|| ডেস্ক রিপোর্ট ||
পায়ের পুরোনো চোট, ফিটনেসে ঘাটতির জন্য বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) সবশেষ মৌসুুমে সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন মাশরাফি বিন মুর্তজা। সমালোচনার পাশাপাশি সিলেট স্ট্রাইকার্সের টানা হার, এমন অবস্থায় রাজনৈতিক ব্যস্ততার কারণে টুর্নামেন্টের মাঝ পথে বিপিএল থেকে বিরতি নিয়েছিলেন মাশরাফি। বিপিএলের পর ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ (ডিপিএল) দিয়ে মাঠের ক্রিকেটে ফিরেছিলেন তিনি।
লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জের হয়ে ৮ ম্যাচে নিয়েছিলেন ৯ উইকেট। যেখানে এক ম্যাচেই ডানহাতি পেসার পেয়েছিলেন ১৯ রানে ৫ উইকেট। নিয়মিত খেলার মাঝে না থাকলেও বিপিএলের প্লেয়ার্স ড্রাফটে মাশরাফিকে রাখা হয়েছে ‘বি’ ক্যাটাগরিতে। যদিও গত মৌসুমে ‘এ’ ক্যাটাগরিতে ছিলেন বিপিএলের সবচেয়ে সফলতম অধিনায়ক। তবে বছরজুড়ে খেলার মাঝে না থাকার পরও ‘বি’ ক্যাটাগরিতে জায়গা পাওয়ায় ক্ষুব্ধতা প্রকাশ করেছেন অনেকে।
যদিও বিসিবির এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, মাশরাফিকে সম্মান দিতেই এমনটা করা হয়েছে। এদিকে বিপিএলের গত আসরে ফরচুন বরিশালের হয়ে ১৫ উইকেট নিয়েছিলেন মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। ১৮ মাস পর জাতীয় দলে ফিরে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে যাওয়ার খুব কাছেও ছিলেন পেস বোলিং অলরাউন্ডার। তবে শেষ পর্যন্ত তানজিম হাসান সাকিবের সঙ্গে পেরে উঠতে না পারায় বিশ্বকাপে যাওয়া হয়নি। বরিশালকে চ্যাম্পিয়নকে অবদান রাখলেও সাইফউদ্দিন আছেন ‘সি’ ক্যাটাগরিতে। বিপিএলের গ্রেডিং বৈষম্য নিয়ে ক্ষুব্ধতা প্রকাশ করছেন সমর্থকরা।
তাদের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন ইমরুল কায়েসও। বাংলাদেশের বাঁহাতি ওপেনার জানতে চেয়েছেন কিসের ভিত্তিতে বিপিএলের গ্রেডিং করা হয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে নিজের অফিসিয়াল পেজে ইমরুল লিখেছেন, ‘আসসালামু আলাইকুম, বিপিএলের প্লেয়ার্স ড্রাফটের আগে ক্রিকেটারদের গ্রেডিং দেখে চিন্তা করছি গ্রেডিংটা আসলে কিসের ভিত্তিতে করা হয়। জাতীয় দল, সারা বছরের ঘরোয়া পারফরম্যান্স, বিপিএলের পারফরম্যান্স নাকি শুধু নাম দেখে করা হয়। বছরজুড়ে ক্রিকেটের আশেপাশে না থাকা ক্রিকেটারের জায়গা হলো ‘বি’ গ্রেডে। অথচ গত বিপিএলে দুর্দান্ত পারফর্ম করা একজন ক্রিকেটার ‘সি’ গ্রেডে। তবে কি শুধু নাম কিংবা চেহারা দেখেই বিপিএলের ড্রাফটের গ্রেড নির্ধারণ করা হয়?’
২০১৮ সালের পর থেকে সংক্ষিপ্ত সংস্করণে জাতীয় দলের বাইরে আছেন ইমরুল। বিপিএলের ২০১৮-১৯ মৌসুমে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানসের হয়ে ভালো করতে না পারায় বাংলাদেশ দল থেকে বাদ পড়েছিলেন। বিবিবির এক কর্মকর্তা সেই সময় তাকে জানিয়েছিলেন, বিপিএলে ভালো করতে না পরায় তাকে বাদ দেয়া হয়েছে। তবে ২০১৯-২০ মৌসুমে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের হয়ে ১৩ ম্যাচে ৪৪২ রান করার পরও জাতীয় দলে ডাক পাননি। এমনকি কোন ক্যাম্পে ডাক না পেয়েও হতাশা প্রকাশ করেছেন।
ইমরুল বলেন, ‘বিপিএলের ২০১৮-১৯ মৌসুমে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের হয়ে আমি ভালো করতে পারিনি। যে কারণে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সিরিজের পর আমাকে জাতীয় দল থেকে বাদ দেয়া হয়। পরবর্তীতে বিসিবির একজন কর্মকর্তার সঙ্গে যখন কথা হলো তখন বাদ দেয়ার কারণ হিসেবে তিনি জানালেন, বিপিএলে আমার পারফরম্যান্স তুলনামূলক ভালো ছিল না। যেহেতু প্রত্যাশা অনুযায়ী পারফর্ম করতে পারিনি তাই আমি কোন সংকোচ ছাড়াই এমন সিদ্ধান্ত মেনে নিয়েছিলাম।’
‘জাতীয় দলে ফিরতে আমি কঠোর পরিশ্রম করতে থাকি। ২০১৯-২০ মৌসুমে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের হয়ে ১৩ ম্যাচে ৪৪২ রানও করেছিলাম। কিন্তু এমন পারফরম্যান্সের পরও আমাকে জাতীয় দলে ডাকা হয়নি। এমনকি জাতীয় দলের কোন ক্যাম্পেও রাখা হয়নি। তবে কি বিপিএলে পারফর্ম না করলেই বাদ? কিন্তু পারফর্ম করলে, সেটাও তো বিবেচনায় নেয়া হচ্ছে না। আমাদের ক্রিকেটের দুর্দিন কি তবে শেষ হবে না?’