|| ডেস্ক রিপোর্ট ||
টেস্ট ক্রিকেটে ভারতের হয়ে সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত রানের ইনিংসের কথা যদি জানতেন তাহলে সেটিকে ছাড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করতেন, প্রথম দিনের খেলা শেষে হাসতে হাসতে এমনটা বলছিলেন শেফালি ভার্মা। ব্যক্তিগত ইনিংসে সাবেক অধিনায়ক মিথালি রাজকে ছাড়িয়ে যেতে না পারলেও ছক্কার রেকর্ডে পেছনে ফেলেছেন নিজেকে। সঙ্গে ছাড়িয়ে গেছেন অ্যালিসা হিলি, অ্যানাবেল সাদারল্যান্ডদেরও। ব্যক্তিগত রেকর্ডের সঙ্গে স্মৃতির মান্ধার সঙ্গে জুটির ইতিহাসও গড়েছেন শেফালি। চেন্নাইয়ে ৪ উইকেট হারানোর দিনে সাউথ আফ্রিকার বিপক্ষে ৫২৫ রান তুলেছে ভারত।
এমএ চিদাম্বারাম স্টেডিয়ামে টস জিতে আগে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন ভারতের অধিনায়ক হারমানপ্রীত কৌর। খানিকটা ধীরগতির শুরু করলেও সময়ের সাথে সাথে নিজেদের ব্যাটিংয়ের ধরণ বদলে ফেলেন স্মৃতি ও শেফালি। দিনের প্রথম সেশনে ২৮ ওভারে ১৩০ রান করে স্বাগতিকরা। লাঞ্চে যাওয়ার আগেই হাফ সেঞ্চুরি পেয়েছেন ভারতের এই ওপেনার। স্মৃতি ৭৮ বলে হাফ সেঞ্চুরি করার পর শেফালি পঞ্চাশ ছুঁয়েছেন ৬৬ বলে। মাসাবা ক্লাসের ফুলার বলে চার মেরে হাফ সেঞ্চুরি করেছেন তরুণ এই ওপেনার।
ফিল্ড সেটআপ অনুযায়ী সঠিক জায়গায় বোলিং করতে গিয়ে সেভাবে সুবিধা করতে পারছিলেন সাউথ আফ্রিকার বোলাররা। যদিও ব্যক্তিগত ৩৩ রানে থাকার সময় স্মৃতিকে ফেরার একটা সুযোগ তৈরি করেছিল সফরকারীররা। রান নেয়ার জন্য মিড উইকেটে ঠেলে দিয়েছিলেন স্মৃতি, তবে হাফ চান্স লুফে নিতে পারেননি মারিজান কাপ। লাঞ্চ থেকে ফিরে অনেকটা টি-টোয়েন্টি মেজাজে রান তুলতে থাকেন ভারতের দুই ওপেনার। দ্বিতীয় সেশনে ৩২ ওভার থেকে এসেছে ২০৪ রান। সেই সেশনে সেঞ্চুরি করেছেন দুজনই।
মালাবার বলে ফ্লিক করে ফাইন লেগ দিয়ে চার মেরে টেস্ট ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন শেফালি। ১১৩ বলে সেঞ্চুরি করা ডানহাতি এই ব্যাটার ছাড়িয়ে গেছেন অভিষেক টেস্টে ৯৬ রানের ইনিংসকে। পরের ওভারে একশ করেছেন স্মৃতিও। ডেলমি টাকারের বলে ডিপ কভারে ঠেলে দিয়ে ১২২ বলে সেঞ্চুরি করেছেন বাঁহাতি এই ওপেনার। সবশেষ পাঁচ ম্যাচে এটি তার চতুর্থ সেঞ্চুরি। ইনিংসের ৫২তম ওভারে এসে স্মৃতি ও শেফালির অপ্রতিরোধ্য জুটি ভাঙেন টাকার।
ডানহাতি অফ স্পিনারের অফ স্টাম্পের বাইরের ঝুলিয়ে দেয়া ডেলিভারিতে ড্রাইভ করতে গিয়ে এজ হয়ে স্লিপে ক্যাচ দিয়েছেন। ১৪৯ রান করা স্মৃতির বিদায়ে ভাঙে শেফালির সঙ্গে তার ২৯২ রানের জুটি। মেয়েদের ক্রিকেটের ইতিহাসে টেস্টে এটিই সর্বোচ্চ রানের উদ্বোধনী জুটি। পেছনে ফেলেছেন পাকিস্তানের কিরান বালুচ ও সাজিদা শাহর ২৪২ রানের জুটিকে।
এদিকে তিনে নেমে সুবিধা করতে পারেননি সুবা সাথিশ। ফিরেছেন মাত্র ১৫ রানে। স্মৃতি না পারলেও ডাবল সেঞ্চুরি করেছেন শেফালি। টাকারের বলে এক রান নিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রথমবারের মতো ডাবল সেঞ্চুরি করেন ডানহাতি এই ওপেনার। ভারতের দ্বিতীয় ব্যাটার হিসেবে টেস্টে ডাবল সেঞ্চুরি করেছেন শেফালি। এর আগে ২০০৪ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম ভারতীয় হিসেবে ২১৪ রানের ইনিংস খেলেছিলেন মিথালি।
এরপর অবশ্য বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। রান আউট হয়েছেন ২০৫ রানের অনবদ্য ইনিংস খেলে। তৃতীয় সেশনে হাফ সেঞ্চুরি করেছেন জেমিমাহ রদ্রিগেজ। ৫৫ রান করে ফিরে গেছেন তিনি। এরপর রিচা ঘোষকে সঙ্গে নিয়ে প্রথম দিনের খেলা শেষ করেন হারমানপ্রীত। রিচা ৪৩ এবং হারমানপ্রীত অপরাজিত ৪২ রানে। সাউথ আফ্রিকার হয়ে টাকার দুটি এবং নাদিনে ডি ক্লার্ক নিয়েছেন একটি উইকেট।