বাংলাদেশ ক্রিকেট

অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি এড়াতে সাকিবকে দেশে না আসার পরামর্শ

ক্রিকফ্রেঞ্জি ডেস্ক

ক্রিকফ্রেঞ্জি ডেস্ক
Publish Date: 21:43 Thursday, October 17, 2024

|| ডেস্ক রিপোর্ট ||

কানপুরে অবসরের ঘোষণা দিলেও সুযোগ থাকলে দেশে ফিরে সাউথ আফ্রিকার বিপক্ষে প্রথম টেস্ট খেলে সাদা পোশাকের জার্সিটা তুলে রাখতে চেয়েছিলেন সাকিব আল হাসান। নানারকম অনিশ্চয়তা তৈরি হলেও কদিন আগেই বাংলাদেশে ফেরার সবুজ সংকেত পেয়েছেন। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অনুমতি পেয়ে বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) দেশে ফেরার সকল বন্দোবস্ত করে রেখেছিলেন তিনি।

যদিও শেষ মূহূর্তে তারকা অলরাউন্ডার বাংলাদেশে ফিরতে পারবেন কিনা তা নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়। দেশে ফিরতে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বিমানযোগে দুবাইয়ে এসেছিলেন তিনি। সেখান থেকেই বাংলাদেশের বিমান ধরার কথা ছিল সাবেক অধিনায়কের। তবে নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে তাকে দুবাইয়ে অবস্থান করার পরামর্শ দেয় বাংলাদেশ সরকার। এদিকে সাকিবের দেশে ফেরাকে কেন্দ্র করে অনেককে বেশ কিছু জায়গায় বিক্ষোভ করতে দেখা গেছে।

বাংলাদেশের জার্সিতে না খেলতে দিতে মিরপুর স্টেডিয়ামের প্রধান ফটকে ‘মিরপুর ছাত্রজনতা’র ব্যানারে বিক্ষোভ করেছেন বেশ কয়েকজন। এমনকি বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড বরাবর স্মারকলিপিও দিয়েছেন তারা। যেখানে সাকিবকে জাতীয় দল থেকে বাদ দেয়ার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। এমন অবস্থা বাংলাদেশের সাবেক অধিনায়ক দেশে ফিরলে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। আন্তর্জাতিক ক্রীড়াঙ্গনে দেশের ভাবমূর্তি রক্ষা এবং অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি এড়াতে সাকিবকে দেশে না ফেরার কথা বলা হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ বলেন, ‘আমি নিজেও চেয়েছি, সাকিব আল হাসানের মতো একজন ক্রিকেটার দেশের মাটিতে অবসর নিক। সে অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাও গ্রহণ করা হয়েছে। তবে, প্রথম দিকেই বলেছি সাকিব আল হাসানের আওয়ামী ফ্যাসিবাদী সরকারের সাথে সংশ্লিষ্টতার কারণে জনমনে ক্ষোভ রয়েছে যা স্বাভাবিক। রাজনৈতিক অবস্থান স্পষ্ট করাসহ জনমনের ক্ষোভ নিরসনে তিনি ফেসবুক পোস্ট দিলেও সাম্প্রতিক প্রতিবাদে প্রতীয়মান হয়েছে যে তা যথেষ্ট ছিল না।’

‘যারা প্রতিবাদ করছে তাদেরও তা করার সাংবিধানিক অধিকার রয়েছে। সাউথ আফ্রিকা ও বাংলাদেশের মধ্যকার সিরিজে কোনপ্রকার অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি এড়াতেই আপাতত দেশে খেলতে আসার ক্ষেত্রে নিরুৎসাহিত করে বিসিবিকে পরামর্শ দিতে হয়েছে। খেলোয়াড়দের নিরাপত্তার পাশাপাশি আন্তর্জাতিক ক্রীড়াঙ্গনে দেশের ভাবমূর্তি রক্ষার আশু ব্যবস্থা হিসেবেই এই সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে। তবে সকলেরই আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়া উচিত বলে মনে করি। কোন অভিযোগ থাকলে আইনি প্রক্রিয়ার আশ্রয় নিয়েই তার সমাধান খোঁজা যেতে পারে।’

পাকিস্তান সফরে থাকাকালীন হত্যা মামলার আসামী করা হয়েছিল সাকিবকে। বাংলাদেশের সাবেক অধিনায়কের সাউথ আফ্রিকা সিরিজ খেলাটা তাই নির্ভর করছিল অনেক যদি কিন্তুর উপর। অবসরের সময় তিনি নিজেও জানিয়েছিলেন, সিরিজ খেলে অনায়াসে দেশ ত্যাগের অনুমতি পেলেই কেবল প্রোটিয়াদের বিপক্ষে মিরপুরে খেলবেন। এমন চাওয়ার পর সাকিবকে নিজের রাজনৈতিক অবস্থান পরিস্কারের পরামর্শ দিয়েছিলেন ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ।

এমনকি ক্রিকেটার সাকিবের নিরাপত্তা নিশ্চিতের প্রতিশ্রুতি দিলেও সাবেক সংসদ সদস্য সাকিবের নিরাপত্তা দেয়ার ব্যাপারে সবুজ সংকেত দেননি। যদিও কয়েকদিনের ব্যবধানে নিজের কথার সুর বদলেছেন ক্রীড়া উপদেষ্টা। যুক্তরাষ্ট্রে ন্যাশনাল ক্রিকেট লিগ খেলার সময় নিজের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে পোস্ট দিয়ে বিদায়ী ম্যাচে সবাইকে পাশে চেয়েছিলেন। নীরবতা ভেঙে দুঃখও প্রকাশ করেছিলেন বাংলাদেশের সাবেক অধিনায়ক। শেষ পর্যন্ত সেটাও কাজে দিল না।