ভারত - নিউজিল্যান্ড সিরিজ

রাচিনের সেঞ্চুরিতে কিউইদের বড় লিড, ভারতের লড়াইয়ে ফেরার চেষ্টা

ক্রিকফ্রেঞ্জি ডেস্ক

ক্রিকফ্রেঞ্জি ডেস্ক
প্রকাশের তারিখ: 21:20 শুক্রবার, 18 অক্টোবর, 2024

|| ডেস্ক রিপোর্ট ||

পেস আগুনে পুড়িয়ে ভারতকে ৪৬ রানে অল আউট করে বড় লিডের আভাসটা আগেরদিনই পেয়েছিল নিউজিল্যান্ড। দাপুটে ব্যাটিংয়ে সেটাকে ক্রমশই বাড়িয়েছেন রাচিন রবীন্দ্র। দেশের বাইরে প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি পাওয়া রাচিনের সঙ্গে হাফ সেঞ্চুরি পেয়েছেন টিম সাউদি। ৩৫৬ রানে পিছিয়ে ব্যাটিংয়ে নামা ভারত খেলেছে অনেকটা ওয়ানডে মেজাজে। রোহিত শর্মা, বিরাট কোহলি ও সরফরাজ খানের হাফ সেঞ্চুরিতে বেঙ্গালুরু টেস্টে লড়াইয়ে ফেরার চেষ্টা করছে স্বাগতিক ভারত।

বেঙ্গালুরুর এম চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে নিউজিল্যান্ডের চেয়ে পিছিয়ে পড়া ভারত দ্বিতীয় ইনিংসের শুরুটা করে সাবধানী ব্যাটিংয়ে। যশস্বী জয়সাওয়াল ও রোহিত দেখেশুনে শট খেলার চেষ্টা করতে থাকেন। যদিও একটু সময় গড়াতেই রান তোলায় মনোযোগী হয়ে ওঠেন ভারতের অধিনায়ক। সাম্প্রতিক সময়ে আক্রমণাত্বক ব্যাটিং করলেও জয়সাওয়াল ছিলেন খানিকটা ধীরগতির। উইকেট ব্যাটিং সহায়ক হয়ে উঠতেই বড় শট খেলার প্রবণতা দেখা যায় তার মাঝেও। সেটা করতে গিয়েই মূলত নিজের উইকেট বিলিয়ে দিয়ে এসেছেন তরুণ এই ওপেনার।

এইজাজ প্যাটেলের লেংথ ডেলিভারিতে ডাউন দ্য উইকেটে এসে স্টাম্পিং হয়েছেন ভারতীয় এই ব্যাটার। বাঁহাতি ওপেনার খানিকটা টার্ন আশা করলেও সেটার দেখা মেলেনি। তাতেই বলের লাইন মিস করে ফিরতে হয়েছে ৩৫ রানে। একটু পরই ম্যাট হেনরির এক ওভারে দুই চার ও এক ছক্কায় পঞ্চাশ ছুঁয়েছেন রোহিত। যদিও হাফ সেঞ্চুরির পর বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি ভারতের অধিনায়ক। অনেকটা দুর্ভাগ্যজনকভাবে ফিরতে হয়েছে তাকে। এইজাজের বলে ডিফেন্স করেছিলেন রোহিত। তবে ব্যাটের নিচের কানায় লেগে ড্রপ দিয়ে বেলস উপরে ফেলে দিয়েছে। ডানহাতি ওপেনার যেন এমন আউট মেনেই নিতে পারছিলেন না।

একরাশ হতাশা নিয়ে সাজঘরের পথে হেঁটেছেন ৬৩ বলে ৫২ রানের ইনিংস খেলা রোহিত। ভারতের অধিনায়ক ফেরার পর দারুণ এক জুটি গড়ে তোলেন কোহলি ও সরফরাজ। উইকেটে থিতু হতেই ওয়ানডে ঘরানার ব্যাটিংয়ে রান বাড়াতে থাকেন তারা। নিউজিল্যান্ডের বোলারদের বিপক্ষে নিয়মিত চার-ছক্কায় রান বাড়াচ্ছিলেন সরফরাজ ও কোহলি। এজাজকে ছক্কা মেরে প্রথম দল হিসেবে এক বছরে একশর বেশি ছক্কা মারার কীর্তি গড়েছে ভারত। এবছর দুইয়ে থাকা ইংল্যান্ড ছক্কা মেরেছে ৬৮টি। চা বিরতি থেকে ফিরেই হাফ সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন তারা দুজন। হেনরির বল ব্যাকওয়ার্ড স্কয়ার লেগে ঠেলে দিয়ে ৪২ বলে পঞ্চাশ ছুঁয়েছেন।

টেস্ট ক্যারিয়ারে এটি তার চতুর্থ হাফ সেঞ্চুরি। আরেক ব্যাটার কোহলি ক্যারিয়ারের ৩১তম হাফ সেঞ্চুরি করেছেন ৭০ বল খেলে। হাফ সেঞ্চুরির পর ভারতের চতুর্থ ব্যাটার হিসেবে টেস্টে ৯ হাজার রানের মাইলফলক স্পর্শ করেছেন কোহলি। এমন কীর্তি আছে শচীন টেন্ডুলকার, রাহুল দ্রাবিড় ও সুনীল গাভাস্কারের। সরফরাজকে সঙ্গে নিয়ে দুজনে মিলেই প্রায় পুরোটা বিকেল শেষ করতে যাচ্ছিলেন। তবে দিনের একেবারে শেষ বেলায় আউট হয়েছেন কোহলি। গ্লেন ফিলিপসের বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়েছেন ৭০ রান করা এই ব্যাটার। তৃতীয় দিন শেষে ভারতের সংগ্রহ ৩ উইকেটে ২৩১ রান। নিউজিল্যান্ডের চেয়ে ১২৫ রানে পিছিয়ে থেকে পরদিন ব্যাটিংয়ে নামবে ভারত।

দিনের শুরুতে ৩ উইকেটে ১৮০ রান নিয়ে ব্যাটিংয়ে নামেন রাচিন ও ড্যারিল মিচেল। তবে প্রথম সেশনের শুরুতে মোহাম্মদ সিরাজের বলে গালিতে ক্যাচ দিয়েছেন মিচেল, ফিরেছেন ১৮ রানে। দ্রুতই ফিরে গেছেন টম ব্লান্ডেল, ফিলিস ও হেনরিরা। তবে একপ্রান্ত আগলে রেখেছিলেন রাচিন। ২৩৩ রানে ৭ উইকেট হারানোর পর তাকে সঙ্গ দিতে থাকেন সাউদি। রবিচন্দ্রন অশ্বিনকে চার মেরে ১২৪ বলে সেঞ্চুরি করেছেন রাচিন।

২০১২ সালের পর রস টেলরের পর রাচিনই প্রথম কিউই ব্যাটার হিসেবে ভারতের মাটিতে সেঞ্চুরি করতে পেরেছেন। যদিও সেঞ্চুরির পর ফিরতে হয়েছে দ্রুতই। কুলদীপ যাদবের বলে ফেরার আগে খেলেছেন ১৩৪ রানের ইনিংস। তাকে সঙ্গ দেয়া সাউদি শেষ পর্যন্ত আউট হয়েছেন ৬৫ রানে। সফরকারীরা ১০ উইকেট হারিয়ে থামে ৪০২ রান। ডেভন কনওয়ে, রাচিন ও সাউদির এমন ব্যাটিংয়ে প্রথম ইনিংসে ৩৫৬ রানের বড় লিড পায় নিউজিল্যান্ড।