|| ডেস্ক রিপোর্ট ||
ভারতে এসে টেস্টে হারা যেন সবশেষ কয়েক দশকে নিউজিল্যান্ডের নিয়মিত চিত্র হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে এবারের ভারত সফরে নিজেদের পুরনো গল্প বদলেছে কিউইরা। বেঙ্গালুরুতে ভারতকে ৮ উইকেটে হারিয়ে ১৯৮৮ সালের পর বিরাট কোহলি-রোহিত শর্মাদের মাটিতে টেস্ট জয়ের স্বাদ পেয়েছে সফরকারীরা। শুধু কি টেস্ট জয় পুনেতে ১১৩ রান জয় নিউজিল্যান্ডকে সিরিজও জিতিয়েছে। ৬৯ বছরে ১৩ বারের চেষ্টায় প্রথমবারের মতো সফল হয়েছে তারা।
সিরিজ জেতার পর ভারতকে তাদেরই মাটিতে হোয়াইটওয়াশও করেছে নিউজিল্যান্ড। যা নিজেদের ক্রিকেট ইতিহাসে ঘরের মাঠে ভারতের প্রথম ৩-০ ব্যবধানে হোয়াইটওয়াশ হওয়া। কিউইদের এমন সাফল্যের নায়কদের একজন রাচিন রবীন্দ্র। বেঙ্গালুরুতে সিরিজের প্রথম টেস্টের প্রথম ইনিংসে ১৩৪ রানের ইনিংস খেলেছিলেন বাঁহাতি এই ব্যাটার। পরের ইনিংস তিনি অপরাজিত ছিলেন ৩৯ রানে। পুনেতে প্রথম ইনিংসে ৬৫ রান করেছিলেন রাচিন।
সিরিজের তৃতীয় টেস্টে অবশ্য ব্যাট হাতে জ্বলে উঠতে পারেননি তরুণ এই ব্যাটার। তবে সবমিলিয়ে তিন টেস্টের ৬ ইনিংসে ৫১.২০ গড়ে ২৫৬ রান করেছিলেন তিনি। নিউজিল্যান্ডের ব্যাটারের চেয়ে বেশি করতে পেরেছিলেন কেবল ঋষভ পান্ত। রাচিনের এমন পারফরম্যান্সের পেছনে চেন্নাই সুপার কিংসের ভূমিকা দেখেন রবি উথাপ্পা। ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের (আইপিএল) সবশেষ আসরে চেন্নাইয়ের হলুদ জার্সিতে খেলেছিলেন রাচিন। নিজেদের ক্রিকেটারদের দেখভালে বেশ কদর আছে আইপিএলের ফ্র্যাঞ্চাইজিদের।
যার ফলশ্রুতিতে ভারতে সফরে এসে কন্ডিশনের সঙ্গে মানিয়ে নেয়া এবং প্রস্তুতি সারতে চেন্নাইয়ের একাডেমিতে অনুশীলন করেছেন রাচিন। নিজেদের দেশের বিপক্ষে সিরিজের আগে বিদেশি একজন ক্রিকেটারকে এমন অনুশীলনের সুযোগ করে দেয়ায় চেন্নাই ফ্র্যাঞ্চাইজির সমালোচনা করেছেন উথাপ্পা। সেই সঙ্গে দেশ ও ফ্র্যাঞ্চাইজির স্বার্থের মাঝে একটা সীমারেখা থাকা উচিত বলে মনে করেন চেন্নাইয়ের সাবেক এই ক্রিকেটার।
এ প্রসঙ্গে উথাপ্পা বলেন, ‘রাচিন রবীন্দ্র এখানে এসে চেন্নাইয়ের একাডেমিতে অনুশীলন করেছিল। চেন্নাইয়ের একাডেমি খুবই ভালো। ফ্র্যাঞ্চাইজি সবসময় তাদের খেলোয়াড়দের স্বার্থ দেখবে, এটাই হওয়া উচিত। কিন্তু দেশের স্বার্থ আর ফ্র্যাঞ্চাইজির স্বার্থের মধ্যে একটা সীমারেখা থাকা উচিত। বিশেষ করে বিদেশি খেলোয়াড় যখন আমাদের দেশের বিপক্ষেই খেলতে আসে, সেক্ষেত্রে তার জন্য অবশ্যই সীমারেখা টানা প্রয়োজন।’
তিনি আরও যোগ করেন, ‘আমি এটা দেখে অবাক হই না যে চেন্নাই সবসময় তাদের খেলোয়াড়দের জন্য নিজেদের সেরাটা দেয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু উদারতার মাঝে যখন দেশের কথা আসে তখন অবশ্যই একটা সীমারেখা থাকা উচিত। যা আমরা কেউই অতিক্রম করব না। আমি হয়ত সঠিক কথা বলছি না, আমি চেন্নাইকে সবসময় ভালোবাসি।’
চেন্নাইয়ের একাডেমিতে অনুশীলন করার ফলে রাচিনের যে লাভ হয়েছে সেটাও জানিয়েছেন উথাপ্পা। তবে বাঁহাতি ব্যাটারের ১৩৪ রানের ইনিংসকে খাটো করতে দেখতে চান না তিনি। বেঙ্গালুরুতে করা সেই সেঞ্চুরির প্রশংসা করেছেন। সেই সঙ্গে সবশেষ এক থেকে দেড় বছর ধরে সব সংস্করণে নিয়মিত পারফর্ম করা রাচিনকে নিউজিল্যান্ডের ভবিষ্যত হিসেবে দেখছেন উথাপ্পা।
রাচিনের প্রশংসা করে ভারতের সাবেক ব্যাটার বলেন, ‘চেন্নাইয়ের একাডেমিতে অনুশীলনের ফলে রাচিন লাভবান হয়েছে। বেঙ্গালুরুতে ১৫৭ বলে ১৩৪ রানের ইনিংসটা সত্যিই অসাধারণ। সে অনবদ্য ব্যাটিং করেছিল। নিউজিল্যান্ডের ভবিষ্যত হিসেবে সে নিজেকে প্রমাণ করছে।’