নিদাহাস ট্রফি

নিদাহাস ট্রফির সেরা একাদশ

সৈয়দ সামি

সৈয়দ সামি
প্রকাশের তারিখ: 23:21 বুধবার, 21 মার্চ, 2018

বাংলাদেশকে হারিয়ে নিদাহাস ট্রফির শিরোপা জিতেছে ভারত। এদিকে গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে বাংলাদেশ দলের বিপক্ষে হেরে ঘরের মাঠে এই ত্রিদেশীয় টি২০ সিরিজের ফাইনাল থেকে ছিঁটকে যায় স্বাগতিক শ্রীলঙ্কা।

ভারত এই সিরিজে দ্বিতীয় সারির দল পাঠালেও ফাইনাল ম্যাচের শেষ বলে শিরোপা নিশ্চিত করে ভারত। এই সিরিজে ভারতীয়রা দাপট দেখালেও বাংলাদেশ দল স্বাগতিকদের বিপক্ষে গ্রুপ পর্বের দুই ম্যাচেই চমক দেখিয়ে জিতেছে।

তবে, পুরো টুর্নামেন্ট জুড়েই শ্রীলঙ্কার বেশ কয়েকজন ক্রিকেটার দুর্দান্ত পারফরমেন্স করেছেন। এই পারফর্মারদের মধ্যে থেকেই বেঁছে নেয়া হয়েছে নিদাহাস ট্রফির সেরা একাদশ। এক নজরে দেখে নিন একাদশটি।

শিখর ধাওয়ানঃ সদ্য শেষ হওয়া এই সিরিজে ব্যাট হাতে দুর্দান্ত খেলেছেন এই ভারতীয় ওপেনার। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে গ্রুপ পর্বের প্রথম ম্যাচে ক্যারিয়ারের প্রথম টি২০ সেঞ্চুরির খুব কাছ থেকে ফিরেছেন। এই টুর্নামেন্টে ৫ ম্যাচ খেলে ১৯৮ রান সংগ্রহ করেছেন এই ওপেনার। এই পারফরমেন্সের সুবাদেই ক্রিকফ্রেঞ্জির সেরা একাদশে জায়গা করে নিয়েছেন এই তারকা ক্রিকেটার।

রোহিত শর্মা (অধিনায়ক)ঃ রোহিত শর্মার জায়গায় থাকতে পারতেন টাইগার ওপেনার তামিম ইকবাল। তবে, এই টুর্নামেন্টে দুর্দান্ত ব্যাটিং পারফরমেন্সের সাথে অসাধারণ অধিনায়কত্বে ভারতকে শিরোপা  জিতিয়েছেন তিনি। ৫ ম্যাচে ২ অর্ধশতকে ১৭৩ রান করেছেন এই ভারতীয় ওপেনার। প্রথম দুই ম্যাচে মাত্র ২৮ রান করলেও। শেষ দুই ম্যাচে ৮৯ ও ৫৬ রানের ইনিংস খেলে দলের জয়ে বড় ভূমিকা রেখেছেন ভারতীয় দলপতি।

কুশাল পেরেরাঃ নিদাহাস ট্রফিতে শ্রীলঙ্কা মাত্র ১ টি ম্যাচে জয় পেয়েছে। তবে, পুরো আসর জুড়েই দুর্দান্ত পারফরমেন্স করে এই সিরিজের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক হয়েছেন এই লঙ্কান ব্যাটিং তারকা। ৪ ম্যাচ খেলে ৫১ গড়ে তার সংগ্রহ ২০৪ রান।

মুশফিকুর রহীমঃ এই টাইগার উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান নিদাহাস ট্রফির দ্বিতীয় সর্বাধিক রান সংগ্রাহক। ৫ ম্যাচে তার সংগ্রহ ১৯৯ রান। গ্রুপ পর্বে ভারত ও শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৭২ রানের অপরাজিত দুটি ইনিংস খেলেছেন মুশফিক। যা এই উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যানের টি২০ ক্যারিয়ারের সর্বোচ্চ রান। পুরো সিরিজে ৬৬.৩৩ গড়ে রান করেছেন মুশফিক।

মাহমুদুল্লাহ রিয়াদঃ ৫ ম্যাচে ব্যাট হাতে মাত্র ৯৮ রান করেছেন এই টাইগার ব্যাটসম্যান। এই রান দিয়ে তার সামর্থ্যের প্রমাণ দেয়া যাবে না। গ্রুপ পর্বে স্বাগতিক শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে মাত্র ১৮ বলে ৫৩ রানের এক ঝড়ো ইনিংস খেলে ১ বল হাতে রেখে দলকে জিতিয়েছেন। তাছাড়া শেষ দুটি ম্যাচ ছাড়া পুরো আসর জুড়েই বাংলাদেশ দলকে নেতৃত্ব দিয়েছেন তিনি। লঙ্কানদের বিপক্ষে প্রথম সাক্ষাতে তার অধিনায়কত্বেই দাপুটে জয় পায় টাইগাররা।

