|| ডেস্ক রিপোর্ট ||
৫ ঘণ্টার বিভীষিকাময় সমুদ্র যাত্রার পর বাংলাদেশ দল পৌঁছেছে ডমিনিকায়। সেন্ট লুসিয়া থেকে মার্টিনিক হয়ে ডমিনিকা আসার পথে বাংলাদেশ দলের অনেক ক্রিকেটার 'মোশন সিকনেসে' আক্রান্ত হয়েছিলেন। যদিও ভালো খবর ক্রিকেটারসহ দলের অন্যরা এখন স্বাভাবিক আছেন।
যদিও প্রথম টি-টোয়েন্টি মাঠে গড়ানো নিয়ে শঙ্কা রয়েছে বৃষ্টির কারণে। গত দুদিন ধরেই ডমিনিকায় আটলান্টিকে সৃষ্ট ঝড়ের কারণে টানা বৃষ্টি হচ্ছে। আবহাওয়ার পূর্বাভাস অনুযায়ী ম্যাচের দিনও বৃষ্টি হওয়ার কথা রয়েছে। এই বেরসিক বৃষ্টির কারণে যদি ম্যাচটি ভেস্তে যায় তবে সবচেয়ে বেশি হতাশ হবেন স্থানীয় দর্শকরা।
কারণ এই ম্যাচ দিয়েই ৫ বছর পর ডমিনিকার উইন্ডসর পার্কে মাঠে গড়াতে যাচ্ছে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট। ২০১৭ সালের প্রলয়ঙ্করী হারিকেন মায়ার কারণে উইন্ডসর পার্ক পরিণত হয়েছিলে ধ্বংসস্তূপে। সাড়ে ৬ মিলিয়ন ডলার ব্যয় করে আবারও স্টেডিয়ামটিকে খেলার উপযুক্ত করা হয়েছে।
বাংলাদেশের দুটি টি-টোয়েন্টি এই মাঠে হওয়ার কথা রয়েছে। বাংলাদেশ অবশ্য এর আগেও এই মাঠে খেলেছে। সেই পরিসংখ্যান ঘাটতে হলে ফিরে যেতে হবে ২০০৯ সালে। সেবার ওয়ানডে সিরিজের দুটি ম্যাচ এখানে খেলেছিল বাংলাদেশ। সেই দলের সাকিব আল হাসান আর মাহমুদউল্লাহ রিয়াদই আছেন কেবল এই টি-টোয়েন্টি সিরিজের দলে।
বাংলাদেশ সর্বশেষ ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে টি-টোয়েন্টি খেলেছে ২০১৮ সালে। সেবার যুক্তরাষ্ট্রে হওয়া সিরিজটিতে বাংলাদেশ জয় পেয়েছিল ২-১ ব্যবধানে। বাংলাদেশ এবারও নিজেদের সেই ফর্ম ধরে রাখতে চাইবে যেকোনোভাবে।
বাংলাদেশকে স্বপ্ন দেখাচ্ছে ডমেনিকার স্পিন বান্ধব উইকেটও। এখানে ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে পারেন সাকিব, নাসুম আহমেদরা। বিশেষ করে নাসুম গত ১২ মাসে বাংলাদেশের সেরা বোলারদের একজন। এই সময়ের মধ্যে ১৭.৪৫ গড়ে তিনি নিয়েছেন ৩৫ উইকেট।
সাকিব-নাসুমের পাশাপাশি স্পিন আক্রমণে ভাগ বসাতে পারেন মেহেদী হাসান মিরাজ বা শেখ মেহেদী। যদিও বাংলাদেশ হয়তো একাদশে দুইজনের বেশি স্পিনার রাখবে না। সেক্ষেত্রে ব্যাটিংয়ে বাড়তি কিছু যোগ করার জন্য দুই মেহেদীর একজন খেলবেন সেটা প্রায় নিশ্চিত। বোলিং আক্রমণে থাকতে পারেন তিন পেসার তাসকিন আহমেদ, মুস্তাফিজুর রহমান ও শরিফুল ইসলাম।
টেস্ট সিরিজে বাংলাদেশ দলকে বেশ ভুগিয়েছে বাজে ব্যাটিং। টি-টোয়েন্টি সেই ধকল কাটিয়ে উঠতে চাইবে টাইগাররা। এই ফরম্যাটে নেই অভিজ্ঞ ওপেনার তামিম ইকবাল। ফর্ম হারিয়ে দলের বাইরে নাইম শেখ। ঘরোয়া ক্রিকেটে দারুণ পারফর্ম করা এনামুল হক বিজয় এই ম্যাচ দিয়ে আবারও ফিরছেন সীমিত ওভারের ক্রিকেটে।
তার সঙ্গী হতে পারেন মুনিম শাহরিয়ার। অভিজ্ঞ মুশফিকুর রহিম না থাকায় তিনে দেখা যেতে পারে লিটন দাসকে। চারে সাকিব, পাঁচে মাহমুদউল্লাহ অটোমেটিক চয়েজ। ছয়ে আফিফ হোসেন, সাতে নুরুল হাসান সোহান খেলবেন ফিনিশার হিসেবে।
বাংলাদেশ এখন পর্যন্ত ক্যারিবীয়দের বিপক্ষে ১২টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেছে। এর মধ্যে ৭টিতেই হারতে হয়েছে টাইগারদের। বাকি ৫টিতে জয় পেয়েছে টাইগাররা। এবার দুই ম্যাচের সিরিজে ক্যারিবীয়দের হোয়াইটওয়াশ করলে পরিসংখ্যানে সমানে সমান হওয়ারও সুবর্ণ সুযোগ রয়েছে বাংলাদেশের সামনে।
সিরিজ শুরুর আগে দারুণ এক মাইলফলকের সামনে রয়েছেন টাইগার অলরাউন্ডার সাকিব। টি-টোয়েন্টিতে দ্বিতীয় বাংলাদেশি হিসেবে ২ হাজার রানের সামনে রয়েছেন তিনি। মাইলফলক ছুঁতে তার প্রয়োজন আর ৯২ রান। তার আগে এই কীর্তি গড়েছেন কেবল মাহমুদউল্লাহ।
বাংলাদেশ (সম্ভাব্য একাদশ)-
এনামুল হক বিজয়, মুনিম শাহরিয়ার, লিটন দাস, সাকিব আল হাসান, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, আফিফ হোসেন, নুরুল হাসান সোহান, মেহেদী হাসান মিরাজ/শেখ মেহেদী, তাসকিন আহমেদ, মুস্তাফিজুর রহমান ও শরিফুল ইসলাম।