আবারো ধুমকেতুর মতোই ফিরবেন কাটার মাষ্টার

ছবি:

অভিষেকের পর থেকেই ইনজুরির সাথে লড়াই করে আসছেন কাটার মাষ্টার মুস্তাফিজুর রহমান। গত বছর সাসেক্সের হয়ে খেলতে গিয়ে কাঁধের ইনজুরিতে পড়েছিলেন ফিজ। এরপর দীর্ঘ সময়ের জন্য মাঠের বাইরে ছিটকে পড়েন তিনি।
পরবর্তীতে ইনজুরি কাটিয়ে নিউজিল্যান্ড সফরে ফিরলেও নিজের সেরা ছন্দ আর ফিরে পাননি ফিজ। এরপর অস্ট্রেলিয়া সিরিজে দুর্??ান্ত পারফর্ম করে ফিরে আসেন মুস্তাফিজ। কিন্তু দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে গিয়ে আবারো গোড়ালির ইনজুরিতে পড়েন কাটার মাষ্টার।
সেই থেকেই ছন্দ হারিয়ে নিজেকে খুঁজছেন মুস্তাফিজ। চলতি বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগ (বিপিএল) আসরেও খুব একটা ভালো পারফর্মেন্স করতে পারেননি কাটার মাষ্টার।
৫ ম্যাচে মাত্র ৪টি উইকেট শিকার করেছেন রাজশাহী কিংসের হয়ে খেলা এই পেসার। তবে ফিজের এহেন পারফর্মেন্সের পরও খুব একটা হতাশ হচ্ছেন না কিংবদন্তী পাকিস্তানি পেসার এবং বিপিএলে সিলেট সিক্সার্সের কোচের দায়িত্ব পালন করা ওয়াকার ইউনুস।
সম্প্রতি দেশের শীর্ষস্থানীয় বাংলা দৈনিক মানবজমিনকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে ওয়াকার জানিয়েছেন প্রাকৃতিকভাবে অসাধারণ একজন পেসার মুস্তাফিজ। সুতরাং যথাসময়েই জ্বলে উঠতে পারবেন তিনি বলে বিশ্বাস তাঁর। সাবেক এই পাকিস্তানি কোচের ভাষায়,

'প্রাকৃতিকভাবে মুস্তাফিজ অসাধারণ একজন পেসার। তার বোলিংয়ের যে ধরন তা ভিন্ন। আমি তাকে দেখেছি। আমাদের বিপক্ষেও সে অসাধারণ বল করেছিল। সময়ের সঙ্গে সে অনেক উন্নতি করছিল। আইপিএলেও দারুণ বল করেছে। এরপরই ইনজুরিতে পরে।'
ইনজুরিতে পড়ার পরেই যে হারিয়ে যাবেন ফিজ এটি মানতে নারাজ ওয়াকার। যেকোনো ইনজুরি থেকেই ক্রিকেটারদের ছন্দে ফিরতে সময় লাগবে বলে মনে করেন তিনি। সুতরাং মুস্তাফিজ নিজেও ফিরে আসবেন পুরনো রূপে বিশ্বাস সিক্সার্স কোচ। তিনি বলেন,
'ইনজুরিতে পড়ে হারিয়ে যাবে এটিও বাজে কথা। ও কয়টা ম্যাচ খেলেছে এখন পর্যন্ত? যে কোনো ইনজুরি থেকে একজন ক্রিকেটারকে ফিরতে হলে সময় দিতে হয়। ম্যাচ খেলতে খেলতে সে ঠিকই ফিরে আসবে। ও হারিয়ে যাবে না।'
ওয়াকার কথা বলেছেন বাংলাদেশ দলের দুর্বলতা নিয়েও। ওয়ানডে ফরম্যাটে যথেষ্ট উন্নতি করলেও টেস্টে এখনও মিনোস হিসেবেই পরিচিত বাংলাদেশ। এর মূল কারণ হিসেবে কম টেস্ট খেলাকেই কাঠগড়ায় দাঁড়া করিয়েছেন ওয়াকার। এই ফরম্যাটে উন্নতি করতে হলে বছরে ১০-১২টি ম্যাচ খেলতে হবে বলে মনে করেন এই পাক কোচ। বলছিলেন,
'বছরে কতটা টেস্ট খেলার সুযোগ পায় বাংলাদেশ! চারটা/পাঁচটার বেশি কি খেলে? একটি দেশকে ভালো করতে হলে বছরে ১০/১২টা টেস্ট খেলতে হবে। বাংলাদেশ দল এখনো ক্রিকেট দুনিয়াতে নতুন। তারা যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছে অনেক ভালো।'
টেস্ট খেলা বাড়ানোর পাশাপাশি প্রথম শ্রেণীর ম্যাচ সংখ্যাও বাড়ানোর পরামর্শ দিলেন ওয়াকার। তবে সময়ের সাথে সাথে আরো উন্নতি হবে বাংলাদেশের বিশ্বাস তাঁর। এই প্রসঙ্গে তিনি বললেন,
'ধীরে ধীরে যেভাবেই হোক টেস্ট খেলা বাড়াতে হবে। সেই সঙ্গে ঘরোয়া প্রথম শ্রেণির ম্যাচের সংখ্যাও বাড়াতে হবে। আমি মনে করি সময়ই বদলে দেবে এ দেশকে। তারা সঠিক পথেই আছে।'
বাংলাদেশের কোচ হওয়ার প্রস্তাব পেলে কি করবেন এই প্রশ্ন রাখা হলে ওয়াকার অবশ্য কৌশলে এড়িয়েই গেলেন প্রসঙ্গটি। ক্রিকেট দুনিয়া ঘুরে বেড়াতেই বেশি পছন্দ করেন জানিয়ে সিক্সার্স কোচ বললেন,
'সত্যি কথা, জানি না প্রস্তাব পেলে কী করবো। এখন আমি যেমন আছি অনেক ভালো সময় কাটছে। কোনো কোনো দলের কোচ হিসেবে কাজ করি, ধারাভাষ্য দিচ্ছি, ক্রিকেট দুনিয়া ঘুরে বেড়াচ্ছি। নিজের ক্রিকেট শিক্ষা বেঁধে রাখতে চাই না। ঘুরে ঘুরে ছড়িয়ে দিতে চাই যে কারণে বাংলাদেশে এসেছি সিলেটের ডাকে।'