বাংলাদেশ - জিম্বাবুয়ে সিরিজ

৬ উইকেটের সহজ জয়ে সিরিজে আরও এগিয়ে বাংলাদেশ

ক্রিকফ্রেঞ্জি ডেস্ক

ক্রিকফ্রেঞ্জি ডেস্ক
Publish Date: 17:37 Sunday, May 5, 2024

|| ডেস্ক রিপোর্ট ||

১৩৯ রান! বাংলাদেশের জন্য লক্ষ্যটা সহজই ছিল। ম্যাচ জিততে আহামারী কিছু করতে হতো না বাংলাদেশকে। লিটন দাস ও তানজিদ হাসান তামিমের ভালো শুরুর পর কাজটা সহজ হয়েছে আরও বেশি। মাঝে কয়েকটি উইকেট তুলে নিলেও স্বাগতিকদের জয় আটকাতে পারেনি জিম্বাবুয়ে। তাওহীদ হৃদয়ের অপরাজিত ৩৭ এবং মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের ২৬ রানের ইনিংসে ৬ উইকেটের জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। প্রথম দুই টি-টোয়েন্টিতে সিরিজে ২-০ তে এগিয়ে গেল স্বাগতিকরা।

চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরি স্টেডিয়ামে সহজ লক্ষ্য তাড়ায় শুরুটা ভালো করেছিলেন বাংলাদেশের দুই ওপেনার। প্রথম ওভারে রিচার্ড এনগারাভার লেংথ ডেলিভারিতে চার মারার পরের ওভারে ব্লেসিং মুজারাবানিকে স্কুপ করে ছক্কা মেরেছেন উইকেটকিপারের মাথার উপর দিয়ে। নিজেকে ফিরে পাওয়ার মিশনে এনাগারাভার বলে পুল করেও চার মেরেছেন লিটন। অন্য প্রান্তে দাঁড়িয়ে তাকে দারুণভাবে সঙ্গ দিয়েছেন তানজিদ হাসান তামিম। তাদের দুজনের ছন্দময় ব্যাটিংয়ে বাঁধা হয়ে আসে বৃষ্টি।

ইনিংসের ৫.১ ওভারের সময় বৃষ্টি বাগড়া দিলেও খুব বেশি সময় খেলা বন্ধ থাকেনি। বৃষ্টি শেষে খেলা শুরু হওয়ার পরই উইকেট হারায় বাংলাদেশ। পাওয়ার প্লে শেষ হওয়ার আগে আইসলে এনদোলোভুর লেংথ ডেলিভারিতে স্লগ সুইপে উড়িয়ে মারতে চেয়েছিলেন তানজিদ। মিড উইকেট থেকে দৌড়ে এসে ব্রায়ান বেনেট দারুণ ক্যাচ লুফে নিলে বাঁহাতি এই ওপেনারকে সাজঘরে ফিরতে হয়। অভিষেকে অপরাজিত ৬৭ রানের ইনিংস খেলা তানজিদ দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে ফিরেছেন ১৮ রানে।

শুরুটা ভালো করলেও সময় যত বাড়তে থাকে ততই ধীরগতির ব্যাটিং করতে থাকেন লিটন। তিনে নেমে নাজমুল হোসেন শান্তও হাঁটছিলেন রয়েসয়ে। আরও একবার বৃষ্টি নামার আগে একই ওভারে সাজঘরের পথে হাঁটেন লিটন ও শান্ত। লুক জঙ্গওয়ের বলে লং অনে থাকা রায়ান বার্লকে ক্যাচ দিয়েছেন বাংলাদেশের অধিনায়ক। ১৬ রান করা শান্ত ফেরার ওভারে অফ স্টাম্পে পড়ে জঙ্গওয়ের বেরিয়ে যাওয়া ডেলিভারিতে খেলতে গিয়ে লিটন ক্যাচ দিয়েছেন জোনাথান ক্যাম্পবেলের হাতে।

রানখরায় ভুগতে থাকা লিটন আশা দেখিয়েও আউট হয়েছেন ২৫ বলে ২৩ রানে। ১১ ওভার শেষে বৃষ্টি আইনে পিছিয়ে থাকা বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে থাকেন তাওহীদ হৃদয় ও জাকের আলী অনিক। যদিও জুটি বড় হতে দেননি এনাগারাভা। বাঁহাতি এই পেসারের স্টাম্পের বলে একটু সরে গিয়ে অফ সাইডে খেলতে চেয়েছিলেন জাকের। তবে বলের লাইন মিস করে ডানহাতি এই উইকেটকিপার বোল্ড হয়েছেন এক ছয়ে ১৩ রানে। শেষ দিকে হৃদয় ৩৭ এবং মাহমুদউল্লাহ ২৬ রানের ইনিংস খেলে বাংলাদেশের জয় নিশ্চিত করেছেন।

