২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপ

‘মুখে সবাই বলে যেখানে দেবেন সেখানে খেলব, কিন্তু এভাবে হয় না’

ক্রিকফ্রেঞ্জি ডেস্ক

ক্রিকফ্রেঞ্জি ডেস্ক
প্রকাশের তারিখ: 11:25 শনিবার, 14 অক্টোবর, 2023

|| ডেস্ক রিপোর্ট ||

বিশ্বকাপে যাওয়ার আগে সাকিব আল হাসান জানিয়েছিলেন, দলের প্রয়োজনে যে কাউকে যেকোন পজিশনে ব্যাটিং করতে হবে। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে হারের পর ব্যাটিং অর্ডার পরিবর্তন নিয়ে প্রায় একই কথা শুনিয়েছেন নাজমুল হোসেন শান্ত। বর্তমান সময়ে বেশিরভাগ ক্রিকেটারকে বলতে শোনা যায় দলের প্রয়োজনে যেকোন জায়গায় ব্যাটিং করতে তারা প্রস্তুত।

আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে এমন কথা বললেও খুব বেশি ব্যাটারকে সাফল্য পেতে দেখা যায় না। ধারাবাহিকভাবে ব্যাটিং অর্ডার পরিবর্তন করায় প্রভাব পড়েছে বাংলাদেশের ব্যাটারদের মাঝে। ইংল্যান্ড ও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে প্রত্যাশা মেটাতে পারেননি শান্ত, সাকিবরা। এভাবে ব্যাটিং পরিবর্তন করলে যে ভালো হয় না সেটাই মনে করিয়ে দিয়েছেন মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন।

ক্রিকফ্রেঞ্জির লাইভে ব্যাটিং অর্ডার পরিবর্তন নিয়ে সালাহউদ্দিন বলেন, ‘ব্যাটিং অর্ডার ঠিক নেই, ব্যাটারদের মানসিকতাও হয়ত ঠিক নেই কে কিভাবে কোন ভূমিকায় খেলবে। একদিন কেউ খেলছে পাঁচে, একদিন তিনে, একদিন ওপেনার। আমার মনে হয় ব্যাটিং অর্ডারে ব্যাটারদের একটু স্যাটেল হতে দেয়া উচিত। যেহেতু আমরা বলি এটা মাইন্ড গেইম, আমাদের কিন্তু সেটা সেভাবে ঠিক করতে হবে আমাদের ব্যাটাররা সেটা কিভাবে মানিয়ে নিচ্ছে। মুখে মুখে সবাই বলতে পারে আমি অনেক আত্মবিশ্বাসী, যেখানে দেবেন সেখানেই খেলে ফেলব। কিন্তু এটা আসলে এভাবে হয় না।’

বিশ্বকাপের আগে নিজেদের ব্যাটিং অর্ডার ঠিক করে ফেলা উচিত ছিল বলে মনে করেন সালাহউদ্দিন। দেশসেরা এই কোচ বলেন, ‘আমার মনে হয় ব্যাটিং অর্ডার টুর্নামেন্টের আগেই স্যাটেল করা উচিত ছিল। কিন্তু এখন তো টুর্নামেন্ট শুরু হয়ে গেছে অনেক কিছুই করতে পারবেন না...। সবদিক থেকে অগোছালো একটা ব্যাটিং অর্ডার, অগোছালো পরিকল্পনা। আমি জানি না ভবিষ্যতে কি হবে।’

বিশ্বের বেশিরভাগ দলের সেরা ব্যাটারকে দেখা যায় তিন নম্বরে ব্যাটিং করতে। প্রতিভাবান শান্তকে সেই ভাবনা থেকেই গত দুই বছর ধরে শান্তকে তিন নম্বরের জন্য প্রস্তুত করছে বাংলাদেশ। ভবিষ্যতের কথা ভেবে শান্তকে নিজের পছন্দের জায়গা ছেড়ে দিয়েছেন সাকিব। শুরুর দিকে ভালো না করলেও বাংলাদেশের ব্যাটিংয়ের নির্ভরতার প্রতীক হয়ে উঠেছেন শান্ত।

বিশেষ করে ২০২৩ সালে নিজের সেরা ছন্দে আছেন। নিজের ক্যারিয়ারের ৯৭৪ রানের মাঝে ৭৬৩ রান করেছেন তিন নম্বর পজিশনে। অথচ সেই ব্যাটার বিশ্বকাপের তিন ম্যাচে খেলেছেন ভিন্ন দুই পজিশনে। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে তিনে খেললেও আফগানিস্তান ও নিউজিল্যান্ডের সঙ্গে খেলেছেন ৪ নম্বরে। রশিদ খানদের বিপক্ষে হাফ সেঞ্চুরি করলেও কিউইদের বিপক্ষে ব্যর্থ বাঁহাতি এই ব্যাটার।

সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন তাওহীদ হৃদয়। অভিষেকের পর থেকে ২০ ম্যাচের ১০টিতেই তিনে ব্যাটিং করেছেন তিনি। যেখানে পাঁচে খেলে ১০ ইনিংসে করেছেন ৩৪৮ রান। বাকি পজিশনে ব্যাটিং করে হৃদয়ের রান ৯ ম্যাচে করেছেন ২২২ রান। পাঁচে এমন পারফর্ম করা ব্যাটারকে বিশ্বকাপে খেলতে হয়েছে ৭ নম্বর পজিশনে। যেখানে দুটি ম্যাচেই ব্যর্থ হয়েছেন হৃদয়।

ব্যাটিং পজিশনে ঠিক নেই মেহেদী হাসান মিরাজেরও। তিন ম্যাচে ব্যাটিং করেছেন দুই পজিশনে। ব্যাটিং অর্ডারের এমন পরিবর্তন ভোগাচ্ছে বাংলাদেশকে। এদিকে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) গত দুই মৌসুমে সাকিবের দল ফরচুন বরিশালের উদাহরণ টেনে সালাহউদ্দিন জানিয়েছেন, সাকিবের দলের ব্যাটিং অর্ডার স্যাটেল হয় না।

সালাহউদ্দিন বলেন, ‘ভেতরে খবর তো আমরা বলতে পারব না। কিন্তু সবশেষ দুই বিপিএল থেকে বুঝেছি সাকিবের দলে যখন কেউ খেলে স্বাভাবিকভাবে ব্যাটিং অর্ডার স্যাটেল হয় না। সেটা আপনি বরিশাল দলে দেখতে পারেন, সবশেষ আসরে। তার আগের আসরেও দেখতে পারেন। আমার মনে হয় কোচ এবং অধিনায়কের দায়িত্ব সবচেয়ে বেশি এবং তাদেরকে দায়িত্বটা নেয়া উচিত।’