লিটন-তানজিদে রেকর্ড ওলট-পালট, ১৪৯ রানে জিতল ঢাকা
ছবি: ঢাকাকে প্রথম জয় এনে দেয়ার নায়ক লিটন দাস (বামে) ও তানজিদ হাসান তামিম (ডানে), ক্রিকফ্রেঞ্জি
ওয়ানডে দল থেকে বাদ পড়ার দিনে বিপিএলে বিধ্বংসী এক সেঞ্চুরি করেছেন তিনি। ৫৫ বলে খেলেছেন অপরাজিত ১২৫ রানের ইনিংস। লিটনের এমন ব্যাটিংয়ের দিনে সেঞ্চুরি পেয়েছেন তানজিদ হাসান তামিমও। তরুণ ওপেনার আউট হয়েছিলেন ১০৮ রানে। তাদের দুজনের সেঞ্চুরিতে রেকর্ড ২৫৪ রানের পুঁজি পায় ঢাকা। পাহাড়সম লক্ষ্য তাড়ায় নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়ে ১০৫ রানে অল আউট হয়েছে দুর্বার রাজশাহী। এনামুল হক বিজয়ের দলকে ১৪৯ রানে হারিয়ে বিপিএলে প্রথম জয়ের দেখা গেল ঢাকা।
লিটন-রিশাদ-নাহিদকে নিয়ে কেমন হলো পিএসএলের ৬ দলের স্কোয়াড
১৩ জানুয়ারি ২৫সিলেটে জয়ের জন্য ২৫৫ রান তাড়া করতে নেমে শুরু থেকেই উইকেট হারাতে থাকে রাজশাহী। ইনিংসের প্রথম ওভারেই মোহাম্মদ হারিসকে ফিরিয়েছেন আবু জায়েদ রাহী। ডানহাতি পেসারের বলে এজ হয়ে উইকেটের পেছনে লিটন দাসের গ্লাভসে ক্যাচ দিয়েছেন পাকিস্তানের এই ওপেনার। পরের ওভারে মুকিদুল ইসলাম মুগ্ধর দারুণ এক ডেলিভারিতে ইনসাইড এজ হয়ে লিটনকে ক্যাচ দিয়েছেন বিজয়।
জিসান আলমের জায়গায় সুযোগ পেয়ে কাজে লাগাতে পারেননি সাব্বির হোসেন। মুকিদুলের বলে সাব্বির রহমানের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরেছেন ১১ রান করা এই ব্যাটার। ব্যাট হাতে জ্বলে উঠতে পারেননি আকবর আলীও। তরুণ উইকেটকিপার ব্যাটারকে বোল্ড করেন রাহী। পাওয়ার প্লেতে ৪ উইকেট হারিয়ে মাত্র ৩৪ রান তোলে রাজশাহী। আরও একবার ব্যর্থ হয়েছেন তরুণ মেহেরব। মোসাদ্দেক হোসেনের বলে ফেরা আগে মাত্র ৪ রান করেছেন তরুণ এই ব্যাটার।
৩৪ রানে ৫ উইকেট হারানোর পর জুটি গড়ার চেষ্টা করেন ইয়াসির আলী রাব্বি ও রায়ান বার্ল। ১৭ রান করা ইয়াসিরকে বিদায় করে জুটি ভাঙেন ফারমানুল্লাহ শাফি। সোহাগ গাজী, সানজামুল ইসলাম, তাসকিন আহমেদরা ফিরেছেন দ্রুতই। শেষ দিকে বার্লের অপরাজিত ৪৭ রানের ইনিংস কেবল হারের ব্যবধানই কমিয়েছে। রাজশাহী ১০৫ রানে থামলে ১৪৯ রানে জয় পায় ঢাকা। বিপিএলের ইতিহাসে রানের ব্যবধানে এটিই সবচেয়ে বড় জয়।
টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে সাবধানী শুরু করেছিলেন লিটন ও তানজিদ। খুব বেশি তাড়াহুড়ো করছিলেন না তারা দুজন। তবে পঞ্চম ওভারে সানজামুলের বিপক্ষে সমান দুটি করে ছক্কা ও চারে জড়তা কাটান তানজিদ। পরের ওভারে দ্রুত রান তোলার প্রচেষ্টা চালান লিটন। দুজনের ব্যাটে পাওয়ার প্লেতে কোন উইকেট না হারিয়ে ৫৯ রান তোলে ঢাকা। পরবর্তীতে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি তাদের দুজনকে।
