|| ডেস্ক রিপোর্ট ||
পুনে টেস্টে আগের দিনই সাত উইকেট নিয়েছেন ওয়াশিংটন সুন্দর। তিন বছর পর টেস্টে ফিরে অদম্য পারফরম্যান্সে ভারতকে অনেকটা স্বস্তি এনে দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু ঘরের মাঠে দ্বিতীয় দিনেই সেই স্বস্তি চলে যায় মিচেল স্যান্টনারের বোলিংয়ের সামনে। টেস্টে আগে কখনও ইনিংসে তিন উইকেটের বেশি পাননি যিনি, সেই স্যান্টনারই এদিন নেন একে একে সাত উইকেট। তার ধ্রুপদী বোলিংয়ের সামনে নিউজিল্যান্ডকে ২৫৯ রানে অলআউট করা ভারত অলআউট হয় ১৫৬ রানে। দ্বিতীয় ইনিংসে টম লাথামের হাফ সেঞ্চুরিতে ৩০১ রানের বড় লিডও পেয়ে যায় সফরকারীরা।
এর আগে ৪৭ ইনিংস বোলিং করে স্যান্টনারের ক্যারিয়ার সেরা পারফরম্যান্স ছিল ৩৪ রান খরচায় তিন উইকেট। ইনিংসে তিন উইকেট নিতে পেরেছিলেন আরও কয়েকবার (৬)। ২৮ টেস্টে সব মিলিয়ে উইকেট ছিল ৫৪টি। তবে পুনে টেস্টে নিজেকে ছাড়িয়ে অনেকদূর পৌঁছে গেলেন এই স্পিন বোলিং অলরাউন্ডার।
মোট ৫৩ রান খরচায় সাত উইকেট নেন স্যান্টনার। আগের দিন ওয়াশিংটন ৭ উইকেট নিয়েছিলেন ৫৯ রানে। শুধু টেস্ট নয়, দুজনেরই প্রথম শ্রেণির ক্যারিয়ারের সেরা বোলিং এটি। আগের দিনই রোহিত শর্মাকে ফিরিয়ে দিয়েছিল কিউইরা।
এ দিন উইকেটের খাতা খোলেন সেই স্যান্টনারই। ৭২ বলে ৩০ রান করা শুভমান গিলকে এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলেন তিনি। পরের ওভারেই ৯ বলে এক রান করা বিরাট কোহলিকে প্যাভিলিয়নে ফেরান তিনি। তার ফ্লাইট হয়ে আসা ফুল টস বলে আড়াআড়ি ব্যাটে খেলতে গিয়ে স্টাম্প হারান কোহলি।
দলীয় ৮৩ রানের মধ্যে দুই বাঁহাতি ইয়াশভি জায়সওয়াল এবং ঋষভ পান্তকে আউট করেন অফ স্পিনার গ্লেন ফিলিপস। ৩০ রান করা জায়সাওয়ালকে অফ স্টাম্প তাক করা বলে ফাঁদে ফেলেন তিনি। বলটি জায়সাওয়ালের ব্যাটের কানায় লেগে স্লিপে চলে যায়।
একটু পর ১৯ বলে ১৮ রান করা পান্তকে বোল্ড করেন ফিলিপস। এরপরের গল্পটা শুধুই স্যান্টনারের। একে একে সরফরাজ খান, রবিচন্দ্রন অশ্বিন এবং রবীন্দ্র জাদেজাকে ফিরিয়ে পূর্ণ করেন তিনি টেস্ট ক্যারিয়ারের প্রথম পাঁচ উইকেট।
মিড অফে বল পাঠাতে গিয়ে ক্যাচ আউট হয়ে ফিরে যান আগের টেস্টের সেঞ্চুরিয়ান সরফরাজ। ১১ রান করেন তিনি। দুই অলরাউন্ডার জাদেজা-অশ্বিন হন এলবিডব্লিউ। জাদেজার ব্যাটে আসে ৩৮, অশ্বিন করেন চার রান। পরে শেষ দুই উইকেট নিয়ে ভারতের লেজও ছেঁটে দেন স্যান্টনার। ২১ বলে ১৮ রানে অপরাজিত থাকেন ওয়াশিংটন।
১০৩ রানে এগিয়ে থেকে বেশ ফুরফুরে মেজাজে ব্যাটিংয়ে নামে কিউইরা। তবে ভালো মুহূর্ত বেশীক্ষণ স্থায়ী হয়নি, দশম ওভারেই ওয়াশিংটনের বলে এলবিডব্লিউ হয়ে বিদায় নেন ডেভন কনওয়ে। ২৫ বলে ১৭ রান আসে তার ব্যাটে।
দলীয় ৮৯ রানের মধ্যে উইল ইয়াং এবং রাচিন রবীন্দ্রও ফিরে যান। ২৮ বলে ২৩ রান করা ইয়াংকে এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেরান অশ্বিন। ৯ রান করা রাচিনকে বোল্ড করেন ওয়াশিংটন। প্রথম ইনিংসে সাত উইকেট পাওয়া বোলারের এই ইনিংসে তৃতীয় শিকার হন ড্যারিল মিচেল। ওয়াশিংটনকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে লং অনে ধরা পড়েন ১৮ রান করা মিচেল।
ব্যাটারদের যাওয়া আসা দেখতে দেখতে ফিরে যান লাথামও। তবে কিউই অধিনায়কের ব্যাটে আসে হাফ সেঞ্চুরি। ১৩৩ বলে ৮৬ রান করা লাথামকেও ফেরান ওয়াশিংটন। তার বলে এলবিডব্লিউ হন লাথাম।
দ্বিতীয় ইনিংসে পাঁচ উইকেটে ১৯৮ রান তুলে দ্বিতীয় দিন শেষ করে নিউজিল্যান্ড। টম ব্লান্ডেল ৩০ এবং ফিলিপস ৯ রান নিয়ে তৃতীয় দিনের খেলা শুরু করবেন। ভারতের বোলারদের মধ্যে ৫৬ রান খরচায় চার উইকেট নিয়েছেন ওয়াশিংটন।