আইপিএল

আশুতোষের ঝড় থামিয়ে মুম্বাইয়ের স্বস্তির জয়

ক্রিকফ্রেঞ্জি ডেস্ক

ক্রিকফ্রেঞ্জি ডেস্ক
প্রকাশের তারিখ: 00:25 শুক্রবার, 19 এপ্রিল, 2024

|| ডেস্ক রিপোর্ট ||

লক্ষ্যটা ১৯৩ রানের! দুইশ ছুঁইছুঁই লক্ষ্য তাড়ায় মাত্র ১৪ রানে নেই পাঞ্জাবের ৪ উইকেট। ম্যাচটা মুম্বাই কত তাড়াতাড়ি জিতে নেবে সেটাই হয়ত ভাবছিলেন সবাই। তবে হুট করেই বদলে যেতে থাকে ম্যাচের পরিস্থিতি। শশাঙ্ক সিংয়ের ঝড়ের পর আশুতোষ শর্মার চোখ জুড়ানো ব্যাটিং। আশুতোষ শর্মা যখন ব্যাটিংয়ে তখন পাঞ্জাবের রান ৫ উইকেটে ৭৫। এমন সময় শশাঙ্ককে হারিয়ে যেন একা হয়ে পড়লেন তিনি। মুম্বাইয়ের পেসারদের বিপক্ষে থামলেন না আশুতোষ। বরং ছক্কার পসরা সাজিয়ে ম্যাচে ফেরালেন পাঞ্জাবকে। ম্যাচ জিততে শেষ ৬ ওভারে কারানের দলের প্রয়োজন ছিল ৬৫ রান, হাতে কেবলই ২ উইকেট।

সমীকরণটা সহজ না হলেও আশুতোষ ও হারপ্রীত ব্রারের স্বপ্ন দেখতে থাকে পাঞ্জাব। কোয়েতজির ওভারে ১৩ রান করার পর মাধওয়ালের বিপক্ষে পাঞ্জাব পেয়েছে ২৪ রান। ম্যাচটা তখন পাঞ্জাবের হাতে মুঠোয়। কিন্তু সব কিছু বদলে যায় কোয়েতজির বলে ৬১ রান করা আশুতোষের বিদায়। জয়ের পথে থাকা পাঞ্জাবকে তখন হারতে হয় ৯ রানে। পাঞ্জাবকে হারিয়ে স্বস্তির এক জয় পেয়েছে হার্দিক পান্ডিয়ার মুম্বাই।

মুল্লানপুরে জয়ের জন্য ১৯৩ রান তাড়ায় প্রভসিমরান সিং শুরুটা করলেন জেরাল্ড কোয়েতজির ব্যাক অব লেংথ ডেলিভারিতে দারুণ চার মেরে। পরের বলে ওয়াইডসহ চার থেকে এসেছে ৫ রান। সবমিলিয়ে প্রথম দুই বলে পাঞ্জাবের পুঁজি বিনা উইকেটে ১০ রান। এমন শুরুর পর হঠাৎই ছন্দপতন হয় স্বাগতিকদের। কোয়েতজির হাত ধরে ইনিংসের তৃতীয় বলেই উইকেটের দেখা পায় মুম্বাই। সাউথ আফ্রিকার এই পেসারের ফুলার লেংথ ডেলিভারিতে ড্রাইভ করতে গিয়ে উইকেটের পেছনে থাকা ইশান কিশানকে ক্যাচ দিয়েছেন প্রভসিমরান।

