|| ডেস্ক রিপোর্ট ||
প্রথম ইনিংসের মতো দ্বিতীয় ইনিংসেও শেখ মেহেদী নিলেন ৫ উইকেট। ডানহাতি অফ স্পিনারের এমন বোলিংয়ের পরও ৩৭২ রানের পুঁজি পায় ঢাকা মেট্রো। মার্শাল আইয়ুবের ১৫২ রানের সঙ্গে আমিনুল ইসলাস বিপ্লবের ৭৩ রানের ইনিংসে খুলনা বিভাগকে ২০৭ রানের লক্ষ্য দেয় তারা। দুইশর বেশি রান তাড়ায় একেবারে শুরু থেকেই ওয়ানডে মেজাজে ব্যাটিং করলেন এনামুল হক বিজয়। সেঞ্চুরির আক্ষেপ নিয়ে ফিরলেও বিজয়ের এমন ইনিংসে জয়ের ভিত পায় খুলনা। জাতীয় ক্রিকেট লিগের তৃতীয় রাউন্ডে খুলনাকে ৯ উইকেটের জয় এনে দিতে বাকি কাজটা সেরেছেন অমিত মজুমদার ও ইমরুল কায়েস। অভিজ্ঞ ইমরুলের ৮০ বলে অপরাজিত ৮৩ রানের ইনিংসে মাত্র ৩৫ ওভারে ২০৭ রানের লক্ষ্য পেরিয়ে যায় খুলনা।
সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে জয়ের জন্য ২০৭ রান তাড়ায় খুলনার শুরুটা হয়েছে বেশ ভালোভাবেই। বিজয় ও অমিত সাবধানী শুরু করলেও সপ্তম ওভারে এসে রান তোলার গতি বাড়ানোর চেষ্টা করেন তারা দুজন। সপ্তম ওভারে ফাহিম হাসানের বিপক্ষে বিজয় ছক্কা মেরেছেন দুটি, সেই ওভার থেকে এসেছে ১৩ রান। এরপর প্রায় প্রতি ওভারেই বাউন্ডারি মারার চেষ্টা করেছেন খুলনার দুই ওপেনার। ফলে মাত্র ৭.৩ ওভারেই দলের রান ও তাদের জুটির রান পঞ্চাশ ছুঁয়েছে।
আক্রমণাত্বক ব্যাটিংয়ে ঢাকা মেট্রোর বোলারদের পরীক্ষা নেয়া বিজয় হাফ সেঞ্চুরি পেয়েছেন মাত্র ২৮ বলে। আশরাফুল ইসলামের বলে ডিপ এক্সট্রা কভার দিয়ে চার মারার পরের বলে সিঙ্গেল নিয়ে পঞ্চাশ ছুঁয়েছেন। প্রথম ইনিংসে ১২৫ রান করা ডানহাতি ওপেনার এবারও হাঁটছিলেন সেঞ্চুরির পথেই। তবে তাকে সেঞ্চুরি করতে দেননি আমিনুল বিপ্লব। ডানহাতি লেগ স্পিনারের ওয়াইড লং অফ দিয়ে উড়িয়ে মারতে গিয়ে শামসুর রহমান শুভকে ক্যাচ দিয়েছেন।
সেঞ্চুরি হাতছাড়া করা বিজয়কে ফিরতে হয়েছে দুই ছক্কা ও ১০ চারে ৪৭ বলে ৭১ রানের ইনিংস খেলে। তিনে নেমে আমিনুল বিপ্লবকে চার মেরে রানের খাতা খোলেন ইমরুল। একই ওভারের পঞ্চম বলে চার মেরে ১৪.৫ ওভারে দলের রান একশ পূর্ণ করে খুলনা। দলকে জেতাতে একেবারে শুরু থেকেই আক্রমণাত্বক ব্যাটিংয়ে মনোযোগী ছিলেন ইমরুল। বাঁহাতি অভিজ্ঞ এই ব্যাটার তাই হাফ সেঞ্চুরি পেয়েছেন ৪৭ বলে, ফাহিমকে ডিপ এক্সট্রা কভার দিয়ে চার মেরে। বিজয়ের মতো সেঞ্চুরি পাওয়া হয়নি ইমরুলেরও।
যদিও খুলনাকে ৯ উইকেটের জয় এনে দেয়ার দিনে তিনি অপরাজিত ছিলেন। প্রথম ইনিংসে বিতর্কিতভাবে ৪৬ রানে আউট হওয়া বাঁহাতি ব্যাটার এবার করেছেন ৮৩ রান। তাকে সঙ্গ দেয়া খুলনার ওপেনার অমিত ৮৬ বলে ৪১ রানের ইনিংস খেলে অপরাজিত ছিলেন। এর আগে প্রথম ইনিংসে অমিত করেছিলেন ১৪৫ রান। জাতীয় ক্রিকেট লিগের এবারের আসরের এবারই প্রথম জয়ের দেখা পেল খুলনা। আগের দুই রাউন্ডে রাজশাহী ও বরিশালের বিপক্ষে ড্র করেছে নুরুল হাসান সোহানের দল।
আগের দিনের ৪ উইকেটে ২৯৭ রান নিয়ে ব্যাটিংয়ে নামেন ঢাকা মেট্রোর আমিনুল বিপ্লব ও মার্শাল। ৪৮ রানে অপরাজিত থেকে দিন শেষ করা আমিনুল বিপ্লব সকালের শুরুতেই ১১৯ বলে হাফ সেঞ্চুরির দেখা পেয়েছেন। একটু পর ২৩৫ বলে দেড়শ ছুঁয়েছেন মার্শাল। যদিও দেড়শর পর বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি তিনি। ১৫২ রানের ইনিংস খেলা অভিজ্ঞ ব্যাটারকে ফিরিয়েছেন সালমান হোসেন। দারুণ ব্যাটিং করলেও সেঞ্চুরি পাওয়া হয়নি আমিনুলের।
১৭১ বলে ৭৩ রানের ইনিংস খেলা ডানহাতি ব্যাটারকে লেগ বিফোর উইকেটের ফাঁদে ফেলেছেন মেহেদী। ৩৫৮ রানে ৬ উইকেট হারানো ঢাকা মেট্রো শেষ পর্যন্ত অল আউট হয়েছে ৩৭২ রানে। অর্থাৎ ১৪ রান তুলতে শেষ ৫ উইকেট হারিয়েছে তারা। খুলনার হয়ে ৮৮ রানে ৫ উইকেট নিয়েছেন অফ স্পিনার মেহেদী। প্রথম ইনিংসে ৫ উইকেট পেতে তিনি খরচা করেছিলেন ৬২ রান। এদিকে দ্বিতীয় ইনিংসে মেহেদীর পাশাপাশি খুলনার হয়ে উইকেট নিয়েছেন আল আমিন হোসেন, সালমান ও টিপু সুলতান।