দারুণ ব্যাটিংয়ে সাব্বিরের শর্ট ডেলিভারিতে ব্যাকওয়ার্ড স্কয়ার লেগ দিয়ে ছক্কা মেরে হাফ সেঞ্চুরি করেন লিটন। আরেক ওপেনার তানজিদ পঞ্চাশ ছুঁয়েছেন ৩৫ বলে বার্লের ফুলার লেংথ ডেলিভারিতে ডিপ মিড উইকেট দিয়ে ছক্কা মেরে। হাফ সেঞ্চুরির পর আরও আক্রমণাত্বক হয়ে উঠেন তারা দুজন। চার-ছক্কার ফুলঝুরিতে ৪৪ বলে সেঞ্চুরি করেন লিটন। বাংলাদেশের ব্যাটারদের মাঝে বিপিএলে এটিই দ্রুততম সেঞ্চুরির রেকর্ড।
সুপার ওভারে ইংল্যান্ডকে হারাল বাংলাদেশের মেয়েরা
৬ ঘন্টা আগে৫০ বলে সেঞ্চুরি করে এতদিন সেই রেকর্ড নিজের করে রেখেছিলেন তামিম ইকবাল। বিপিএলের পাশাপাশি টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে এটিই লিটনের প্রথম সেঞ্চুরি। আরেক ওপেনার তানজিদ সেঞ্চুরি করেছেন ৬২ বলে। বিপিএলে এটি তাঁর দ্বিতীয় সেঞ্চুরি। এর আগে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের হয়ে একশ করেছিলেন তিনি। তামিমের পর বাংলাদেশের দ্বিতীয় ব্যাটার হিসেবে বিপিএলে দুটি সেঞ্চুরি করেছেন তানজিদ।
বিপিএলে প্রথমবারের মতো দুই ওপেনারের সেঞ্চুরির রেকর্ডও গড়েছেন লিটন ও তানজিদ। এ ছাড়া উদ্বোধনী জুটিতে ২০১৩ সালে দুরন্ত রাজশাহীর বিপক্ষে খুলনা রয়্যাল বেঙ্গলসের শাহরিয়ার নাফীস ও লুই ভিনসেন্টের ১৯৭ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটিও ভেঙে দিয়েছেন তারা দুজন। পাশাপাশি ব্রেন্ডন ম্যাককালাম ও ক্রিস গেইলকেও ছাড়িয়ে গেছেন তারা। ২০১৭ সালে রংপুর রাইডার্সের হয়ে ঢাকা ডায়নামাইটসের বিপক্ষে অবিচ্ছিন্ন ২০১ রানের জুটি গড়েছিলেন ম্যাককালাম ও গেইল। তাদের ছাড়িয়ে গিয়ে লিটন ও তানজিদ থেমেছেন ২৪১ রানে।
টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে তাদের চেয়ে বেশি রানের জুটি আছে মাত্র একটি। ১০৮ রান করা তানজিদের বিদায়ে ভাঙে তাদের দুজনের জুটি। শেষ পর্যন্ত ২০ ওভারে ২৫৪ রান তুলে থেমেছে ঢাকা। বিপিএলের ইতিহাসে এটিই সর্বোচ্চ রানের পুঁজি। ২০১৯ সালে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের বিপক্ষে ২৩৯ রান করেছিল রংপুর। বিপিএলের গত আসরে একই দলের সঙ্গে ২৩৯ রানের পুঁজি পেয়েছিল কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। দুই দলের রেকর্ডই ভেঙে দিয়েছে ঢাকা।
সংক্ষিপ্ত স্কোর-
ঢাকা ক্যাপিটালস- ২৫৪/০ (২০ ওভার) (লিটন ১২৫*, তানজিদ ১০৮; শফিউল ১/৬২)
দুর্বার রাজশাহী- ১০৫/১০ (১৫.২ ওভার) (সাব্বির ১১, ইয়াসির ১৭, বার্ল ৪৭*; রাহী ২/১৫, মোসাদ্দেক ২/১৬, মুকিদুল ২/১৮)