এর আগে ব্যাটিংয়ে নেমে দলীয় ১৫ রানেই হারায় ওপেনার তাদিওনাশে মারুমানির উইকেট। ইনিংসের চতুর্থ ওভারে তাসকিন আহমেদের শেষ বলে অফ সাইডে খেলতে চেয়েছিলেন মারুমানি। তবে ব্যাটে-বলে করতে পারেননি। মাঠের আম্পায়ার সাড়া না দেয়ায় রিভিয় নেয় বাংলাদেশ। থার্ড আম্পায়ার তাকে আউট দেন। ফলে ২ রান নিয়েই ফিরতে হয় জিম্বাবুয়ের এই ব্যাটারকে।

শুরু থেকেই হাঁসফাঁস করছিলেন জিম্বাবুয়ের আরেক ওপেনার জয়লর্ড গাম্বি। তাকে আউট করেছেন মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। অষ্টম ওভারের প্রথম বলে সাইফউদ্দিনকে ক্রিজ ছেড়ে ডাউন দ্য উইকেটে খেলতে গিয়ে টাইমিংয়ের গড়বড় করেন গাম্বি। ফলে বল চলে যায় মিড অফে। সেখানে সহজ ক্যাচ নিয়েছেন শান্ত।

৩০ বলে ১৭ রান করে ফিরে যেতে হয় তাকে। দশম ওভারে বাংলাদেশকে জোড়া উইকেট এনে দিয়েছেন লেগ স্পিনার রিশাদ হোসেন। সিকান্দার রাজা চড়াও হতে চেয়েছিলেন তাকে। এক্সট্রা ডিপ কাভার দিয়ে উড়িয়ে মারতে গিয়ে লিটন দাসের দুর্দান্ত ক্যাচে আউট হতে হয়েছে জিম্বাবুয়ের অধিনায়কে। এরপর উইকেটে আসেন ক্লাইভ মাদান্দে।

তিনি এক বল পরেই ফুল লেংথের ফলে স্লিপে তানজিদ হাসান তামিমকে ক্যাচ দিয়ে আউট হন শূন্য রানে। একপ্রান্ত ধরে খেলছিলেন অভিজ্ঞ ব্যাটার ক্রেইগ আরভিন। তবে তিনিও ধৈর্য্যহারা হয়ে উইকেট বিলিয়ে দিয়েছেন। শেখ মেহেদীর বলে রিভার্স সুইপ করে চার মেরেছিলেন তিনি প্রথম বলেই। পরের বলে আভার রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে ডিপ এক্সট্রা কাভারে ক্যাচ দেন লিটনকে। ফলে ১৬ বলে ১৩ রানে শেষ হয় জিম্বাবুয়ের এই ব্যাটারের ইনিংস।

এরপর উইকেটে আসেন অভিষিক্ত ব্যাটার জোনাথন ক্যাম্পবেল। তাকে শুরুতেই জীবন দেন বাংলাদেশের ফিল্ডাররা। স্কয়াড লেগে ক্যাচ দিয়েও বেঁচে যান তিনি। জীবন পেয়ে বাংলাদেশের বোলারদের তুলোধোনা করেছেন তিনি। শরিফুল ইসলামকে লেগ সাইড দিয়ে ছক্কা মেরে শুরু। পরের ওভারে মেহেদীকে একটি চারও মারেন তিনি।

শরিফুলের আরেক ওভারে মিড উইকেটের ওপর দিয়ে ছক্কা মারতে গিয়ে শেষ হয় ক্যাম্পবেলের দর্শনীয় ইনিংস। ৩টি ছক্কা ও ৪টি চারে তার ব্যাট থেকে আসে ২৪ বলে ৪৫ রানের মারকুটে ইনিংস। শেষদিকে দারুণ ব্যাটিং করেছেন ব্র্যায়ান বেনেট। তিনি শেষ পর্যন্ত অপরাজিত ছিলেন ২৯ বলে ৪৪ রান করে। ৩ ছক্কা ও ২ চারে নিজের এই ইনিংস সাজিয়েছেন তিনি। ৪ বলে ৫ রান করে অপরাজিত থেকে মাঠ ছেড়েছেন আরেক ব্যাটার আইন্সলে এন্ডলভু। আর তাতেই লড়াইয়ের পুঁজি পেয়ে যায় জিম্বাবুয়ে।