|| ডেস্ক রিপোর্ট ||
হেনরিখ ক্লাসেনের ব্যাটে ভারতকে বাগে পেয়েও জুনে ছেলেদের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ট্রফি উঁচিয়ে ধরতে পারেনি সাউথ আফ্রিকা। ছেলেদের ক্রিকেটে না হলেও মেয়েদের বিশ্বকাপে সেই দুঃখ খানিকটা ঘুচানোর সুযোগ ছিল লরা উলভার্টদের হাতে। তবে ছেলেদের মতো ২০ ওভারের ক্রিকেটে শিরোপা জিততে পারলেন না মেয়েরাও। নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে প্রোটিয়াদের শুরুটা হয়েছিল যেমন চাই তেমনই। তবে উদ্বোধনী জুটি ভাঙতেই তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ে সাউথ আফ্রিকার ব্যাটিং ইউনিট। পুরো আসর জুড়ে দাপুটে ব্যাটিং করা উলভার্ট, অ্যানেকে বশদের এদিন সুবিধা করতে দেননি অ্যামেলিয়া কার, রোসমেরি মেইরিরা। ১৫৯ রান তাড়ায় সাউথ আফ্রিকাকে থেমেছে ১২৬ রানে। দুবাইয়ে ৩২ রানের জয়ে প্রথমবারের মতো নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের শিরোপা উঁচিয়ে ধরল নিউজিল্যান্ড। গত বিশ্বকাপের মতো আরও একবার কান্না সঙ্গী করে ফিরতে হলো প্রোটিয়াদের।
দুবাই আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে শিরোপা উঁচিয়ে ধরতে হলে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে বিশ্বরেকর্ড গড়তে হতো সাউথ আফ্রিকাকে। নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ফাইনালে দেড়শো পেরোনো পুঁজি পেরিয়ে বিশ্বকাপ জেতার কীর্তি নেই কারও। ২০১৬ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ফাইনালে সবচেয়ে বেশি ১৪৯ রান তাড়া করে ট্রফি জেতার রেকর্ডটা ওয়েস্ট ইন্ডিজের। যেখানে প্রোটিয়াদের জন্য কিউদের লক্ষ্য ১৫৯ রান। প্রথমবারের মতো শিরোপা জেতার মিশনে সাউথ আফ্রিকার শুরুটা হলো প্রত্যাশিতভাবেই।
ইনিংসের শুরু থেকেই আক্রমণাত্বক ব্যাটিংয়ে মনোযোগী ছিলেন উলভার্ট। তাকে সঙ্গ দিয়ে গেছেন তাজমিন ব্রিটস। রোসমেরি মেইর লিয়া তাহুহুরা মিলে চেষ্টা করেও পাওয়ার প্লেতে উদ্বোধনী জুটি ভাঙতে পারেননি। ৬.৪ ওভারে জুটির এবং দলের রান পঞ্চাশ করেন দুই ওপেনার ব্রিটস ও উলভার্ট। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের এবারের আসরে তৃতীয়বারের মতো জুটির পঞ্চাশ করেছেন তারা দুজন। যদিও ওই ওভারেই তাদের দুজনের জুটি ভেঙেছেন ফ্রান জোনাস।
বাঁহাতি স্পিনারের বলে লং অনের উপর দিয়ে খেলার চেষ্টায় ম্যাডি গ্রিনের হাতে ক্যাচ দিয়েছেন ১৭ রান করা ব্রিটস। প্রথম উইকেট হারানোর পর রান তোলায় বেগ পেতে হচ্ছিলো প্রোটিয়াদের। চাপের মুখে রান বের করতে গিয়ে অ্যামেলিয়া কারের বলে আউট হয়েছেন উলভার্ট। ডানহাতি লেগ স্পিনারের ঝুলিয়ে দেয়া ডেলিভারিতে এক্সট্রা কভারের উপর দিয়ে খেলার চেষ্টায় সুজি বেটসের হাতে ক্যাচ দিয়েছেন ৩৩ রানের ইনিংস খেলা সাউথ আফ্রিকার অধিনায়ক। একই ওভারে অ্যানেকে বশকেও ফিরিয়েছেন অ্যামেলিয়া।
সেমিফাইনালে হাফ সেঞ্চুরি করে প্রোটিয়াদের জেতানো বশ ইসাবেলা গেজকে ক্যাচ দিয়েছেন ৯ রানে। ভালো শুরুর পরও ১০ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে ৬৪ রানের বেশি তুলতে পারেনি সাউথ আফ্রিকার। ম্যাচ জিততে হলে শেষ ১০ ওভারে ৯৫ রান করতে তো নাদিন ডি ক্লার্ক ও মারিজান কাপদের। কঠিন সমীকরণ মেলাতে বাউন্ডারির চেষ্টায় উইকেট দিয়ে গেছেন কাপ। এডিন কার্সনের ফুলার লেংথ ডেলিভারিতে স্লগ করতে গিয়ে জর্জিয়া প্লিমারকে ক্যাচ দিয়েছেন। পরের ওভারে ডি ক্লার্ককে বিদায় করেছেন রোসমেরি।
ডানহাতি পেসারের অফ স্টাম্পের বাইরের বলে ড্রাইভ করতে গিয়ে ক্যাচ দিয়েছেন শর্ট থার্ডম্যানে থাকা অ্যামেলিয়াকে। ৭৭ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে বিশ্বকাপ জয়ের স্বপ্নটা তখন ফিকে হয়ে যাওয়ার মতো অবস্থা। দলের রান একশ হওয়ার আগে সুনি লুসের বিদায়ে সাউথ আফ্রিকার হারটা প্রায় নিশ্চিত হয়ে যায়। বাকি সময়ে শুধু হারের ব্যবধান কমেছে। সাউথ আফ্রিকাকে ১২৬ রানে আটকে দেয়ার কাজটা করেছেন তিনটি করে উইকেট নেয়া অ্যামেলিয়া ও রোসমেরি।
এর আগে টস হেরে ব্যাটিং করতে নেমে শুরুটা ভালো না হলেও নিউজিল্যান্ডকে পথ দেখিয়েছেন বেটস, অ্যামেলিয়া ও ব্রোকি হ্যালিডে। তাদের তিনজনের ব্যাটে ২০ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে ১৫৮ রান তোলে কিউইরা। তাদের হয়ে সর্বোচ্চ ৪৩ রানের ইনিংস খেলেছেন অ্যামেলিয়া। এ ছাড়া হ্যালিডে ৩৮ ও বেটস ৩২ রান করেছেন। সাউথ আফ্রিকার হয়ে দুটি উইকেট নিয়েছেন এনক্লুকো এমলাবা। একটি করে উইকেট পেয়েছেন আয়াবোঙ্গো খাকা, ক্লো ট্রায়ন ও ডি ক্লার্ক।