হজ ২৫, সিলভা ১৪, গ্রেভস ১১৫*, রোচ ৪৭, সিলস ১৮, শামার ১১*; হাসান ৩/৮৭, তাসকিন ২/৭৬)
বাংলাদেশ (প্রথম ইনিংস)- ২৬৯/৯ (৯৮ ওভার) (জাকির ১৫, জয় ৫, দিপু ১৮, মুমিনুল ৫০, লিটন ৪০, মিরাজ ২৩, জাকের ৫৩; আলজারি ৩/৬৯, সিলস ২/৪২)