বাংলাদেশ - সাউথ আফ্রিকা সিরিজ

জয়ের মন্থর ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশের স্বস্তি

ক্রিকফ্রেঞ্জি করেসপন্ডেন্ট

ক্রিকফ্রেঞ্জি করেসপন্ডেন্ট
প্রকাশের তারিখ: 11:45 মঙ্গলবার, 22 অক্টোবর, 2024

|| ক্রিকফ্রেঞ্জি করেসপন্ডেন্ট ||

বাংলাদেশকে প্রথম ইনিংসে অল্পে গুঁড়িয়ে দিয়েও অস্বস্তিতে থেকে প্রথম দিন শেষ করেছিল সাউথ আফ্রিকা। দ্বিতীয় দিন কাইল ভেরেইনার সেঞ্চুরিতে দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়িয়ে ২০২ রানের লিড নেয় সফরকারীরা। দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নামা বাংলাদেশ শুরুতে জোড়া ধাক্কা খেলেও, মাহমুদুল হাসান জয়ের দৃঢ়তায় ১০১ রানে পিছিয়ে থেকে দিন শেষ করে বাংলাদেশ। 

মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সাউথ আফ্রিকার চেয়ে ২০২ রানে পিছিয়ে থেকে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা একেবারেই ভালো হয়নি বাংলাদেশের। দলীয় ৪ রানে সাদমান ইসলামকে শর্টলেগে ক্যাচ বানিয়ে বিদায় করেন কাগিসো রাবাদা। এক রানে ডি জর্জির হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন এই ওপেনার। তার বিদায়ের পর ক্রিজে নেমে মুমিনুল হক ক্রিজে টেকেছেন মাত্র ৩ বল। রানের খাতা খোলার আগেই স্লিপে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন এই ব্যাটার। 

দুই ব্যাটারকে দ্রুত হারিয়ে ফেলার পর হাল ধরেন জয় ও নাজমুল হোসেন শান্ত। দেখে শুনে সাবধানী ব্যাটিং করে দলকে তারা নিয়ে যান ৫০'র ঘরে। কিন্তু নিজেদের মধ্যে ৫০ রানের জুটি গড়ার পর কেশভ মহারাজের বলে লেগ বিফরের ফাঁদে পড়েন শান্ত। ৪৯ বলে ২৩ রান করে বিদায় নেন এই ব্যাটার। 

শান্তর বিদায়ের পরও একপ্রান্তে টিকে থেকে স্কোরবোর্ডে নিয়মিত রান যোগ করতে থাকেন জয়। তাকে দারুণভাবে সঙ্গ দেন মুশফিকুর রহিম। খানিকটা ওয়ানডে মেজাজে খেলেই মুশফিক পৌঁছে যায় ২৬ বলে ৩১ রানে। এছাড়া মন্থর ব্যাটিংয়ে ৮০ বলে ৩৮ রান করে দিন শেষ করেন জয়। ১০১ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে তৃতীয় দিনের খেলা শুরু করবে বাংলাদেশ। 

এর আগে দ্বিতীয় দিন ব্যাট করতে নেমে শুরুটা দেখে শুনেই করেন উইয়ান মুল্ডার ও ভেরেইনা। নতুন সকালের প্রথম ঘন্টায় সাবলীল ব্যাটিং করে উল্টো বাংলাদেশের বোলারদের চাপে রেখেছে এই জুটি। চাপের মুখে চমৎকার ব্যাটিংয়ে পঞ্চাশ করেন ভেরেইনা। ৬৭ বলে ক্যারিয়ারের চতুর্থ ফিফটি করতে ৫টি চার মারেন দক্ষিণ আফ্রিকার উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যান। ভেরেইনার সঙ্গে ভিয়ান মুল্ডারের জুটিতে দারুণভাবে এগিয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা।

বাংলাদেশের স্পিনারদের মোকাবিলা করতে বেশ কার্যকরভাবে সুইপ, রিভার্স সুইপ করছেন ভেরেইনা ও মুল্ডার। এমনকি স্টাম্পের ওপর থেকে কাট করতেও পিছপা হচ্ছেন না দুই ব্যাটসম্যান। প্রথম ঘন্টায় বাংলাদেশের বোলারদের মাথার ঘাম পায়ে ফেলে দলের লিড ১০০'র ঘরে নিয়ে যান দুজন। তবে একবার উইকেটের সুযোগ তৈরি করেছিলেন নাঈম হাসান। কিন্তু ভিয়ান মুল্ডারের ব্যাটের ভেতরের কানা ছুঁয়ে প্যাডে লেগে বল উঠে গেল শর্ট লেগের দিকে।

কিন্তু আলসেভাবে বাম হাত এগিয়ে দিয়ে ক্যাচটি নিতে পারেননি মুমিনুল হক। ৪৭ রানে বেঁচে যান মুল্ডার। এরপর তুলে নেন হাফ সেঞ্চুরি। তবে জীবন পেয়ে ইনিংস বেশী লম্বা করতে পারেননি এই ব্যাটার। হাসান মাহমুদের ব্যাক অফ লেংথ ডেলিভারি দূর থেকে খেলার চেষ্টায় খোঁচা মারলেন এই ব্যাটার। ওয়াইড স্লিপে সহজ ক্যাচ লুফে নেন সাদমান। ৫৪ রানে আউট হন মুল্ডার। এরপরের বলেই হাসান ফিরিয়ে দেন কেশাভ মহারাজকেও। কিছুটা নিচু হয়ে যায় অফ স্টাম্পের বাইরে থেকে ভেতরে ঢোকা ডেলিভারি।

মহারাজের ব্যাটের নিচ দিয়ে গিয়ে উড়িয়ে অফ স্টাম্প। জোড়া উইকেট হারালেও দেখেশুনে খেলে লাঞ্চে যায় সফরকারীরা। বিরতির পর ব্যাট করতে নেমে সেঞ্চুরির পথে হাঁটতে থাকেন ভেরেইনা। ইনিংসের ৮০ ওভার শেষ হতেই দ্বিতীয় নতুন বল নেয় বাংলাদেশ। ৮০ ওভারে প্রোটিয়াদের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৮ উইকেটে ২৭০ রান। তাদের লিড বেড়ে দাঁড়ায় ১৬৪ রানে।

তাইজুলের অফ স্টাম্পের বাইরের বল দারুণ কাট শটে বাউন্ডারি মারেন ডেন পিট। পূর্ণ হয় তাদের হাফ সেঞ্চুরির জুটি। ইনিংসের ৮৬তম ওভারে তাইজুলের ওভারে সিঙ্গেল নিয়ে নিজের তৃতীয় টেস্ট সেঞ্চুরি তুলে নেন ভেরেইনা। তবে সতীর্থ সেঞ্চুরি হাঁকানোর খানিক পরই লেগ বিফরের ফাঁদে পড়ে বিদায় নেন পিট। শেষ ব্যাটার হিসেবে রাবাদা ক্রিজে এলে জোড়া ছক্কায় দলের লিড ২০০ পার করার পরই স্ট্যাম্পিং হয়ে বিদায় নেন ভেরাইনা। মিরাজের বলে আউট হওয়ার আগে তিনি করেন ১১৪ রান। ৩০৮ রানে গুটিয়ে যায় দক্ষিণ আফ্রিকা, লিড পায় ২০২ রানের।