|| ডেস্ক রিপোর্ট ||
একটা সময় ছিল বোলিংয়ে বাংলাদেশের সাফল্য মানেই স্পিনারদের রাজত্ব। মোহাম্মদ রফিক থেকে আব্দুর রাজ্জাক, সাকিব আল হাসান কিংবা বর্তমানের মেহেদী হাসান মিরাজ, বাংলাদেশের সাফল্যে নিজেদের ঘূর্ণি দেখিয়েছেন নিয়মিতই। একাদশে স্পিনারদের ঠাসাঠাসিতে পেসারদের জায়গা পাওয়াই কঠিন। দেশের ক্রিকেটের সংস্কৃতি এমন একটা পর্যায়ে ছিল যেখানে একমাত্র পেসার কয়েক ওভার বোলিং করে বলটা পুরাতন করবেন না স্পিনাররা এসে প্রতিপক্ষের ব্যাটারদের চেপে ধরবেন।
বাংলাদেশের এমন প্রেক্ষাপট বদলে গেছে সবশেষ কয়েক বছরে। স্পিনের দেশ হিসেবে চিরচেনা বাংলাদেশে রীতিমতো পেস বিপ্লব ঘটিয়েছেন তাসকিন আহমেদ, শরিফুল ইসলাম, ইবাদত হোসেন, খালেদ আহমেদ কিংবা তরুণ তানজিম হাসান সাকিব, হাসান মাহমুদরা। সবশেষ কয়েক বছরে বাংলাদেশের বেশিরভাগ বড় জয়ে সবচেয়ে বেশি অবদান রেখেছেন পেসাররা। সাম্প্রতিক সময়ে একাদশেও দেখা মেলে পেসারদের আধিক্যতা।
পাকিস্তান সফরের দুই টেস্ট এবং ভারতের চেন্নাই টেস্ট, সবখানে তিন পেসার নিয়ে মাঠে নেমেছিল বাংলাদেশ। পেস আগুনে সাফল্যও পাওয়া গেছে হাতেনাতে। ছেলেদের ক্রিকেটে বদল এলেও মেয়েদের ক্রিকেটে এখনও রয়ে গেছে পুরনো সেই রীতি। রাবেয়া খান, স্বর্ণা আক্তার, নাহিদা আক্তার, ফাহিমা খাতুনদের ভিড়ে খানিকটা ব্রাত্য পেসাররা। দেশে কিংবা বিদেশে সবখানে এখনও দাপটের নাম স্পিনার। তবে এমন সংস্কৃতি বদলাতে চান মেয়েরা।
এ প্রসঙ্গে দিশা বিশ্বাস বলেন, ‘অবশ্যই, আমাদের সবসময় চেষ্টা থাকে যেন আমরা দলের প্রয়োজন অনুযায়ী আমরা আমাদের সেরা পারফরম্যান্সটাই করতে পারি। আগে ছেলেদের দলেও আমরা দেখেছি একটা সময় উনারাও একজন-দুজন পেসার নিয়ে ম্যাচ খেলিয়েছে। এখন আমাদের ছেলেদের দলে চার-পাঁচজন করে পেসার খেলছে। সুতরাং আমরাও সেই জিনিসটা লক্ষ্য করছি যেন আমরা আমাদের পারফরম্যান্স দিয়ে মেয়েদের একাদশে তিন-চারজন পেসার খেলতে পারি। এগুলো আমাদের নিজেদেরকে করতে হবে। আমাদের পারফরম্যান্স দিয়ে সেই জায়গাটা তৈরি করব।’
নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ খেলতে বর্তমানে সংযুক্ত আরব আমিরাতে বাংলাদেশ। আইসিসির একাডেমি মাঠে চার পেসার দিশা, মারুফা আক্তার, রিতু মনি এবং জাহানারা আলমকে নিয়ে কাজ করছেন তালহা জুবায়ের। বিসিবির প্রকাশিত এক ভিডিওতে নারী পেসারদের নিয়ে আশার কথা শুনিয়েছেন বাংলাদেশের সাবেক এই পেসার। তালহা মনে করেন, নিজেদের সামর্থ্য অনুযায়ী পারফর্ম করতে পারলে পেস ইউনিট হিসেবে ভালো জায়গায় যাওয়া সম্ভব।
এ প্রসঙ্গে তালহা বলেন, ‘পেস অ্যাটাক নিয়ে আশাবাদী কারণ আমাদের স্কোয়াডে তিনটা, রিতুসহ চারটা... আমি রিতুকে যদি মিডিয়াম পেসার বলি তাহলে চারটা পেস বোলার আমাদের দলে আছে। মারুফা খুবই সামর্থ্যবান একজন পেসার। মারুফা আমাদের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বোলার। দিশা, জাহানারা আছে, আমি মনে করি ওদের যে সামর্থ্য আছে এটাই যদি ওরা করে দেখাতে পারে আমরা পেস বোলিং ইউনিট হিসেবে খুব ভালো একটা জায়গায় থাকতে পারব।’
জাহানারও ছেলেদের মতো পেস ইউনিট দেখার আশায় আছেন। তবে সেটার জন্য নিজেদের প্রমাণ করতে হবে বলে দিশা, মারুফাদের মনে করিয়ে দিয়েছেন তিনি। জাহানারা বলেন, ‘আমিও চাই বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দলেও এমন একটা পেস ইউনিট তৈরি হোক যেখানে কিনা দুই থেকে তিনজন পেসার প্রত্যেক ম্যাচে খেলতে পারে স্পিনের পাশাপাশি। এটা করতে হলে আমাদের প্রথমত প্রমাণ করতে হবে মেইন ম্যাচে যে আমরা পেস বোলিং বিভাগ থেকে অবদান রাখতে পারি। আমরা খুবই আশাবাদী এবং আমার বিশ্বাস আছে আমরা পারব।’