বাংলাদেশ ক্রিকেট

সব অভিযোগ অস্বীকার করে হাথুরুসিংহের বিবৃতি

ক্রিকফ্রেঞ্জি ডেস্ক

ক্রিকফ্রেঞ্জি ডেস্ক
Publish Date: 19:08 Friday, October 18, 2024

|| ডেস্ক রিপোর্ট ||

বাংলাদেশ দলের প্রধান কোচের পদ থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে চান্ডিকা হাথুরুসিংহেকে। তার বিরুদ্ধে এক ক্রিকেটারকে শারীরিক হেনস্থা ও বাড়তি ছুটি নেয়ার অভিযোগের ভিত্তিতে তাকে বরখাস্ত করেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। অবশেষে নিজের অবস্থান পরিস্কার করেছেন এই লঙ্কান কোচ। নিজের বিবৃতিতে ক্রিকেটারকে শারীরিক হেনস্থার বিষয়টিও উড়িয়ে দিয়েছেন। এমনকি বিসিবির অনুমতি ছাড়া ছুটি নেননি বলেও বিবৃতিতে জানিয়েছেন তিনি।

ক্রিকফ্রেঞ্জির পাঠকদের জন্য পুরো বিবৃতি বাংলায় তুলে দেয়া হলো-

প্রথমত, অভিযুক্ত ঘটনাটি খেলোয়াড়দের ডাগআউট বা ড্রেসিং রুমে ঘটেছিল, যে জায়গায় বিশ্বকাপের ম্যাচ চলাকালে সার্বক্ষণিক নজরদারি থাকে। ৪০ থেকে ৫০টিরও বেশি ক্যামেরা খেলার প্রতিটি মুহূর্ত সঙ্গে সঙ্গে ধারণ করে। আমি অভিযোগকারীকে যাচাই করার সুযোগ পাইনি বা কোনও সাক্ষীও পাইনি, আদৌ যদি থেকে থাকে।

আরেকটি বিষয় হলো, ঘটনাটি যতটা গুরুতর হিসেবে দাবি করা হয়েছে, আশ্চর্যের ব্যাপার যে সংশ্লিষ্ট খেলোয়াড় ইভেন্টের পরে অবিলম্বে টিম ম্যানেজার বা কোনও কর্তৃপক্ষকে ঘটনাটি জানায়নি। যদি অভিযোগ করাও হয়, আমি বিস্মিত যে কেন আমাকে প্রশ্ন করা হয়নি কিংবা আমার কাছ থেকে কিছু জানতে চায়নি। প্রশ্ন উঠছে, কেন এটি কয়েক মাস পরে ইউটিউবে একজন ব্যক্তির মাধ্যমে প্রকাশিত হলো?

ছুটি নেওয়ার দাবির বিষয়ে, আমি স্পষ্ট করতে চাই যে আমি ব্যক্তিগতভাবে ছুটি নেওয়ার বেলায় সবসময় সিইও এবং ক্রিকেট অপারেশন্সের চেয়ারম্যান উভয়ের কাছ থেকে অনুমতি চেয়েছি এবং পেয়েছি। কোনও সময়ই বিসিবি আমাকে বলেনি যে তারা আমার ছুটি নিয়ে অসন্তুষ্ট। বরং আমি যতবারই ছুটি চেয়েছি, বিসিবি তা মঞ্জুর করেছে। তাদের অনুমতি ছাড়া আমি কখনও ছুটিতে যাইনি।

নতুন বোর্ড সদস্যরা অভিযোগ করলো যে আমি অতিরিক্ত ছুটি নিয়েছি। আমার ছুটির মধ্যে পড়া সরকারি ছুটির হিসাব করেনি, যেমন ঈদের দিন, শুক্রবার। আমি যখন সরকারি ছুটির সময আমি ছুটি নেইনি, তখন তারা বাহবা দেয়নি। আমি এটা বুঝতে পেরেছি, বাংলাদেশের শ্রম আইন অনুযায়ী, আমি শুক্রবারে করা কাজের জন্য পরে সেই ছুটি পাওয়ার দাবি রাখি। একজন বিসিবি চাকরিজীবী হিসাবে, আমি শুক্রবার ও বৃহস্পতিবারের অর্ধেক দিন মিলিয়ে দেড় দিনের ছুটি পাই।

আরেকটি ব্যাপার মনে করাতে হবে যে, বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) সময় বিদেশি কোচদের ছুটি নেওয়াটা একটা সাধারণ রীতি। এটি আমার কাছে ব্যতিক্রম কিছু নয় বরং আমার মেয়াদের আগে অনেক বিদেশি কোচের জন্য এটি স্বীকৃত ব্যাপার।

আমার মনে হচ্ছে এসব অভিযোগ পূর্বপরিকল্পিত। নতুন সভাপতির মেয়াদের প্রথম দিনে, তিনি প্রধান কোচকে অপসারণের ইচ্ছা প্রকাশ করে একটি প্রকাশ্য বক্তব্য দিয়েছিলেন। আরেকজন প্রধান কোচ নিয়োগের মাত্র চার ঘণ্টা আগে শোকজ নোটিশ পেয়ে আমি হতভম্ব। সেখানে বলা হয়েছে যে নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করার জন্য হাতে আছে মাত্র ৪৮ ঘণ্টা। ঘটনার ক্রমধারা এই কর্মকাণ্ডের পেছনের উদ্দেশ্য সম্পর্কে গুরুতর প্রশ্ন তোলে।

উদ্ভুত পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে আমার নিরাপত্তা শঙ্কায় আমাকে বাংলাদেশ ছাড়তে বলা হয়েছে। এসব অভিযোগ, দ্রুত নতুন প্রধান কোচের নিয়োগ এবং যথাযথ প্রক্রিয়ার অভাব নতুন ম্যানেজমেন্টের উদ্দেশ্য এবং বিসিবির ভেতরের কর্মীদের আচরণের ব্যাপারে গুরুতর উদ্বেগ তৈরি করছে।

আমি আমার সম্মান রক্ষা করতে সংকল্পবদ্ধ এবং এই বিষয়ে যে কোনও তদন্তে সম্পূর্ণ সহযোগিতা করবো। শেষ পর্যন্ত সত্যের জয় হবে, এবং আমি আমার ভালোবাসার খেলাতে ইতিবাচকভাবে অবদান রাখতে পারবো।