|| ডেস্ক রিপোর্ট ||
সাউথ আফ্রিকাই ক্রিকেট বিশ্বের একমাত্র দল যারা কখনো আইসিসির শিরোপা জিতেনি, তবুও তাদের পরাশক্তি হিসেবে বিবেচনা করা হয়। শিরোপা জেতা তো দূর.. কখনো ফাইনালই খেলতেই পারেনি দলটি। ফাইনাল না খেললেও আইসিসির ওয়ানডে বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত চারবার সেমিফাইনাল খেলেছে দলটি।
১৯৯২ সালে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল খেলে সাউথ আফ্রিকা। সেবার দুর্ভাগ্যকে সঙ্গী করেই সেমিফাইনাল থেকে বাদ পড়ে সাউথ আফ্রিকা। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে খেলার এক পর্যায়ে ২২ বলে ১৩ রান লাগত প্রোটিয়াদের। যদিও বৃষ্টির কারণে ম্যাচের সমীকরণ নেমে আসে এক বলে ২১ রানে। সেই 'অসম্ভব' সমীকরণের ম্যাচটি জিততে পারেনি সাউথ আফ্রিকা।
পরবর্তীতে ১৯৯৯ সালের বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টাই করে সাউথ আফ্রিকা। যদিও সুপার সিক্সের পয়েন্ট টেবিলে অস্ট্রেলিয়া উপরের দিকে থাকায় ফাইনালে যাওয়া হয় না প্রোটিয়াদের। এরপর থেকে 'চোকার' হিসেবেই পরিচিত তারা। ২০০৭ এবং ২০১৫ বিশ্বকাপেও আশা জাগানিয়া পারফরম্যান্সের পরও বাদ পড়ে যায় দলটি। আরও জোরালো হয় তাদের 'চোকার' তকমাটি।
এবারের বিশ্বকাপ খেলাটা আগেভাগেই নিশ্চিত করেছে সাউথ আফ্রিকা। বিশ্বকাপকে সামনে রেখে শক্তিশালী দলও ঘোষণা করেছে তারা। দলটিতে আছেন কাগিসো রাবাদা, লুঙ্গি এনগিদিসহ ছয়জন পেসার। আছে টেম্বা বাভুমার নেতৃত্বাধীন শক্তিশালী টপ অর্ডারও।
এবারের বিশ্বকাপে কেবল মুম্বাইতে দুটি ম্যাচ খেলবে সাউথ আফ্রিকা। এ ছাড়া বাকি সব ভেন্যুতেই একটি করে ম্যাচ খেলবে দলটি। যেকোনো ভেন্যুতেই কার্যকরী ভূমিকা পালন করতে পারে দলটির অভিজ্ঞ এবং তারুণ্যের মিশেলের টপ অর্ডার।
শক্তির দিক-
বোলিং, ব্যাটিং মিলিয়ে এই বিশ্বকাপের অন্যতম সেরা দল সাউথ আফ্রিকা। উপমহাদেশের কন্ডিশন মাতাতে তাবরাইজ শামসি এবং কেশভ মহারাজের মতো দুজন অসাধারণ স্পিনার আছেন তাদের দলে। কাগিসো রাবাদার কথা না বললেই নয়। ভারতের মাঠগুলোতে গত কয়েক বছর নিয়মিতই আইপিএল খেলেছেন কাগিসো রাবাদার মতো পেসার। এবারের বিশ্বকাপে নিজের সেরাটা নিঙরে দিতে চাইবেন এই পেসার। আছেন এনগিদিও।
এ ছাড়াও এই দলের মিডল অর্ডারে আছেন র্যাসি ভ্যান ডার ডাসেন, হেনরিখ ক্লাসেন, ডেভিড মিলারের মতো অভিজ্ঞ ক্রিকেটার। এসব কন্ডিশনে নিয়মিত আইপিএল খেলেছেন এই দুজন। এদের মধ্যে ক্লাসেন আছেন স্বপ্নের মতো ফর্মে। এই বছর দুটি সেঞ্চুরি, ৫৮.৫৫ গড় এবং ১৫১.৪৩ স্ট্রাইক রেটে ব্যাটিং করেছেন তিনি। এই সময়ে ২৫টি ছক্কাও হাঁকান তিনি।
দুর্বলতা-
এই দলে দুর্বলতা তেমন নেই। অভিজ্ঞতা এবং তারুণ্যের সত্যিকারের মিশেলে দলটি বেশ গোছানো। তবে ইনজুরির কারণে এই দলে নেই অ্যানরিখ নরকিয়া। আইপিএলে দিল্লি ক্যাপিটালসের হয়ে নিয়মিত খেলা এই পেসারের অনুপস্থিতি অনুভব করতে পারে আইসিসির র্যাঙ্কিংয়ে চারে থাকা দলটি।
যার দিকে চোখ থাকবে-
কুইন্টন ডি কক- এবারের বিশ্বকাপ দিয়ে ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ইতি টানবেন ডি কক। আইপিএলে লক্ষ্ণৌ সুপার জায়ান্টসের হয়ে খেলা এই ওপেনার নিশ্চিতভাবেই নিজের শেষ বিশ্বকাপ রাঙাতে চাইবেন। ওয়ানডে ক্যারিয়ারে ১৭ সেঞ্চুরি, ৩০ হাফ সেঞ্চুরির সাহায্যে প্রায় ৪৫ গড়ে ছয় হাজার ১৭৬ রান করেছেন তিনি। এবার নিঃসন্দেহে এই পরিসংখ্যানকে পূর্ণতা দিতে চাইবেন তিনি।
সাউথ আফ্রিকার ১৫ জনের স্কোয়াড:- টেম্বা বাভুমা (ক্যাপ্টেন), জেরাল্ড কোয়েটজি, কুইন্টন ডি কক, রিজা হ্যান্ডরিক্স, মারকো জানসেন, হেনরিখ ক্লাসেন, অ্যান্ডিলে ফেহলুকায়ো, কেশব মহারাজ, এইডেন মার্করাম, ডেভিড মিলার, লুঙ্গি এনগিদি, লিজার্ড উইলিয়ামস, কাগিসো রাবাদা, তাবরাইজ শামসি ও র্যাসি ভ্যান ডার দাসেন।