|| ডেস্ক রিপোর্ট ||
লক্ষ্য ৫১৬ রান! রাজশাহী বিভাগের জিততে হলে অবিশ্বাস্য কিছুই করে দেখাতে হতো খুলনা বিভাগকে। সৌম্য সরকার ও অমিত মজুমদার মিলে ভালো শুরুও এনে দিয়েছিলেন। তবুও জাতীয় ক্রিকেট লিগের প্রথম রাউন্ডে জয়ের দেখা পেতে ৩৯৬ রান করতে হতো তাদের। খুলনাকে প্রত্যাশিত শুরু এনে দেয়া সৌম্য-অমিত দুজনই সাজঘরে ফিরেছেন সেঞ্চুরি না পাওয়ার আক্ষেপকে সঙ্গী করে। বিনা উইকেটে ১২০ রান নিয়ে খেলতে নামা খুলনা ২৮৯ রানে হারিয়ে ফেলে ৭ উইকেট। দিনের খেলা শেষ হতে তখনও অনেকটা সময় বাকি। জিততে হলে দুইশ ছাড়ানো রান করতে হতো খুলনাকে। ড্র করতে অবশ্য শেষ সেশনটা খেলতে পারলেই হতো তাদের। জিয়াউর রহমান ও জীবন মিলে পরের পথটাই বেছে নিলেন। মাটি কামড়ে থাকলেন, প্রতিপক্ষের বোলারদেরও সামলালেন। শেষ বিকেলে ২৫ ওভারে দুজনে মিলে যোগ করলেন মোটে ২৪ রান। জিয়াউর ও জীবনের এমন ব্যাটিংয়েই শেষ পর্যন্ত ড্রয়ের স্বস্তি নিয়ে ফিরেছে খুলনা।
সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে আগের দিনের বিনা উইকেটে ১২০ রান নিয়ে ব্যাটিংয়ে নামেন সৌম্য ও অমিত। দিনের সপ্তম ওভারে নিজেদের প্রথম উইকেট হারায় খুলনা। দারুণ ব্যাটিং করলেও সেঞ্চুরি করতে না পারার আক্ষেপে পুড়তে হয়েছে সৌম্যকে। আগের দিনের সঙ্গে মাত্র ৯ রান যোগ করে সাজঘরে ফিরেছেন তিনি। মোহর শেখ অন্তরের পুল করতে চেয়েছিলেন বাঁহাতি এই ওপেনার। তবে টপ এজ হয়ে উইকেটকিপার প্রিতম কুমারের গ্লাভসে ক্যাচ দিয়ে ফিরতে হয়েছে ৮৯ রানের ইনিংস খেলা সৌম্যকে।
তিনে নেমে অমিতের সঙ্গে জুটি গড়ার চেষ্টা করেন এনামুল হক বিজয়। যদিও তাদের দুজনের জুটি খুব বেশি বড় হতে দেননি সাব্বির হোসেন। ডানহাতি মিডিয়াম পেসারের লেংথ ডেলিভারিতে বলের লাইন মিস করে লেগ বিফোর উইকেট হয়েছেন বিজয়। যদিও আম্পায়ারের সিদ্ধান্তে খুব বেশি খুশি ছিলেন না ২০ রান এই ব্যাটার। বিজয়ের ধারণা ছিল বল উরুতে না লাগলে তা স্টাম্পের উপর দিয়ে যেতো। বিজয়কে হারানোর পর অমিতের সঙ্গে জুটি গড়ে তোলেন মোহাম্মদ মিঠুন। তারা দুজনে মিলে যোগ করেন ৪৭ রান।
জুটির পঞ্চাশ হওয়ার আগেই মিঠুনকে বিদায় করেছেন সানজামুল ইসলাম। বাঁহাতি স্পিনারের বলে হাবিবুর রহমান সোহানের হাতে ক্যাচ দিয়েছেন ৬৪ বলে ৩০ রান করা মিঠুন। এদিকে উইকেটে থিতু হওয়া অমিত হাফ সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন। প্রথম ইনিংসে ব্যর্থ হওয়া নুরুল হাসান সোহান এবারও সুবিধা করেননি। মোহর শেখের বলে সাব্বিরকে ক্যাচ দিয়ে ফেরার আগে মাত্র ১৬ রান করেছেন। সৌম্যর মতো সেঞ্চুরি পাওয়া হয়নি অমিতেরও। ২৫৭ বলে ৮৭ রানের ইনিংস খেলা অমিতকে নিজের শিকার বানিয়েছেন শফিকুল ইসলাম।
নাহিদুল ইসলাম ও শেখ মেহেদী ও সাজঘরে ফিরেছেন দ্রুতই। ২৮৯ রানে ৭ উইকেট হারিয়ে বিপাকে পড়ে খুলনা। এমন অবস্থায় তাদের হারটা ছিল সময়ের ব্যাপার। তবে খুলনাকে ম্যাচ হার থেকে বাঁচিয়েছেন জিয়াউর ও জীবন। তারা দুজনে মিলে চতুর্থ দিনের তৃতীয় সেশনের পুরোটা সময় পার করেছেন। পুরো এক সেশন খেলে তারা রান করেছেন মাত্র ২৪। সিলেটে ড্র হওয়া ম্যাচে ৯৮ বলে ২৩ রান করে অপরাজিত ছিলেন জিয়াউর। তাকে সঙ্গ দেয়া জীবন অপরাজিত ছিলেন ৭৫ বলে ৯ রানে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
রাজশাহী বিভাগ (প্রথম ইনিংস)- ৪২৬/১০ (১০৫.৫ ওভার) (তানজিদ ১৪১, ফরহাদ ৯৩, শাখির ৬৮, প্রিতম ৪৬; মেহেদী ২/১০৭, হালিম ২/৭৫, আল আমিন ৫/৯৬)।
খুলনা বিভাগ (প্রথম ইনিংস)- ১৯৪/১০ (৬১.২ ওভার) (জিয়াউর ৫৪*, অমিত ৫২; মেহেরব ৬/৩৫)
রাজশাহী বিভাগ (দ্বিতীয় ইনিংস)- ২৮৩/৬ ডিক্লে (৫০ ওভার) (সাব্বির ১৫০, শাখির ২৪, তানজিদ ১৭; নাহিদুল ২/৬১)
খুলনা বিভাগ (দ্বিতীয় ইনিংস)- ৩১১/৭ (১২৩ ওভার) (সৌম্য ৮৯, অমিত ৮৭, মিঠুন ৩০; সানজামুল ৩/৬৬, মোহর ২/৬৫)