|| ডেস্ক রিপোর্ট ||
ভারতে বাজবল খেললে ৫-০ ব্যবধানে সিরিজ হারবে ইংল্যান্ড। অনেকেই এমন ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন। কিন্তু সিরিজের প্রথম ম্যাচ জিতে নিয়ে ভিন্ন কিছুর ইঙ্গিত দিয়েছিল ব্র্যান্ডন ম্যাকালামের শীষ্যরা। এরপর টানা তিন ম্যাচ হেরে সিরিজ হেরে বসেছিল দলটি। শেষ ম্যাচটা আরো বাজেভাবে হেরেছে ইংলিশরা। প্রথম ইনিংসে ব্যাটিং দাপট দেখিয়ে ২৫৯ রানের বড় লিড নেয় ভারত। জবাবে ব্যাটিংয়ে নেমে অর্ধেক দিনও টিকতে পারেনি ইংল্যান্ড।
রবিচন্দ্রন অশ্বিন একাই পাঁচ উইকেট নিলে ১৯৫ রানেই গুঁটিয়ে যায় দলটি। ফলে ইনিংস ও ৬৪ রানের হার দিয়ে ৪-১ ব্যবধানে সিরিজ শেষ করলো ইংলিশরা। ফলে এখন উল্টো অনেকে মনে করতে পারেন প্রথম টেস্টে ইংল্যান্ডের জয়পাওয়াটাই বোধ হয় এই সিরিজের সবচেয়ে বড় অঘটন ছিল।
ধর্মশালায় সকালটা ছিলো জেমস অ্যান্ডারসনময়। এদিন মাত্র একটি উইকেট নিলেই প্রথম পেসার হিসেবে টেস্টে ৭০০ উইকেটের মাইলফলক স্পর্শ করবেন তিনি। এরপর জন্য বেশি সময়ও লাগেনি। এই পেসারের অফ স্টাম্পের বাইরের লেংথ ডেলিভারি কুলদীপ যাদবের ব্যাট ছুঁয়ে উইকেটরক্ষক বেন ফোকসের গ্লাভস বন্দি হলে ধর্মশালা সাক্ষী হয় নতুন ইতিহাসের।
পরের ওভারে জসপ্রিত বুমরাহকে ফিরিয়ে ভারতের প্রথম ইনিংসের সমাপ্তি ঘটান শোয়েব বশির। ততক্ষণে ৪৭৭ রানের পাহাড়সম সংগ্রহে বড় লিড নিয়ে নিরাপদ স্থানে পৌছে যায় ভারত। এই ইনিংসে ইংল্যান্ডের হয়ে সর্বোচ্চ পাঁচ উইকেট নিয়েছেন বশির। অ্যান্ডারসন, টম হার্টলি নিয়েছেন দুটি ও স্টোকস পেয়েছেন একটি উইকেট।
দ্বিতীয় ইনিংসের শুরু থেকেই বড় লিডের চাপে ইংলিশ টপ অর্ডার ব্যাটাররা। অশ্বিনের ঘূর্ণিতে ৩৬ রান তুলতেই তিন উইকেট হারিয়ে বসে দলটি। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই শূন্য রানে বেন ডাকেটকে ফেরান এই স্পিনার। এরপর দলীয় ২১ রানে আরেক ওপেনার জ্যাক ক্রলিকেও শূন্য রানে ফেরান তিনি। এরপর অলি পোপ ১৯ রানে আউট হলে বিপদে পড়ে ইংল্যান্ডে। উঁকি দেয় বড় হারের শঙ্কা।
শুরু ধাক্কাটা সামাল দেয়ার চেষ্টা চালিয়েছেন জো রুট ও জনি বেয়ারস্টো। কিন্তু তাদের ৫৬ রানের জুটি শুধু হারের ব্যবধান কমিয়েছে ইংলিশদের। আগের ইনিংসে পাঁচ উইকেট নেয়া কুলদীপের স্পিনে ৩৯ রান করা বেয়ারস্টো এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে পড়েন। এরপর লড়াইটা ছিলো রুটের একার। এ সময় ৮৮ বলে নিজের হাফসেঞ্চুরিও তুলে নেন তিনি।
উইকেটের একপাশে থিতু হয়ে এই ব্যাটারকে আর কেউ যোগ্য সঙ্গ দিতে পারেনি। মিডল অর্ডারের দুই ব্যাটার স্টোকস ও ফোকসকেও শিকার করেছেন অশ্বিন। তাদের ফিরিয়ে পাঁচ উইকেট তুলে নিয়ে ইতিহাস গড়েন তিনি। টেস্টের এক ইনিংসে এই নিয়ে ৩৬ বার ৫ উইকেট শিকার করলেন অশ্বিন। যা ভারতীয় বোলারদের মধ্যে সর্বোচ্চ। এরপর হার্টলি ২০ ও বশির করেছেন ১৩ রান। সবশেষ সেঞ্চুরির পথে থাকা রুটকে ৮৪ রানে থামান কুলদীপ।
ফলে ইনিংসে ব্যবধানের হারের লজ্জা নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয় ইংলিশদের। দ্বিতীয় ইনিংসে অশ্বিনের পাঁচ উইকেট ছাড়া, দুটি করে উইকেট নিয়েছেন কুলদীপ ও বুমরাহ। রবীন্দ্র জাদেজা নিয়েছেন এক উইকেট। ফলে পাঁচ ম্যাচের সিরিজে ৪-১ ব্যবধানের জয় দিয়ে সিরিজ শেষ করলো ভারত।