দীনেশ কার্তিকঃ নিদাহাস ট্রফির ফাইনালে টাইগার অলরাউন্ডার সৌম্য সরকারকে ইনিংসের শেষ বলে ৬ মেরে ভারতকে টুর্নামেন্ট জিতিয়েছেন দীনেশ কার্তিক। দীনেশ কার্তিক মাত্র ৮ বল খেলে ২৯ রান করে ফাইনালের ম্যাচ সেরার পুরষ্কার জিতেছেন। এই সিরিজে ৫ ম্যাচ খেলে ৮৫ রান করেছেন। কিন্তু ফাইনাল ম্যাচে খেলা অসাধারণ ইনিংসটির জন্যই তিনি সেরা একাদশে জায়গা করে নিয়েছেন।

থিসারা পেরেরাঃ স্লো ওভার রেটের কারণে লঙ্কান অধিনায়ক দীনেশ চান্দিমাল ২ ম্যাচ নিষিদ্ধ হওয়ার কারণে শ্রীলঙ্কা দলকে গ্রুপ পর্বের শেষ দুই ম্যাচ নেতৃত্ব দিয়েছেন থিসারা পেরেরা। গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে টাইগারদের বিপক্ষে মাত্র ৪১ রানের মধ্যে টপ অর্ডারের মধ্যে ৫ উইকেট হারালে কুশল পেরেরাকে নিয়ে ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে ৯৭ রান যোগ করেন থিসারা পেরেরা। যা টি২০ ক্রিকেটের ইতিহাসে ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রানের জুটি। এদিকে, বাংলাদেশের বিপক্ষে ৫৮ রানের ইনিংস খেলার আগে ভারতের বিপক্ষে মাত্র ১০ বলে ২২ রানের আরেকটি ক্যামিও ইনিংস খেলেছিলেন তিনি। ৪ ম্যাচ খেলে ৯৫ রানের সাথে বল হাতে ১টি উইকেট দখল করেছেন পেরেরা।

ওয়াশিংটন সুন্দরঃ নিদাহাস ট্রফির সেরা বোলার তিনি ৫ ম্যাচ খেলে ৮ উইকেট দখল করেছেন এই ভারতীয় স্পিনার। বাংলাদেশের বিপক্ষে গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে ভারতের হয়ে মাত্র ২২ রানে ৩ উইকেট দখল করেছিলে এই স্পিনার। ওভারপ্রতি মাত্র ৫.৭ করে রান দিয়েছেন তিনি।

যুযবেন্দ্রা চাহালঃ ভারতীয় বোলারদের মধ্যে অন্যতম সেরা পারফর্মার তিনি। ৪ ম্যাচে এই স্পিনারও ৮ উইকেট দখল করেছেন। তবে ইকোনোমিতে পিছিয়ে থেকে তিনি টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় সেরা বোলার। এই সিরিজে ওভারপ্রতি খরচ করেছেন ৬.৪৫ করে।

মুস্তাফিজুর রহমানঃ বর্তমান সময়ে বাংলাদেশ দলের অন্যতম সেরা বোলার ধরা হয় তাকে। সাম্প্রতিক সময়ে নিজের সেরা ফর্মে না থাকলেও ভারতের বিপক্ষে ফাইনালে একটি দুর্দান্ত ওভারে সবার নজর কেড়েছেন এই বাঁহাতি। ভারতের ইনিংসের ১৮ তম ওভারে বোলিংয়ে এসে মাত্র ১ রান খরচায় ১ উইকেট তুলে নিয়েছিলেন মুস্তাফিজুর। তাতেই জয়ের পথটা কঠিন হয়ে গিয়েছিল ভারতের। এই সিরিজে ৫ ম্যাচে ৭ উইকেট দখল করেছেন এই পেসার।

রুবেল হোসেনঃ বাংলাদেশি বোলারদের মধ্যে এই সিরিজে সবচেয়ে ধারাবাহিক ছিলেন এই পেসার। এই আসরে ৪ ম্যাচ খেলে ৭ উইকেট দখল করেছেন রুবেলও। পুরো আসর জুড়ে দুর্দান্ত খেলা রুবেল ভারতের বিপক্ষে ফাইনালে ১৯ তম ওভারে ২২ রান দিয়ে অনেক সমালোচনার মুখে পড়েছেন তবে নিঃসন্দেহে তিনি বাংলাদেশ দলের অন্যতম সেরা বোলার।