বাংলাদেশ ক্রিকেট

সিমন্স কোচ হিসেবে কেমন?

ক্রিকফ্রেঞ্জি ডেস্ক

ক্রিকফ্রেঞ্জি ডেস্ক
Publish Date: 18:55 Tuesday, October 15, 2024

|| ডেস্ক রিপোর্ট ||

ফারুক আহমেদ বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি হয়ে আসার পরই চান্ডিকা হাথুরুসিংহের বাংলাদেশ অধ্যায় নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছিল। গুঞ্জন আছে আগের বোর্ড কর্মকর্তাদের সঙ্গে বেশ ভালো সখ্যতা ছিল এই লঙ্কান কোচের। এ কারণে তার অনেক গুরুতর অপরাধও দেখা হতো ক্ষমার দৃষ্টিতে।

যদিও হাথুরুসিংহের অধীনে বাংলাদেশ দলের সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স ও অসদাচরণের অভিযোগে তাকে আর বাংলাদেশের কোচ হিসেবে রাখা হচ্ছে না। মঙ্গলবার সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ দলের অন্তর্বর্তীকালিন কোচ হিসেবে ফিল সিমন্সের নাম ঘোষণা করেছেন বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদ।

হাথুরুসিংহের স্থলাভিষিক্ত হওয়া এই কোচ নিশ্চিতভাবেই বেশ অভিজ্ঞ। কাজ করেছেন আফগানিস্তান, আয়ারল্যান্ড, জিম্বাবুয়ে ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ জাতীয় দলে। এর মধ্যে ক্যারিবীয়দের দায়িত্ব সামলেছেন দুই মেয়াদে। ২০১৬ সালে তার অধীনেই টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের শিরোপা জিতেছিল ড্যারেন স্যামির দল।

গত বিশ্বকাপেও তিনি পাপুয়া নিউগিনির দায়িত্ব সামলেছেন। এ ছাড়া ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটের দুনিয়াতেও বেশ চাহিদাসম্পন্ন কোচ সিমন্স। তিনি সর্বশেষ পিএসএলে করাচি কিংসের প্রধান কোচের দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। আর মেজর লিগে লস অ্যাঞ্জেলস নাইট রাইডার্সের প্রধান কোচ হিসেবে দায়িত্ব সামলেছেন তিনি।

একই দলের হয়ে মেজর লিগে খেলেছেন বাংলাদেশের তারকা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসানও। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে কোচিং করানোর সুবাদে বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের কাছ থেকেই দেখেছেন এই কোচ। এখন দেখার বিষয় তার হাত ধরে বাংলাদেশের ক্রিকেট সাফল্যের চূড়ায় পৌঁছাতে পারে কিনা।

আপাতত ১০০ দিনের চুক্তিতে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি পর্যন্ত বাংলাদেশ দলের প্রধান কোচের দায়িত্ব পালন করবেন এই ক্যারিবিয়ান। এর আগে ২০১৯ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপের পর বাংলাদেশের কোচ হতে বিসিবিতে সাক্ষাৎকার দিয়েছিলেন সিমন্স। তবে তার পরিকল্পনার চেয়ে খানিকটা এগিয়েই ছিলেন রাসেল ডমিঙ্গো।

ফলে তাকে টপকে বাংলাদেশের কোচ হয়েছিলেন সাবেক এই প্রোটিয়া ক্রিকেটার। এবার তার কাঁধেই বাংলাদেশের দায়িত্ব তুলে দিয়েছে ফারুক আহমেদের বোর্ড। ২০০২ সালে সকল স্তরের ক্রিকেট খেলা থেকে অবসর নেওয়ার পর কোচিংকেই নিজের পেশা হিসেবে বেঁছে নেন সিমন্স।

২০০৪ সালে জিম্বাবুয়ে জাতীয় ক্রিকেট দলের প্রধান কোচের দায়িত্ব পান। তবে এক বছরের মাথায় ২০০৫ সালে বরখাস্ত হন তিনি। এর পর ২০০৭ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপের পর আয়ারল্যান্ড জাতীয় ক্রিকেট দলের কোচের দায়িত্ব থেকে আদ্রিয়ান বিরেল পদত্যাগ করলে সিমন্স তার স্থলাভিষিক্ত হন।

২০১৫ সাল পর্যন্ত সেই দায়িত্বে ছিলেন তিনি। এর মধ্যে বাংলাদেশ ও ভারতের অনুষ্ঠিত হওয়া ২০১১ বিশ্বকাপে আয়ারল্যান্ড দলের দায়িত্বে ছিলেন অভিজ্ঞ এই কোচ। সেবার ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়ে বড় চমক দেখিয়েছিল আইরিশরা। আর তার অধীনেই ২০১৫ বিশ্বকাপে জিম্বাবুয়ে ও ইংল্যান্ডেকে হারায় আয়ারল্যান্ড।

আইরিশদের দায়িত্ব ছাড়ার পর ওয়েস্ট ইন্ডিজের দায়িত্ব নেন সিমন্স। ২০১৬ সালে বিশ্বকাপের জয়ের পর ২০১৭ সালে তিনি পাড়ি জমান আফগানিস্তানে। সেখানে ব্যাটিং কোচ ও পরবর্তীতে প্রধান কোচ হন তিনি। ২০১৯ সালে দ্বিতীয় মেয়াদে ওয়েস্ট ইন্ডিজের দায়িত্ব বুঝে নেন এই কোচ।

২০২২ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পর ব্যর্থতার দায় কাঁধে নিয়ে সরে দাঁড়ান সিমন্স। এরপর ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটে কোচিং করালেও আর কোনো জাতীয় দলের সঙ্গে যুক্ত হননি তিনি। এবার তিনিই সামলাবেন বাংলাদেশ দলের দায়িত্ব। নতুন কোনো কোচ যোগ দিলে বাংলাদেশের দর্শক সমর্থকরা আশায় বুক বাধেন। এবার সেই প্রত্যাশা পূরণের দায়িত্ব পুরোটাই সিমন্সের কাঁধে।