পরের ওভারে ফিরেছেন তিনে নামা রাইলি রুশো। জসপ্রীত বুমরাহর দুর্দান্ত ইয়র্কারে কোন জবাবই ছিল না সাউথ আফ্রিকার এই ব্যাটারের সামনে। বুমরাহর গতি আর সুইংয়ে পরাস্ত হয়ে রুশোকে সাজঘরের পথে হাঁটতে হয়েছে ১ রানে। একই ওভারে স্যাম কারানকেও বিদায় করেছেন বুমরাহ। ডানহাতি এই পেসারের লেগ স্টাম্পে করা ফুলার লেংথ ডেলিভারিতে ফ্লিক করেছিলেন। লেগ স্টাম্পের বাইরে দিয়ে যাওয়ায় ওয়াইড দেন আম্পায়ার। তবে বুমরাহ ও হার্দিকের চাওয়ায় রিভিউ নেয় মুম্বাই।

টিভি রিপ্লেতে দেখা যায় বল উইকেটকিপার ইশানের গ্লাভসে যাওয়ার আগে ব্যাট ছুঁয়ে গেছে। যার ফলে ৬ রানে ফিরতে হয় ওপেনার কারানকে। নিজের দ্বিতীয় ওভারে বোলিংয়ে এসে কোয়েতজি ফিরিয়েছেন লিয়াম লিভিংস্টোনকে। ডানহাতি এই পেসারের শর্ট লেংথ ডেলিভারিতে পুল করতে গিয়ে টপ এজ হয়ে তারই হাতে ক্যাচ দিয়েছেন ইংলিশ এই ব্যাটার। মাত্র ১৪ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে ব্যাটিং বিপর্যয়ে পাঞ্জাব। শশাঙ্ক ও হারপ্রীত ভাটিয়া মিলে স্বাগতিকদের টেনে তোলার চেষ্টা করলেন। খানিকটা পারলেন তবে অনেকটা ধীরগতিতে।

যদিও এক প্রান্ত আগলে রেখে দ্রুত রানও তোলার চেষ্টা করলেন শশাঙ্ক। পারলেনও অনেকটা, বুমরাহর বলে ফেরার আগে খেললেন ২৫ বলে ৪১ রানের দুর্দান্ত ইনিংস। সেখান থেকে পাঞ্জাকে টানলেন আশুতোষ ও হারপ্রীত। দারুণ ব্যাটিংয়ে আকাশ মাধওয়ালের বলে মিড অফ দিয়ে ছক্কা মেরে ২৪ বলে পঞ্চাশ ছুঁলেন আশুতোষ। মুল্লানপুরে রীতিমতো ছক্কা বৃষ্টিতে ভাসাতে থাকলে ডানহাতি এই ব্যাটার। তাকে দারুণভাবে সঙ্গ দেয়ার পাশপাশি দলের প্রয়োজনে ছক্কা মারতে থাকেন হারপ্রীতও।

দারুণ ব্যাটিং করতে থাকা আশুতোষকে ১৮তম ওভারে ফিরিয়েছেন কোয়েতজি। প্রোটিয়া এই পেসারের অফ স্টাম্পের বাইরের শর্ট লেংথ ডেলিভারিতে পুল করতে গিয়ে ডিপ মিড উইকেটে থাকা মোহাম্মদ নবিকে ক্যাচ দিয়েছেন। পরের ওভারে ফিরেছেন ২১ রান করা হারপ্রীতও। শেষ দিকে কাগিসো রাবাদা ৩ বলে ৮ রান করলেও জয় পাওয়া হয়নি পাঞ্জাবের। মুম্বাইয়ের হয়ে তিনটি করে ‍উইকেট নিয়েছেন বুমরাহ ও কোয়েতজি।

এর আগে ব্যাটিং করতে নেমে ১৯২ রানের পুঁজি পায় মুম্বাই। পাঁচবারের চ্যাম্পিয়নদের হয় সর্বোচ্চ ৭৮ রানের ইনিংস খেলেছেন সূর্যকুমার যাদব। এ ছাড়া রোহিত শর্মা ৩৬ এবং তিলক ভার্মা করেছেন ১৮ বলে অপরাজিত ৩৪ রান। পাঞ্জাবের হয়ে হার্শাল প্যাটেল তিনটি এবং অধিনায়ক কারান পেয়েছেন দুটি উইকেট।