|| ডেস্ক রিপোর্ট ||
দিনের তখন একেবারেই পড়ন্ত বেলা এমন সময় ড্যান পিটের বলে ক্রিজ থেকে বেরিয়ে এসে বড় শট খেলতে গেলেন মাহমুদুল হাসান জয়। ব্যাটে-বলে করতে না পারা ডানহাতি বেঁচে গেছেন একটুর জন্য। উইকেটকিপার কাইল ভেরেইনারের ভুলে জীবন পেয়ে দিন শেষ করেছিলেন মাহমুদুল জয়। তার সঙ্গে বাংলাদেশের আশার প্রদীপ হয়েছিলেন মুশফিকুর রহিমও। ৩ উইকেট হারানো বাংলাদেশ তখনও সাউথ আফ্রিকার চেয়ে ১০১ রানে পিছিয়ে। ইনিংস ব্যবধানে হার নাকি ঘুরে দাঁড়িয়ে নতুন কোন গল্প লিখবে বাংলাদেশ, এমন ভাবনায় ব্যস্ত সবাই।
সাউথ আফ্রিকার বিপক্ষে মিরপুর টেস্টের ফলাফল কোনদিকে যাবে সেটা অনেকটাই নির্ভর করছিল মাহমুদুল জয় ও মুশফিকের উপর। পুরো বাংলাদেশও তাই তাকিয়ে ছিল তাদের দিকে। যদিও দিনের খেলা শুরু থেকেই স্বাগতিকদের হতাশ করেছেন তারা দুজন। তৃতীয় দিনের পঞ্চম ওভারে কাগিসো রাবাদার অফ স্টাম্পের বাইরের বলে খেলতে গিয়ে প্রথম স্লিপে থাকা ডেভিড বেডিংহামকে ক্যাচ দিয়েছেন মাহমুদুল জয়। উইকেটে থিতু হওয়া এই ব্যাটারকে ফিরতে হয় ৯২ বলে ৪০ রানের ইনিংস খেলে।
একই ওভারে ফিরেছেন মুশফিকও। ডানহাতি পেসারের ফুলার লেংথ ডেলিভারিতে বলের লাইনেই যেতে পারলেন না তিনি। প্রথম ইনিংসের মতো অভিজ্ঞ ব্যাটার এবারও ফিরলেন বোল্ড হয়ে। ৩৯ বলে ৩৩ রানের ইনিংস খেলা মুশফিকের বিদায়ে আরও বিপাকে পড়ে বাংলাদেশ। ১০৬ রানে ৫ উইকেট হারানো স্বাগতিকরা তখন ইনিংস হারের শঙ্কায়। যদিও মেহেদী হাসান মিরাজ ও জাকের আলী অনিকের ব্যাটে বিপদ কেটেছে বাংলাদেশের। দিনের খেলা শেষে মুশতাক আহমেদ জানান, ওই সময় এভাবে আউট হয়ে যাওয়ায় হতাশ মুশফিক ও জয়।
বাংলাদেশের স্পিন বোলিং কোচ এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘আমাদের চেয়ে ওরা আরও বেশি হতাশ। মুশফিককে তো চিনো। সে একবার সেট হয়ে গেলে বড় ইনিংস খেলতে চায়। জয় তরুণ খেলোয়াড়, তার টেম্পারমেন্ট দারুণ, বাঘের মতো লড়াই করে। প্রথম ইনিংসেও ভালো করেছে। তখন খেলা অনেক কঠিন ছিল। তার সাথে মজা করে কথা বলছিলাম। সে বলল, রাবাদার বল অনেক সুইং করছিল। আমি স্টাম্প ও এলবিডব্লিউ বাঁচানোর চেষ্টা করছিলাম। বিশ্বাস রেখেছিলাম ক্রিজে টিকে থাকলে রান আসবে। তরুণদের মধ্যে এই আত্মবিশ্বাস থাকা মানে দলটা ভালো অবস্থানে আছে।’
শট নির্বাচন নিয়েও তাদের মাঝে হতাশা দেখা গেছে বলে জানান মুশতাক। তিনি বলেন, ‘এত পরিশ্রমের পর একজন পেশাদার ক্রিকেটার হিসেবে এভাবে আউট হলে হতাশ তো হবেই। প্রতিপক্ষ বোলারদের সামলে যখন রান পাচ্ছিলেন তখন আউট হয়ে গেলে তো হতাশ লাগবেই।’
সাউথ আফ্রিকার চেয়ে ১০১ রানে পিছিয়ে থেকে তৃতীয় দিনে খেলতে নামা বাংলাদেশ দিন শেষ করেছে ৮১ রানের লিড নিয়ে। স্বাগতিকদের পথ দেখিয়েছেন অভিষিক্ত জাকের ও মিরাজ। তারা দুজনে মিলে গড়েছেন ১৩৮ রানের জুটি। এখনও অনেকটা পথ বাকি থাকলেও প্রোটিয়াদের বিপক্ষে জিততে আত্মবিশ্বাসী মুশতাক। বাংলাদেশের স্পিন বোলিং কোচ জানিয়েছেন, ড্রেসিং রুমের সবাই বিশ্বাস করে তারা জিততে পারবে।